shono
Advertisement

হোম থেকে নিখোঁজ ৭ নাবালক, কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানেই উদ্ধার তিন আবাসিক

গোটা ঘটনায় প্রশ্নের মুখে পুরুলিয়ার হোমের নিরাপত্তা। The post হোম থেকে নিখোঁজ ৭ নাবালক, কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানেই উদ্ধার তিন আবাসিক appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 05:57 PM Nov 17, 2019Updated: 05:57 PM Nov 17, 2019

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: দুই হোমগার্ড রয়েছেন ছুটিতে। বাকি দু’জন ঢুলে পড়ছিলেন ঘুমে। এই সুযোগে হোম থেকে পগার পার ৭ নাবালক! এমনকী এক হোমগার্ডেরই মোবাইল নিয়ে ছাদের দরজার তালা ভেঙে পাইপ বেয়ে হোম থেকে পালায় ওই সাতজন। শনিবার মধ্য রাতে ঘটনাটি ঘটে পুরুলিয়ার আদ্রা থানার মনিপুর লেপ্রোসি পুনর্বাসন কেন্দ্রের আওতায় থাকা অরুনোদয় শিশু নিকেতনের উত্তরণ ভবনে। রবিবার সকালে দক্ষিণ পূর্ব রেলের আদ্রা ডিভিশনের টামনা স্টেশন থেকে তিন নাবালককে উদ্ধার করা গেলেও এখনও চার আবাসিক নিখোঁজ।

Advertisement

এই ঘটনায় হোমের নিরাপত্তা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। প্রশ্ন উঠেছে আরও একাধিক বিষয় নিয়েও। একসঙ্গে সাত নাবালক পালালো কী করে?আবাসিকরা কোনওভাবে নির্যাতনের শিকার হয় না তো? কিংবা কোন পাচার চক্র? পুলিশ কোন বিষয়টিকেই হালকা ভাবে নিচ্ছে না। সব কিছু খতিয়ে দেখে উদ্ধার হওয়া তিন নাবালকের সঙ্গে কথা বলে বাকি চারজনের খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার এস. সেলভামুরুগন বলেন, “তিনজনকে উদ্ধার করা গিয়েছে। তাদের নাম আকাশ কৈবর্ত, বীর সিং ও জগন্নাথ বান্দ্রা। নিখোঁজ সোনি মুদি ও তিন ভাই গনেশ কেওড়া, অর্জুন কেওড়া ও জিতেন কেওড়ার খোঁজে এসডিপিও-এর নেতৃত্বে একটি টিম করা হয়েছে।”

রবিবার বিকালে ওই হোম পরিদর্শন করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পিনাকী দত্ত। এদিন ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ অন্যান্য আবাসিকরা মাঠে খেলার জন্য ঘুম থেকে ওঠে। সাত-সাতটি বিছানা খালি দেখে বাকি আবাসিকরা চমকে ওঠে। সঙ্গে সঙ্গে তারা কর্তৃপক্ষকে জানায়। শুরু হয় চারদিকে খোঁজাখুঁজি। পরে দেখা যায় হোমের ভবনের ছাদের দরজার তালা ভাঙা। পরে কর্তৃপক্ষ সিসিটিভি ফুটেজে দেখে ওই আবাসিকরা একসঙ্গে ছাদের দরজার তালা ভাঙে। তারপর পাইপ বেয়ে একজন করে নিচে নেমে যায়। জানা গিয়েছে, ওই কিশোরদের বয়স ছয় থেকে পনেরোর মধ্যে।

হোম সূত্রে খবর, আকাশ ছ’বছর ধরে এই হোমে রয়েছে। সে আগে পুরুলিয়া বাসস্ট্যান্ডে ভিক্ষা করত। চাইল্ড লাইন মারফত তার ঠিকানা হয় এই হোম। বীর সিং ও জগন্নাথ বান্দ্রার বাড়ি ঝাড়খন্ডের জামশেদপুরে।তারা বাড়ি ছেলে পালিয়ে আসে। দিন সাতেক আগেআরপিএফ তাদেরকে পুরুলিয়া থেকে উদ্ধার করে।তারপর তাদেরকে এই হোমে রাখা হয়। তবে এই দুইআবাসিককে তাদের পরিবারের হাতে তুলে দিতে প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এদিকে এখনও নিখোঁজ থাকা সোনি মুদি আড়শার মিসরডি গ্রামের বাসিন্দা। সে শহর পুরুলিয়ায় শিশু শ্রমিকের কাজ করত। পুলিশ তাকে উদ্ধার করে এই হোমে পাঠায়। তিন ভাই গনেশ, অর্জুন ও জিতেনের মধ্যে গনেশ, অর্জুন কেওড়া সাতদিন আগে এই হোমে আসে। আরেক ভাই জিতেন আসে ছ’মাস আগে। এদের বয়স ছয় থেকে আটের মধ্যে। গনেশ সবচেয়ে ছোট হওয়ায় রীতিমত কোলে করে গামছা বেঁধে তাঁকে নিয়ে চম্পট দেয় বাকিরা। এমনটাই দেখা গিয়েছে সিসিটিভি ফুটেজে। এই তিনজনের বাড়ি আদ্রার দুবরাডি। এদের বাবা সংশোধনাগারে রয়েছে। তাই এরা আদ্রা স্টেশনে ভিক্ষা করত। রেল পুলিশ উদ্ধার করে তাদের এই হোমে পাঠিয়ে পাঠায়।

[আরও পড়ুন: শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল, চিকিৎসার জন্য কলকাতার পথে মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ]

হোমের কর্ণধার নবকুমার দাস বলেন, “কেন এরা হোম থেকে এভাবে পালিয়ে গেল বুঝতে পারছি না। পুলিশকে সব জানিয়েছি। রাত বারোটা নাগাদ তারা পালিয়ে যায়।” তবে এদিন দিনভর এই আবাসিকদের পালানো নিয়ে হোম কর্তৃপক্ষ রীতিমত লুকোচুরি খেলে। কোনও প্রশ্নের সঠিক ভাবে উত্তর দিতে চায় না। হোম কর্তৃপক্ষ জানায়, পুলিশ নিষেধ করেছে। অন্যদিকে, রঘুনাথপুর মহকুমা পুলিশও প্রথম দিকে মুখে কুলুপ আঁটে। তবে হোম কর্তৃপক্ষের সাফাই, পালিয়ে যাওয়া নাবালকদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ভিক্ষা করত। ফলে হাতে পয়সা আসত। এখানে হোমে তা না হওয়ায় সকলে একজোট বেঁধে পালিয়ে যায়।

The post হোম থেকে নিখোঁজ ৭ নাবালক, কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানেই উদ্ধার তিন আবাসিক appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement