সুরজিৎ দেব, সাগর: ভেঙে যাওয়া পাড় অস্থায়ীভাবে তৈরির কাজ চলছে সাগরে। রাজ্য সেচ দপ্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের তরফে সেই কাজ শুরু হয়েছে। জানুয়ারি মাসে গঙ্গাসাগর মেলা শুরু। লক্ষ লক্ষ পূণ্যার্থী হাজির হবেন গঙ্গাসাগরে। কিন্তু দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে সমুদ্র পাড়ের ভাঙন। সেই ভাঙন মোকাবিলা করাই সেচ দপ্তরের কাছে এখন বড় চ্যালেঞ্জ।
গত বেশ কয়েক মাস ধরেই সাগরের পাড় ভাঙছে প্রবলভাবে। কংক্রিটও সমুদ্রের জলে ভেঙে চৌচির। কোটালে সমুদ্রের জল চলে আসছে কপিল মুণির আশ্রমের আশপাশেও। ফুঁসতে থাকা সমুদ্র একাধিক বিশাল কংক্রিট ভাসিয়েও নিয়ে গিয়েছে। বিস্তীর্ণ এলাকায় বড় বড় ভাঙা চাঙড় পড়ে রয়েছে। এবার সেই সব অংশেই কাজ শুরু হল।
সাগরের এক নম্বর স্নানঘাট থেকে পাঁচ নম্বর স্নানঘাট পর্যন্ত বিশাল এলাকায় মেলার সময় স্নান করেন পূণ্যার্থীরা। চারপাশে মেলাও বসে। এবার ভাঙনের কারণে দুই নম্বর স্নানঘাটের পরিস্থিতি বেশ খারাপ। সেখানে এবার স্নান করার অনুমতি দেওয়া হবে না। সেই কথাও প্রশাসনের তরফে জানানো হতে পারে বলে খবর। সেক্ষেত্রে এক নম্বর স্নানঘাট ও তিন থেকে পাঁচ নম্বর স্নানঘাট এলাকায় দ্রুততার সঙ্গে অস্থায়ী পার তৈরির কাজ হচ্ছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে সেই কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে।
কোটালের জেরে সমুদ্রের জল এখন অনেকটাই এগিয়ে আসে। তাছাড়াও ঘূর্ণিঝড়, নিম্নচাপের বৃষ্টিতে সমুদ্র উত্তাল হয়ে পারে এসে আঘাত করে। ধারাবাহিক এই ঘটনায় সমুদ্রপারের প্রবল ভাঙন হচ্ছে। গঙ্গাসাগর মেলার সময় ভাঙন যাতে রোখা যায়, সেই চেষ্টাই চলছে। সমুদ্র পাড়ের ভাঙন কবলিত এলাকায় আশপাশের এলাকা থেকে মাটি নিয়ে এসে ফেলা হচ্ছে। জেসিপি মেশিনের সাহায্যে মাটি বসিয়ে অস্থায়ী পাড়ের কাজ চলছে। এলাকার বিধায়ক তথা সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা জানাচ্ছেন, আগামী ২০ দিনের মধ্যে এই কাজ অনেকটাই হয়ে যাবে। সেচ দপ্তর ও অন্যান্য সংস্থা দ্রুততার সঙ্গে কাজ করছে। তবে সেই মাটি পেতে সামান্য সমস্যা হচ্ছে। সেই কথাও জানিয়েছেন মন্ত্রী।
মন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, সাগরমেলায় আসা পুণ্যার্থীদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সেজন্য সব রকম ব্যবস্থাই নেওয়া হচ্ছে। পুণ্যার্থীরা সুষ্ঠুভাবেই পুণ্যস্নান সেরে কপিলমুণির আশ্রমে পুজো দিয়ে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারবেন। সেচ দপ্তরের আধিকারিকরা ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করছেন। জরুরি ভিত্তিতে বাঁধ মেরামতের কাজের তদারকিও করছেন।