অর্ণব দাস, বারাসত: সিনেমা নাকি বাস্তব? লুটেরা কে? আর লুটপাট করলই বা কারা? সম্প্রতি অশোকনগর থেকে সোনার বিস্কুট, আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের পর রহস্য উদঘাটন করতে গিয়ে চোখ কপালে উঠছে দুঁদে পুলিশকর্তাদেরও। এককথায় চোরের উপর বাটপাড়ি! অশোকনগর থানা এলাকার ঘটনায় প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা মূল্যের সোনার বিস্কুট, একটি পাইপগান, এক রাউন্ড কার্তুজ ও একটি ছুরি-সহ গ্রেপ্তার হয়েছে তিন দুষ্কৃতী।
দুষ্কৃতীদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় এই পাইপগান।
ঘটনা ঠিক কী? বুধবার রাতে অশোকনগর থানায় পুলিশের কাছে খবর আসে, দোগাছিয়া এলাকায় তিনজন যুবকের মধ্যে প্রবল কথা কাটাকাটি চলছে। কোনও ঝামেলা হয়ে থাকতে পারে। খবর পেয়ে সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় পুলিশ। তদন্ত শুরু করতেই জানা যায় সম্পূর্ণ অন্য কাহিনি। পুলিশ জানতে পারে, বনগাঁ থানা এলাকার বাসিন্দা বিভূতি বিশ্বাস ৬টি সোনার বিস্কুট নিয়ে দত্তপুকুর স্টেশনে এসেছিলেন। সেসময় কয়েকজন পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাঁকে তুলে নিয়ে যায় অশোকনগর থানার দোগাছিয়া এলাকার একটি গাড়িতে। পুলিশকে দেখে সেই গাড়িটি চম্পট দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু গাড়ি-সহ তিনজনকে আটক করে পুলিশ।
উদ্ধার হয়েছে এই ৬টি সোনার বিস্কুট।
জানা যায়, বাদুড়িয়ার বাসিন্দা রাজেশ ঠাকুর ও স্বরূপনগরের শুভঙ্কর হালদার - এই দুজন বিভূতির কাছ থেকে সোনা ছিনতাইয়ের উদ্দেশে ধস্তাধস্তি করছিল। কিন্তু তন্নতন্ন করে খুঁজেও কারও থেকে সোনা মেলেনি প্রথমে। পরে তল্লাশি চালিয়ে বিভূতির কাছে থাকা একটি সিগারেটের প্যাকেটের ভিতর থেকে উদ্ধার হয় ছটি সোনার বিস্কুট। যার বাজারমূল্য প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা। এছাড়া শুভঙ্করের কাছ থেকে উদ্ধার হয় পাইপগান ও এক রাউন্ড কার্তুজ। রাজেশ ঠাকুরের কাছ থেকে মেলে একটি চাকু। পুলিশ জানিয়েছে, বিভূতি সোনাগুলো লুট করে পালাচ্ছিল। তবে কোথায় কেন নিয়ে যাচ্ছিল, তা এখনো জানা যায়নি। সে কোনও বৈধ কাগজ দেখাতে পারেনি। অপর দুই দুষ্কৃতী ছিনতাইয়ের উদ্দেশে বিভূতির কাছ থেকে সোনাগুলি নেওয়ার চেষ্টা করছিল। তিন অভিযুক্তকে বৃহস্পতিবার ১০ দিনের পুলিশ হেফাজত চেয়ে পাঠানো হয়েছে বারাসত আদালতে।