সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: মালদহে খুন তৃণমূল নেতা। ক্যানিংয়ে পঞ্চায়েত প্রধানকে খুনের হুমকি! এদিকে আসানসোল ও সংলগ্ন অঞ্চলে জমি ও বালি মাফিয়াদের 'দৌরাত্ম্য'। এমন আবহে দুুই বর্ধমানের চার তৃণমূল নেতাকে পুলিশি নিরাপত্তা দিল রাজ্য প্রশাসন। এঁদের মধ্যে রয়েছেন উচ্চপদে থাকা নেতা থেকে প্রাক্তন পঞ্চায়েত সভাপতি এমনকী যুবনেতাও। তাঁদের মধ্যে কেউ আগে নিরাপত্তা পেলেও সম্প্রতি পাচ্ছিলেন না। কেউ আবার প্রথমবার নিরাপত্তা পেলেন। তবে তাঁদের অধিকাংশের দাবি, হালফিলে তাঁরা নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করেননি।
নিরাপত্তা পাওয়া চার নেতা হলেন, তৃণমূলের রাজ্য কোর কমিটির সদস্য তথা আসানসোল পুরনিগমের কাউন্সিলর অশোক রুদ্র, পূর্ব বর্ধমান জেলার পরিষদের সদস্য রামকৃষ্ণ ঘোষ। বাকিরা হলেন পূর্ব বর্ধমানের অরূপ মৃধা, যিনি আউশগ্রাম দুই ব্লক তৃণমূলের প্রাক্তন কার্যকরী সভাপতি এবং ভালকি অঞ্চল তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি। নিরাপত্তা পেয়েছেন আউশগ্রাম ব্লক তৃণমূলের সভাপতি আবদুল লালনের ছেলে তথা এলাকার যুবনেতা সঞ্জু।
বেশ কয়েক বছর ধরে আসানসোল ও আশেপাশের এলাকার জমি ও বালি পাচারকারীদের দৌরাত্ম্য দিনে দিনে প্রশাসনের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর এই অঞ্চলের বেশ কয়েকজন 'মাফিয়া'কে গ্রেপ্তার করা হয়।
কিন্তু এই তৃণমূল নেতাদের নিরাপত্তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত কেন? আসলে বছরখানেক আগে এক জমির কারবারী খুন হন। ২০২২ সালে এই এলাকার তিন তৃণমূল কর্মীকেও খুন করা হয় বলে অভিযোগ। উল্লেখযোগ্য ভাবে যে নেতাদের নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে, তাঁরা এই জমি এবং বালি মাফিয়াদের 'দৌরাত্ম্যে'র বিরুদ্ধে কোনও না কোনও সময় সরব হয়েছেন। কেউ আবার পথেও নেমেছেন।
আসানসোলের নেতা অশোক রুদ্র ২০১৮ থেকে নিরাপত্তা পেতেন। তবে ২০২২ সালে তাঁর নিরাপত্তা তুলে নেওয়া হয়। সম্প্রতি, তিনি বালি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামেন। নিরাপত্তা পাওয়ার পর অশোক জানিয়েছেন, "আমার নিরাপত্তা কেন দেওয়া হল জানি না, কেনই বা তুলে নেওয়া হয়েছিল তাও জানি না। আমি মানুষের সঙ্গে আছি, কাজ করে যাব।" নিরাপত্তা পাওয়া রামকৃষ্ণ ঘোষ জানান, "লোকসভা ভোটের সময় নিরাপত্তা পেতাম। তা ছেড়ে দিয়েছি। তারপর আর আবেদন করিনি। এবার পশ্চিম বর্ধমান থেকে আমাকে নিরাপত্তা দেওয়া হল।" নিরাপত্তা নিয়ে অরূপ মৃধা বলেন, "আমি কোনও আবেদন করিনি। তবে এলাকার বালি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিলাম। প্রশাসন মনে করছে নিরাপত্তা দিয়েছে।"