রূপায়ন গঙ্গোপাধ্যায়: খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ হতেই হাজার হাজার মতুয়াদের নাম বাদ পড়েছে। নাগরিকত্ব হারানোর আশঙ্কায় সেখানকার বহু মানুষ। এই আবহেই আজ শনিবার মতুয়াগড় তাহেরপুরে সভা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi)। কিন্তু নাগরিকত্বের প্রশ্নে একেবারে মৌন থাকলেন তিনি। কিন্তু মতুয়াদের মন পেতে মোদির মুখে শুধুই শোনা গেল 'জয় নিতাই'। যা নিয়ে কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়েছেন তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, ''হঠকারি কমিশনের জন্য এসআইআর অনিশ্চয়তা নিয়ে কোনও সুরাহা দিতে পারলেন না।'' মুল সমস্যা এড়িয়ে গিয়েছেন বলেও তোপ কুণালের।
এসআইআর প্রক্রিয়ায় খসড়া তালিকা প্রকাশের পরই দেখা গিয়েছে, সবথেকে বেশি নাম বাদ গিয়েছে মতুয়া প্রভাবিত বিধানসভা কেন্দ্রগুলিতেই। শুধুমাত্র রানাঘাট উত্তর-পূর্ব ও রানাঘাট দক্ষিণেই ৪২ হাজার মতুয়ার নাম বাদ পড়ায় চাঞ্চল্য শুরু হয়েছে। ফের উদ্বাস্তু হওয়ার আশঙ্কা ঘিরে ধরেছে সেখানকার মানুষদের। আর এতেই মতুয়া ভোটব্যাঙ্ক নিয়ে আশঙ্কার মেঘ বঙ্গ বিজেপির ঘরে! এই অবস্থায় আজ শনিবার মোদির সভাকে ঘিরে বাড়ছিল ক্রমশ প্রত্যাশার পারদ। হাজার হাজার মতুয়া আশায় ছিলেন, নাগরিকত্ব নিয়ে কোনও বড় ঘোষণা করতে পারেন মোদি (PM Modi)। কিন্তু তাহেরপুরে দেওয়া ভার্চুয়াল ভাষণে প্রধানমন্ত্রী সে পথে হাঁটলেন না! বরং অনুপ্রবেশকারীদের আক্রমণ করে SIR-এর সমর্থনে যুক্তি খাড়া করার চেষ্টা করলেন। শুধু তাই নয়, এই ইস্যুতে শাসকদল তৃণমূলকে আক্রমণ শানালেন। তিনি বললেন, “তৃণমূল যে SIR বিরোধিতা করছে, সবটাই শুধু অনুপ্রবেশকারীদের বাঁচাতে।”
মোদির এহেন বক্তব্যে একেবারেই হতাশ সভায় আসা মতুয়ারা। তাঁদের একটাই বক্তব্য, চিন্তা তো রয়েই গেল! যা নিয়ে তীব্র কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়েছেন তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তিনি স্পষ্ট জানান, ''প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ একেবারেই দিশাহীন এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন।'' প্রধানমন্ত্রীর সভার শেষ হওয়ার পরেই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন কুণাল ঘোষ। সেখানে তিনি বলেন, ''এসআইআর নামক বিজেপি প্রভাবিত নির্বাচন কমিশনের হঠকারিতায় যারা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ছেন, তাঁদের জন্য বার্তা দিতে পারতেন। কিন্তু তাঁর কাছে কোনও বার্তা নেই।'' যদিও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, ''উনি বলেছেন সবার সঙ্গে থাকবেন। কারোর নাগরিকত্ব যাবে না। '' যদিও এর আগেও কখনও শান্তনু ঠাকুর আবার কখনও বিজেপি নেতারা মতুয়াদের নাগরিকত্ব নিয়ে পাশে থাকার বার্তা দিয়েছিলেন। এরপরেও এদিনে এই বিষয়ে মোদির মৌনতা আদৌতে বঙ্গে বিজেপি নেতাদের উপর চাপ বাড়াবে? উঠছে প্রশ্ন।
