নন্দন দত্ত, সিউড়ি: খননের দ্বিতীয় দিনে দেউচা পাঁচামির (Deucha Pachami) প্রস্তাবিত কয়লা খনি এলাকা থেকে সংগ্রহ করা হল কয়লার নমুনা। যা দেখে আশাবাদী জেলা প্রশাসন। জেলাশাসক বিধান রায়ের কথায়, “আমার কাছে প্রাথমিক রিপোর্টে মাটির নিচে ১৬০ ফুট নিচেই কয়লার স্তর পাওয়া গিয়েছে। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্ন সফল হতে চলেছে। আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। প্রকল্প সফল হলে জেলার অর্থনৈতিক বিকাশ ঘটবে।”
মূলত গ্রামবাসীদের সহায়তায় বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে মহম্মদবাজার ব্লকের কেন্দ্রপাহাড়ি এলাকায় কয়লার জন্য সমীক্ষাভিত্তিক খনন শুরু করে পিডিসিএল। চার ফুট বাই পাঁচ ফুটের মোট ২০ বর্গফুটের মধ্যে ‘রিগ’ মেশিন বসিয়ে এই খনন প্রক্রিয়া শুরু হয়। একটানা খনন কাজ চালিয়ে শুক্রবার দুপুরে মাটির তলা থেকে উঠে এল কয়লার অংশ। পিডিসিএলের ভূ-সমীক্ষকরা জানাচ্ছেন, উঠে আসা কয়লার অংশ তাঁদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। তবে এর সঙ্গে ছাইও মিশে রয়েছে।
[আরও পড়ুন: পরপর দু’দিন বঙ্গে করোনা আক্রান্ত ৩ হাজারেরও বেশি, ঊর্ধ্বমুখী পজিটিভিটি রেট]
যখন একটানা ৫০ সেন্টিমিটারের একটি কয়লার টুকরো উঠে আসবে তখন তাঁরা আরও খুশি হবেন বলেই জানান ভূ-সমীক্ষকদের দল। তবে উঠে আসা এই কয়লার টুকরো অনান্য বালি-মাটির মতোই। সংগ্রহ করা নমুনা ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য রেখে দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, প্রায় ২০ বছর আগে জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার (GSI) প্রাথমিক সমীক্ষায় উঠে আসে মহম্মদবাজার ব্লকের প্রথম পর্যায়ের পাঁচটি গ্রাম পঞ্চায়েতের ১০ টি মৌজায় মাটির নিচে ২১০ কোটি টন উন্নতমানের কয়লা সঞ্চিত রয়েছে। দু’দিনের মধ্যেই সেই কয়লার হদিশ মেলায় খুশি জেলা প্রশাসন।
শুক্রবার কেন্দ্রপাহাড়ি এলাকায় প্রথম কয়লা দেখতে যান জেলাশাসক বিধান রায়, জেলা পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠি-সহ অন্যান্য আধিকারিকেরা। কৌতূহলী গ্রামবাসীরাও ভিড় জমান। তবে সমীক্ষকরা জানিয়েছেন, প্রস্তাবিত খনি এলাকার ৭৯টি গর্ত করে সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হবে। প্রাথমিকভাবে ১৪ টি জায়গায় খনন করার কাজ চলবে। কোথাও ৪০০ মিটার কোথাও ১০০ মিটার প্রয়োজন অনুযায়ী খনন চলবে। সব জায়গার নমুনা নিয়ে তৈরি হবে কয়লা খননের পরিকল্পনা নকশা। সেই নকশা অনুযায়ী ঠিক করা হবে, খোলা মুখ খনি করে কয়লা উঠবে নাকি অন্য পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলন করা যাবে। কোনটা লাভজনক সে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। জেলাশাসক বলেন, “প্রথম দু’দিনেই কয়লা পাওয়ায় আমাদের উৎসাহ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। আশা করছি একমাসের মধ্যে প্রথম পর্যায়ের নমুনা সংগ্রহ হয়ে যাবে। তারপরেই তার ভিত্তিতেই মাইনিং প্ল্যান তৈরি হবে।”