সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: বঙ্গে দ্বিতীয় দিনের সফরেই বিপত্তির মুখে পড়ল বন্দে ভারত এক্সপ্রেস (Vande Bharat Express)। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে সোমবার হাওড়াগামী বন্দে ভারত এক্সপ্রেস মালদহে (Maldah)ঢোকার মুখেই কয়েকজন ট্রেন লক্ষ্য করে ইট-পাথর ছোঁড়ে। বিকেল ৫টা ৫০ মিনিট নাগাদ কুমারগঞ্জ স্টেশনের আগেই C13 কোচের দরজার কাচ ভেঙে যায়। গাড়ি কিছুটা মন্থর হলেও যাত্রায় কোনও অসুবিধা হয়নি বলে রেল সূত্রে খবর।
সোমবার বিকেলে মালদহের কুমারগঞ্জ স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে ঢিল পড়তেই রেল সুরক্ষা বাহিনীর (RPF) তরফে ঘটনা জানানো হয় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে। রেল প্রশাসনে রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায়। অভিযোগ, বাইরে থেকে ছোঁড়া পাথরে (Stone pelting) নিউ জলপাইগুড়ি থেকে হাওড়াগামী ২২৩০২ নম্বর বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেনের সি-১৩ কোচের দরজার কাঁচ ভেঙে গিয়েছে। কুমারগঞ্জ স্টেশনটি উত্তর সীমান্ত রেলের কাটিহার ডিভিশনের অন্তর্গত। এনএফ রেলের কাটিহার ডিভিশনের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক (CPRO) সব্যসাচী দে জানিয়েছেন, “বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেন লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া হয়েছে। এটা খুবই নিন্দনীয় ঘটনা। আমরা সংশ্লিষ্ট এলাকার থানায় অভিযোগ জানিয়েছি। রেলের তরফেও তদন্ত শুরু করা হয়েছে।” বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে পাথর নিক্ষেপের এই ঘটনায় রেল প্রশাসনের তরফে মালদহের পুখুরিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। মালদহের পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।”
এদিকে, বন্দে ভারতের মতো সেমি হাই স্পিড, আরামদায়ক ট্রেনযাত্রায় প্রথম দিন থেকে অভিজ্ঞতা তেমন ভাল নয় যাত্রীদের। তা নিয়ে একাধিক অভিযোগ উঠতেই অবশ্য নড়েচড়ে বসেছে রেল কর্তৃপক্ষ। প্রথম দিন থেকে শিক্ষা নিয়ে দ্বিতীয় দিন ভুল শুধরে নেওয়া হয়েছে বলে পূর্ব রেলের (Eastern Railway) দাবি। ১ জানুয়ারি প্রথমদিনের যাত্রায় স্বাচ্ছন্দ্যের প্রতিশ্রুতি রাখা হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা। খাবারের মান ও পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ ওঠে।
[আরও পড়ুন: চিন্তা বাড়াচ্ছে করোনার নয়া সাব-ভ্যারিয়েন্ট, বিমানযাত্রীদের জন্য নয়া নির্দেশিকা কেন্দ্রের]
রবিবার রাতে ট্রেনে হাওড়া ফিরে যাত্রীদের অনেকেই অভিযোগ করেন, প্রচারের ঢক্কানিনাদের মতো পরিষেবা ছিল না। যা ভাড়া, সেই অনুপাতে মান ততটা নয়। ট্রেনে পরিবেশন করা ভাত এবং ডাল ঠান্ডা ছিল। কেউ কেউ ভাত শক্ত থাকার অভিযোগ করেছেন। সকালের ডিমের পোচ ফেলে দিতে হয়েছে কাঁচা থাকায়। যাওয়ার সময় মালদহে দুটো বাথরুম বন্ধ ছিল, টেকনিক্যাল সমস্যার জন্য জল পড়েনি। স্লাইডিং ডোর বিঘ্ন ঘটিয়েছে। প্রিমিয়াম ট্রেনে এটা খুবই আশ্চর্যের। ডাবের জল দেওয়ার কথা থাকলেও সেখানে ২০ টাকার ফ্রুট জুস দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন যাত্রীদের প্রায় সবাই। অভিযোগ, অনেকে টিকিট না কেটেই ট্রেনে উঠে পড়েছিলেন। সেখানে আরপিএফ সমঝোতা করেছে বলেও অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা। পাশাপাশি কর্মীদের অধিকাংশ বাংলাই জানেন না। ফলে তাঁরা যাত্রীদের কথাই ভাল করে বুঝতে পারেননি।
[আরও পড়ুন: ৩ মাসে বানাতে হবে সাড়ে ১১ লক্ষ বাড়ি, আবাস যোজনা নিয়ে কড়া রাজ্য]
পূর্ব রেল অবশ্য প্রথম দিনের এই অভিজ্ঞতা সংশোধন করেছে বলে দাবি করেছে। সিপিআরও একলব্য চক্রবর্তীর দাবি, আইআরসিটিসিকে (IRCTC) সমস্যাগুলি জানিয়ে তার সংশোধন করা হয়েছে সোমবারই। তবে খাবার গরম করার কয়েকটি ক্ষেত্রে সমস্যা হয়েছিল। তা মেটানো হয়েছে। শৌচালয়ের সমস্যা মেটানো হয়েছে। তবে ট্রেনে অবাঞ্ছিত মানুষজনের যাত্রা সম্পর্কে তিনি বলেন, ট্রেন স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকার সময় কেউ উঠে পড়লে সমস্যা দেখা দেয় ঠিকই, তবে তা মেটানোতেও সমস্যা রয়েছে। কারণ হিসাবে তিনি বলেন, কে বিনা টিকিটে উঠছে তা আরপিএফের ক্ষেত্রে দেখার অসুবিধা রয়েছে। কারণ, টিকিট চেকিংয়ের অধিকার তাদের নেই।