সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বছর চারেক আগে রাজ্যের বাইরে পড়তে গিয়ে প্রথমবার ইউপিএসসি পরীক্ষার নাম শোনা। প্রস্তুতি না নিয়েই বসেন পরীক্ষায়। স্বাভাবিকভাবেই ব্যর্থতা ছাড়া কিছুই জোটেনি। কোর্স শেষে বাড়ি ফিরে শুরু হয় প্রস্তুতি। ২০২০ সাল থেকে আসে পর পর ব্যর্থতা। হাঁটুতে মুখ গুঁজে অঝোরে কেঁদেছিলেন। তার পর আবার ফিরেছেন লড়াইয়ে। অবশেষে চারবারের চেষ্টায় 'স্বপ্নপূরণ'। সর্বভারতীয় পরীক্ষায় ৪২৬ র্যাঙ্ক করে নিজের ও বাংলার নাম উজ্জ্বল করলেন শ্রীরামপুরের তরুণী।
হুগলির শ্রীরামপুরের (Serampore) অনুষ্কা সরকার। পড়াশোনা করেছেন সেন্ট জোসেফস কনভেন্ট স্কুল থেকে। এর পর ভূগোল (Geography) নিয়ে লেডি ব্রেবোর্ন কলেজ থেকে স্নাতক স্তরের পড়াশোনা শেষ করেন। স্নাতকোত্তর করতে পাড়ি দেন ওড়িশার এনআইটিতে (NIT)। সেখানেই উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) এক সহপাঠীর থেকে শোনেন ইউপিএসসির নাম। প্রথম কয়েকবার ব্যর্থ হলেও শেষে মিলল সফলতা।
[আরও পড়ুন: ‘লজ্জা হওয়া উচিত’, শ্লীলতাহানি ইস্যুতে রাজ্যপালকে CCTV ফুটেজ চ্যালেঞ্জ অভিষেকের
ভিন রাজ্যের পড়াশোনার পাঠ চুকিয়ে ইউপিএসসি (UPSC) প্রস্তুতি নিতে রাজ্যের সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর সিভিল সার্ভিসেস স্টাডি (Satyendra Nath Thakur Civil Service Centre) সেন্টারে ভর্তি হন। এই কেন্দ্রটি রাজ্য সরকারের তৈরি। সেন্টারের পড়াশোনার পাশাপাশি হস্টেল থেকে চলতে থাকে কঠোর পরিশ্রম। বার বার ভেঙে পড়েও হাল ছাড়েননি অনুষ্কা। এখন অপেক্ষায় রয়েছেন সার্ভিস অ্যালোকেশনের জন্য। তবে এখানেই থেমে থাকতে চাননি তিনি। ইতিমধ্যেই অক্সফোর্ড, কেমব্রিজ ও লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্স থেকে পড়ার অফার পেয়েছেন। বিদেশে পাবলিক পলিসি, সোশাল পলিসি সম্পর্কিত কোর্সে এক বছরের মাস্টার্সের জন্য অ্যাপ্লাই করেছেন। স্কলারশিপ ও এক বছর পর চাকরিতে যোগ দেওয়ার সুযোগ পেলে পড়তে যাবেন সেখানে। তবে সেই সুযোগ না থাকলে 'দেশের জন্য কাজ' করাকেই বেছে নেবেন গঙ্গাপাড়ের মেয়ে।
[আরও পড়ুন: নুপূর শর্মা-সহ একাধিক হিন্দুত্ববাদীকে খুনের ছক! গুজরাটে গ্রেপ্তার মৌলবী]
অনুষ্কা বলেন, "আমি এবার চারবারের চেষ্টায় ক্র্যাক করলাম। ব্যর্থতা, হতাশায় ডুবে গিয়েছিলাম। তিনটে বছর মেন, ইন্টারভিউ তো দূর প্রিলিমিনারি পাশ করতে পারিনি। কান্নায় ভেঙে পড়তাম। নিজেকে বোঝাতাম, ইউপিএসসি (UPSC) পরীক্ষায় সফল হওয়া জীবনের একমাত্র লক্ষ্য হতে পারে না। মানুষের কাজে লাগবে, এমন অনেক কিছু করার আছে। বাড়ি থেকেও আমাকে কখনও চাপ দেওয়া হয়নি। আমি জুনিয়রদের উদ্দেশ্য়েও এটাই বলব, প্রস্তুতি নেওয়ার পর সাফল্য না এলে হতাশা আসবেই। তা বলে সেটাকেই সব শেষ বলে ভেবে নেওয়া ঠিক নয়।"