shono
Advertisement
Durgapur Junction

বিষণ্ণ দুর্গাপুরে দুর্ভেদ্য থ্রিলার, পড়ুন 'দুর্গাপুর জংশন'-এর রিভিউ

বিক্রম-স্বস্তিকার বৈপরীত্য, প্রসেনজিতের ক্যামেরা ছবির প্রাণ।
Published By: Arpan DasPosted: 05:25 PM Apr 25, 2025Updated: 05:32 PM Apr 25, 2025

বিদিশা চট্টোপাধ্যায়: 'শিবপুর' দেখার পর পরিচালক অরিন্দম ভট্টাচার্যর পরবর্তী ছবি নিয়ে একটা প্রত্যাশা ছিলই। 'শিবপুর' ভালো ছবি না খারাপ ছবি সেই তর্ক ছাপিয়ে চর্চিত হয়েছিল কারণ বাঙালি দর্শককে নতুন কিছু এনে দিয়েছিল এবং যা অন-স্ক্রিন ভায়োলেন্সের চেয়েও বেশি কিছু। বেশ কিছু শক্তিশালী চরিত্রায়ণ, আন্ডারওয়ার্ল্ডকে নতুন চোখে দেখা এবং চোখধাঁধানো পারফরম্যান্স। 'দুর্গাপুর জংশন' যেন সেই ঝলকের এক্সটেনশন। তবে সংগঠিত ক্রাইম নয়, একলা মানুষের সুচতুর বুদ্ধির সঙ্গে পুলিশ ডিপার্টমেন্টের ধুন্ধুমার লড়াই। দুর্গাপুরের প্রেক্ষাপটে 'নিও নয়‍্যার' ধাঁচে তৈরি হু ডান ইট থ্রিলার।

Advertisement

সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং লাগে প্রসেনজিৎ চৌধুরির ক্যামেরায় কলকাতার বাইরের এক নগরীর চিত্রায়ণ। কলকাতার ক্লিশে চেনা ভিসুয়াল না থাকায় এই জনার আরও শক্তিশালী হয়েছে পর্দায়, কারণ অচেনা শহরের অলিগলি তৈরি করেছে নতুন গোলকধাঁধা। শ্যাওলা সবুজ জলাশয়ে টুপিতে মুখ ঢাকা সুদূর নৌকোয় ভাসমান অচেনা মাছ-ধরা লোকটিকে আরও বেশি রহস্যময় লাগে। বিকেলের আধো অন্ধকারে কবরখানায় খননকার্য তৈরি করে এক আধিভৌতিক পরিবেশ। কেসে পুরোপুরি ফেঁসে গিয়ে গলা জলে ডুবে থাকা দুর্দান্ত পুলিশ অফিসার 'সৌম্য'কে কু দিতে এসে অচেনা ক্যাফেতে নরম গলায় কথা বলা 'উষসী'র উপস্থিতি যেন অন্য হাতছানির ইশারা আরও বেশি করে উসকে দেয়। প্রসেনজিতের ক্যামেরা অদেখা শহরকে বিষণ্ণ নীল রঙে ঢেকে দিলে, ভিটামিন ট্যাবলেট খেয়ে একের পর এক মৃত্যুরহস্য আরও জটিল এবং ঘোলাটে হয়ে ওঠে।

মার্ডার মিস্ট্রি হলেও কিছু জরুরি প্রশ্ন তুলে দেয় অরিন্দম ভট্টাচার্য পরিচালিত 'দুর্গাপুর জংশন'। সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা এবং সাংবাদিকদের স্বাধীনতা হ্রাস নিয়ে সঠিক প্রশ্ন তোলে। এই পোড়া দেশে প্রতিবাদ মানে বিপদ আর মেরুদণ্ড যেন প্রহসন। রাগী পুলিশ অফিসার 'সৌম্য'র চরিত্রে বিক্রম চট্টোপাধ্যায় বেশ স্টাইলিশ। আপাতদৃষ্টিতে নরম, মৃদুভাষী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় অভিনীত 'উষসী'র সামনে তেজি, রুক্ষ বিক্রম যেন রোদ্দুর আর মেঘের লুকোচুরি খেলা। এই লুকোচুরি কনট্রাস্ট গোটা ছবি জুড়ে থাকে, তবে কনট্রাস্ট আরও ধারালো করা যেত। কিন্তু 'সৌম্য' কেন রাগী, চিত্রনাট্য সে আভাস দেয় না। স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় অভিনীত 'উষসী' যেন ছবির মেল্টিং পয়েন্ট। সে ঘন ঘন রং পাল্টায়। পারদের মতো পিছলে যায় হাত থেকে। ফসকে যাওয়া এমন এক মরীচিকা নারীর চরিত্রে স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়কে দারুণ লাগে। সিনিয়র পুলিশ অফিসারের ভূমিকায় একাবলী খান্না মানানসই। তবে তার চরিত্রায়ণে আরও যত্নের প্রয়োজন ছিল। 'দুর্গাপুর জংশন' আরও টানটান হতে পারত, ইনভেস্টিগেশনের দৃশ্যগুলো আরও ডিটেলড হতে পারত দ্রুতি বজায় রেখেই। তবু বলব এই ছবির সেকেন্ড হাফ রুদ্ধশ্বাস এবং নানা ঘাটতি ঢেকে দেয়। গতানুগতিক বাংলা ছবি না দেখতে চাইলে, নতুন কিছু পেতে চাইলে 'দুর্গাপুর জংশন' দেখতে পারেন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • শিবপুর' দেখার পর পরিচালক অরিন্দম ভট্টাচার্যর পরবর্তী ছবি নিয়ে একটা প্রত্যাশা ছিলই।
  • 'শিবপুর' ভালো ছবি না খারাপ ছবি সেই তর্ক ছাপিয়ে চর্চিত হয়েছিল কারণ বাঙালি দর্শককে নতুন কিছু এনে দিয়েছিল।
  • বেশ কিছু শক্তিশালী চরিত্রায়ণ, আন্ডারওয়ার্ল্ডকে নতুন চোখে দেখা এবং চোখধাঁধানো পারফরম্যান্স।
Advertisement