shono
Advertisement

Kozagri Lakshmi Puja 2022: বদ্রীনাথের মাটি, মন্দাকিনীর জলে দেড় ফুটের লক্ষ্মী প্রতিমা গড়ে তাক লাগালেন পুরুলিয়ার শিক্ষক

দেবীর আলয়ে রয়েছে পরিবেশরক্ষার বার্তা।
Posted: 09:19 PM Oct 08, 2022Updated: 09:26 PM Oct 08, 2022

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: বদ্রিনাথ থেকে মাটি। সেই সঙ্গে মন্দাকিনী উষ্ণ প্রস্রবনের জল নিয়ে লক্ষ্মী প্রতিমা (Kozagri Lakshmi Puja) গড়ে তাক লাগালেন পুরুলিয়ার শিক্ষক। চলতি বছর গ্রীষ্মে চারধাম বেড়াতে গিয়ে এই মাটি ও জল এনে ছিলেন শহর পুরুলিয়ার রাঁচি রোড বাইলেলের বাসিন্দা শিক্ষক শঙ্কর মুখোপাধ্যায়। প্রায় দেড় ফুটের লক্ষ্মী প্রতিমা গড়ে থার্মোকল দিয়ে দেবীর আলয় তৈরি করেছেন। তবে এই থার্মোকল ব্যবহারে তাঁর একটা বিশেষ বার্তা রয়েছে। যখন থার্মোকলকে একেবারে বর্জন করা হচ্ছে। তখন তা শিল্পকর্মে ব্যবহার করে পরিবেশকে দূষণমুক্ত-র বার্তা দিচ্ছেন তিনি। এভাবেই মা লক্ষ্মী ও তাঁর আলয় তৈরি করে সোনায় মুড়েছেন কোজাগরীকে। আরাধনায় তার বাড়িতে চলছে একেবারে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।

Advertisement

১৬ বছর ধরে নিজের হাতে লক্ষ্মী প্রতিমা গড়ছেন পুরুলিয়া মফস্বলের বেলকুড়ি রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ মিশনের এই সংস্কৃত শিক্ষক। ফি বছরই লক্ষ্মী প্রতিমাকে ঘিরে তার এক একটা ভাবনা থাকে। ভাবনা থাকে লক্ষ্মীর আলয়কে ঘিরেও। বেশ কয়েক বছর ধরে তিনি ১১ রকমের মাটি দিয়ে লক্ষ্মী গড়ছিলেন। এবার সেই প্রতিমা শুক্রবার বিসর্জন দিয়ে নতুন লক্ষ্মী প্রতিমার আরাধনায় ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন তিনি। হাতে গড়া প্রতিমায় শাড়িও তৈরি করেছেন শিক্ষক নিজের হাতে। তসর শিল্পের জন্য বিখ্যাত শিল্পশহর রঘুনাথপুর থেকে থান কিনে জড়ি, পার সেলাই করে শাড়ি তৈরি করে মাকে জড়িয়েছেন। আর সেইসঙ্গে ঘরে থাকা নানা সোনার গহনাতে সাজিয়ে তুলেছেন ধনলক্ষ্মীকে। সোনার হার, কানের দুল, চিক, কোমর বন্ধনী, বাজুবন্ধ, হাতের চুড়ি, আংটি, সিঁথি, মুকুট, নথ, চুটকি দিয়ে সাজিয়েছেন। একেবারে সোনায় মোড়া লক্ষ্মী প্রতিমা। চোখ ফেরানোই যাচ্ছে না।

[আরও পড়ুন: হরিদেবপুর খুন: ‘দু’মাসের অন্তঃসত্ত্বা’, একাদশীর দিন অয়নের মায়ের হাত ধরে জানিয়েছিল প্রেমিকা]

থার্মোকলের দেবী আলয় যেন একেবারে মন্দিরের মতো। মন্দিরের একটা অংশ পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের আদলে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। পাশে রয়েছে আরও দুটো গম্বুজ। সেখানেও যেন একটা বার্তা দিচ্ছেন শিক্ষক। ঋক, সাম, যজু, অথর্ব বেদকে রেখেছেন তিনি। রয়েছে দু’পাশে দুটো হাতি। ওই আলয়ের দু’পাশে রয়েছে দুটি জলের জায়গা। যে জলাশয় রয়েছে জলজ উদ্ভিদ। সেখানেও তিনি জলদূষণ না হওয়ার বার্তা দিচ্ছেন। শিক্ষকের কথায়, “আমার এই শিল্প কর্মের মধ্যে পরিবেশকে সুস্থ, স্বাভাবিক দূষণের হাত থেকে বাঁচানোর বার্তা রয়েছে। ফি বছরই আমি এমন ভাবনাকে সামনে রেখেই লক্ষ্মী প্রতিমা গড়ি।” শুক্রবার রাতে তার এই শিল্পকর্ম প্রায় শেষ করেছেন। এখন চলছে ফিনিশিং টাচ। সেইসঙ্গে আলপনার কাজও।

দেবীর আলয়ের প্রত্যেকটি কাজ একেবারে সূক্ষ্মভাবে। থার্মোকল দিয়ে তিনি তৈরি করেছেন লক্ষ্মীর বাহন পেঁচা ও ঝাড়বাতি। জলাশয়ে থাকা পদ্ম পাতা তৈরি করেছেন প্লাস্টিক দিয়ে। বার্তা একটাই ফেলে দেওয়া জিনিসগুলো দিয়ে শিল্পকর্ম হোক। অন্য কোন কাজে যাতে ব্যবহার করে পরিবেশকে দূষণ না করা হয়। একেবারে ছেলেবেলা থেকেই তিনি এই শিল্পকর্মের সঙ্গে যুক্ত। হাতে-কলমে কখনও মূর্তি তৈরির কাজ না শিখলেও স্রেফ মাতৃপ্রতিমার টানে কুমোরপাড়ায় বসে থাকতে তার ভালো লাগতো। সেখান থেকেই তিনি এই কাজ শেখেন। আর এখন তার শিল্পকর্মে চোখ টানছে সকলের।

[আরও পড়ুন: মালে প্রতিমা বিসর্জনে মৃত্যুমিছিলের পর কার্নিভ্যাল কি শোভনীয়? প্রশ্ন কবীর সুমন-কমলেশ্বরের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup ছাঁদনাতলা toolbarvideo শোনো toolbarshorts রোববার