হেমন্ত মৈথিল, মহাকুম্ভ নগর: মহাকুম্ভে অমৃতের সন্ধানে নশ্বর মানুষ! শনিবার, ১৩ জানুয়ারি কুম্ভমেলা শুরুর দিনেই জনসমুদ্র পরিণত হল প্রয়াগরাজ। এদিন দেড় কোটিরও বেশি মানুষ ডুব দিলেন গঙ্গা, যমুনা, সরস্বতীর পবিত্র সঙ্গমস্থলে। একদিকে যখন সন্ত থেকে সাধারণ জনতা মোক্ষের আশায় হাড় কাঁপানো শীত উপেক্ষা করে জলে ডুব দিচ্ছেন, অন্যদিকে তখন মেলায় দাপট দেখাচ্ছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ব্যাপারটা কী?
এদিন প্রয়াগরাজ গঙ্গাতীরে প্রথমে পুণ্যস্নান করেন বিভিন্ন মত ও পথের প্রায় এক কোটি সাধু। এরপর সাধারণ জনতা স্নানের সুযোগ পান। সোমবার সূর্যোদয়েরও আগে ভোর ৪টে থেকেই শুরু হয়েছিল মহাস্নান। 'জয় শ্রীরাম', 'হরহর মহাদেব'-সহ বিভিন্ন ধ্বনি তুলে যোগী সরকারের ব্যবস্থাপনায় তৈরি বিভিন্ন ঘাঁটে স্নান করেন সন্ত-সাধু-বাবারা। উল্লেখ্য, গঙ্গা, যমুনা, সরস্বতীর প্রধান সঙ্গমস্থলে কেবলমাত্র সন্তদেরই স্নানের অনুমতি রয়েছে। অন্যান্যদের স্নানের জন্য গঙ্গাতীরে অসংখ্য ঘাটের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
একদিকে যখন পৌষ পূর্ণিমার প্রথম দিনের মহাস্নান শুরু হয়েছে, অন্যদিকে তখন প্রয়াগরাজে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গে সেলফি তুলতে ব্যস্ত জনতা। আসলে যোগী ও মোদির কাটআউট তৈরি করা হয়েছে মেলাপ্রাঙ্গনে। সেই কাটআউটের সামনে দাঁড়িয়ে সেলফি তুলতে রীতিমতো হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। কম বয়সি ছেলেমেয়েদের পাশাপাশি মহিলারাও নন্দিদ্বারের কাছে ওই কাটআউটের সামনে ছবি তুলতে ভিড় জমান। উজ্জয়িনীর বাসিন্দা ব্রজেশ শর্মা, পুণে থেকে আসা সুগন্মা ধিপ্পো, দিল্লি থেকে আসা সুনীতা স্বামীরা মোদি-যোগীর সঙ্গে সেলফি তোলার পাশাপাশি কুম্ভমেলার ব্যবস্থাপনার ঢালাও প্রশংসা করেন।
প্রসঙ্গত, ১৪৪ বছর পর এবারের মহাকুম্ভ। প্রয়াগরাজে গঙ্গা, যমুনা ও সরস্বতীর সঙ্গমস্থলে ৪০ কোটি পুণ্যার্থীর জন্য গড়ে তোলা হয়েছে এক অস্থায়ী নগরী। ১৫ বর্গমাইল এলাকায় গড়ে তোলা সেই অস্থায়ী নগরীর আয়তন নিউইয়র্ক নগরের ম্যানহাটান বরো এলাকার দুই–তৃতীয়াংশ। ১৩ জানুয়ারি থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে ভারতে হিন্দু পুণ্যার্থীদের সবচেয়ে বড় সমাবেশ।