চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: একদিকে যখন বিজ্ঞানসম্মতভাবে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রুখতে সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে তখন আর একপক্ষ ধর্মীয় বিশ্বাস ও পুজো-অর্চনায় আস্থা রাখছেন। করোনা ভাইরাস রুখতে আবারও হোমযজ্ঞ হয়ে গেল আসানসোলে। নিয়ামতপুরের পর এবার বার্নপুরে হল সেই যজ্ঞ। বার্নপুরের শিবস্থানে হোমযজ্ঞের অনুষ্ঠানটি হয় শনিবার। মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে এই যজ্ঞে সামিল হন স্থানীয় ধর্মভীরু মানুষের একাংশ। তবে এদিন দেখা যায় মুখে মাস্ক পরেই পুজো করছেন পুরোহিতদের একাংশ।
কয়েকদিন আগে কুলটির নিয়ামতপুরে করোনা মুক্ত মহামৃত্যুঞ্জয় যজ্ঞ অনুষ্ঠিত হয়। জ্যোতিষীদের দাবি সংস্কৃত মন্ত্রপাঠের সঙ্গে হবন কুণ্ডে মন্ত্রোৎসর্গ করলে মুক্ত হবে করোনা ভাইরাস। এখানেও আয়োজকরা মনে করছেন হোমযজ্ঞ ও বেদমন্ত্রচ্চারণের মধ্য দিয়ে করোনা ভাইরাস বিলুপ্ত হবে। পাশাপাশি যজ্ঞ কুণ্ডের পবিত্র ধোঁয়া করোনা মুক্ত রাখবে বার্নপুর শহর ও শহরবাসীকে। স্থানীয় শিবস্থান মন্দির এলাকার বাসিন্দার বলেন আদি অনন্তকাল ধরে এই পদ্ধতিতেই করোনার মত মহামারি আটকানো হয়েছে অতীতে। যজ্ঞের ধোঁয়ার এই ভাইরাসের মৃত্যু হবে বলে তাঁদের বিশ্বাস।
[ আরও পড়ুন: নিয়মকে বুড়ো আঙুল! বিদেশ থেকে ফিরেই ট্রেনে করে ঘুরলেন তেলেঙ্গানার বিধায়ক ]
মন্দির কমিটির সচিব ওমপ্রকাশ সিং বলেন, “বিজ্ঞানীরা তাঁদের মত চেষ্টা চালান। আমরা যাঁরা ধার্মিক, আমাদের মতো করে ভগবানকে ডাকব যেন এই আতিমহামারী থেকে মুক্ত হতে পারি।” এদিন দেখা যায় যজ্ঞে পুজোয় শামিল কেউ কেউ মুখে মাস্ক নিয়ে বসে পুজো করছেন। তবে কি হোমযজ্ঞে আস্থা নেই? এমনই মাস্ক পরিহিত এক পুরোহিত অঞ্জনি কুমার বলেন, “হোমযজ্ঞ হওয়ার পর করোনা মুক্ত হবে পরিবেশ। যজ্ঞের আগে করোনা সক্রিয় রয়েছে। পুজো অর্চনার প্রক্রিয়া শেষ করার আগে তাই মাস্ক ব্যবহার করা হচ্ছে।” এই ঘটনার প্রেক্ষিতে কটাক্ষ করেন পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের রাজ্য কাউন্সিলের সদস্য কিংশুক মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “আসলে ওনারা পুজো করছেন ঠিকই। কিন্তু ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে নিজেদেরও আস্থা নেই। তাই মুখে মাস্ক পরে পুজোয় বসেছেন।” দেশের এমন পরিস্থিতিতে কুসংস্কার ছড়িয়ে দেওয়ার এই অপচেষ্টাকে তিনি কঠোর সমালোচনা করেন।
[ আরও পড়ুন: দিল্লি হিংসা মামলা: ফের ১০ দিনের জেল বহিষ্কৃত আপ কাউন্সিলর তাহির হোসেনের ]
The post করোনা ঠেকাতে যজ্ঞ বার্নপুরে, মুখে মাস্ক পরেই পুজোয় বসলেন পুরোহিতরা appeared first on Sangbad Pratidin.
