সুমন করাতি, হুগলি: পুরোহিতের হাত ধরে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস এবার শ্রীরামপুরে। ভাবছেন তো ব্যাপারটা কী? তবে কী এবার শ্রীরামপুর স্টেশনেও স্টপেজ দেবে সেমি হাইস্পিড ট্রেন এমন প্রশ্নও অনেকের মনেই উঁকি দিচ্ছে। চলুন তবে বিষয়টা খোলসা করা যাক।
আদতে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের রেপ্লিকা তৈরি হয়েছে শ্রীরামপুরে। শিল্পী ঝাউতলার জিসি ভট্টাচার্য স্ট্রিটের বাসিন্দা প্রভাস আচার্য। তিনি স্থানীয় পুরোহিত হিসাবেই পরিচিত। ছোট থেকেই প্রভাসবাবুর শখ ছিল ট্রেনের প্রতি। প্রথম জীবনে কম্পাউন্ডারের চাকরি। তার পর ফিতে তৈরির কারখানা থোলেন। সন্তান-সন্ততিকে নিয়ে সংসারের মাঝে এমন নানা ছোট ছোট জিনিস তৈরি করতেন বরাবর।
[আরও পড়ুন: হাওড়া স্টেশনে চলন্ত ট্রেনে উঠতে গিয়ে বিপত্তি, যাত্রীকে বাঁচাল RPF, প্রকাশ্যে ভিডিও]
এভাবেই একদিন একটি লোকাল ট্রেনের মডেল বানিয়ে তাক লাগিয়ে দেন সকলকে। সম্পূর্ণ ইএমইউ লোকালের মতো দেখতে ওই ট্রেনটি লাইন দিয়ে ইলেকট্রিকের সাহায্যেই চলতে পারে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাত ধরে বন্দে ভারতের উদ্বোধনের পর তাঁর মাথায় আসে অন্য পরিকল্পনা। ঠিক করেন এবার বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের মডেল তৈরি করবেন। যেমন ভাবনা, তেমন কাজ। গত ৮ মাসের চেষ্টায় অবশেষে ভাবনার বাস্তবায়ন। অ্যালুমিনিয়াম শিট, লোহার পাত, কাঠ এবং ফেলে দেওয়া জিনিসপত্র দিয়ে তৈরি করেছেন বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। খরচ পড়েছে ১৩ হাজার টাকা। হুবহু একইরকম দেখতে ট্রেনের বগি। ২২০ ভোল্ট ইলেকট্রিকের সাহায্যে প্রভাসবাবুর তৈরি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস এগোতে পারে প্রায় ৩০ ফুট।
প্রভাবসবাবুর হাতের জাদুতে মুগ্ধ তাঁর পরিবারের লোকজন থেকে পরিচিত সকলেই। সবসময় পাশে পেয়েছেন তাঁর স্ত্রীকে। এই সৃষ্টি সেভাবে স্বীকৃতি পায়নি, এটাই একমাত্র আক্ষেপ শিল্পীর। রেলের তরফে কয়েকজন আধিকারিক যোগাযোগ করেছেন। আর কিছুই পাননি তিনি। প্রভাসবাবুর ইচ্ছা, তাঁর তৈরি ট্রেনের মডেল রাখা হোক রেল মিউজিয়ামে। যা দেখে উদ্বুদ্ধ হবে নতুন প্রজন্ম। এখন দেখার শিল্পীর স্বপ্নপূরণ হয় কিনা।
দেখুন ভিডিও: