মনিরুল ইসলাম, উলুবেড়িয়া: দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে আনিস খানের দেহ তুলতে গিয়ে বাধা পেল সিট। আমতার স্থানীয় বাসিন্দাদের বিক্ষোভের জেরে শনিবার সাতসকালে ফাঁকা হাতেই ফিরতে হল তদন্তকারীদের। শুক্রবার রাতেই দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের কথা উল্লেখ করে আনিসের পরিবারের হাতে নোটিস দিতে যান সিটের প্রতিনিধিরা। যদিও সেই সময়ই শনিবার কবর থেকে দেহ তোলার ক্ষেত্রে আপত্তি জানান নিহতের বাবা। শারীরিক অসুস্থতার কারণে ২ দিন সময় চান তিনি।
শনিবার ভোর পাঁচটা নাগাদ সিট (SIT) ও বিশাল পুলিশবাহিনী আমতার সারদা দক্ষিণ খাঁপাড়ায় যায়। কিন্তু গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে তারা পিছু হটে। শেষমেশ দেহ তুলতে না পেরে খালি হাতে ফিরে যেতে হয় সিটকে। আনিসের দাদা সাবির খান বলেন, “আমরা তো হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে বলেছিলাম দেহ তুলতে দেব। আমরা একটু সময় চেয়েছিলাম। সেটা সিট দিতে চাইছে না কেন? সিট কি দেহ চুরি করতে এসেছে?” প্রয়োজনে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ারও হুঁশিয়ারি দেন তিনি। যদিও দেহ তুলতে বাধা প্রসঙ্গে সিট ও পুলিশকর্তারা মুখ খোলেননি। এদিন ফের সাড়ে আটটা নাগাদ আমতা থানার (Amta Police Station) ওসি কিঙ্কর মণ্ডল আনিসের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন।
[আরও পড়ুন: ব্যর্থ প্রেমের প্রতিশোধ, তিন বছর পর তরুণীর বাড়িতে লুটের চেষ্টায় গ্রেপ্তার ২]
এর আগে কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) নির্দেশে শুক্রবারই উলুবেড়িয়া উপ সংশোধনাগারে অভিযুক্তদের শনাক্তকরণে টিআই প্যারেডের ব্যবস্থা করা হয়। আইনজীবীর সঙ্গে আদালতে যান আনিসের বাবা-সহ বেশ কয়েকজন। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে চলে টিআই প্যারেডের প্রক্রিয়া। যদিও টিআই প্যারেডে প্রকৃত অপরাধীদের দেখতেই পাওয়া যায়নি বলেই দাবি করেন আনিসের বাবা।
এরপর রাতের দিকে সিটের সদস্যরা দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের (Postmortem) নোটিস হাতে নিহত ছাত্রনেতার বাড়িতে যায়। যদিও আনিসের পরিবারের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, ছাত্রনেতার বাবা অসুস্থ। তাই আরও কিছুটা সময় দেওয়া প্রয়োজন। তবে তারপরেও দেখা যায় শনিবার ভোর পাঁচটা নাগাদ ওসি’র নেতৃত্বে বিশাল পুলিশবাহিনী-সহ আমতা ২ নম্বর ব্লকের বিডিও হাজির হন। দেহ কবর থেকে তোলার কথা জানায়। তারপরই শুরু হয় অশান্তি। স্থানীয়রাই মসজিদ থেকে মাইকে প্রচার করে পুলিশ আনিসের দেহ তুলতে এসেছে। তা শুনতে পেয়ে ঘুমঘোর কাটিয়ে গ্রামবাসীরা বেরিয়ে আসেন। তারা কিছুতেই দেহ তুলতে দেবে না বলে জানায়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে শুরু করলে খালি হাতেই ফিরতে হয় সিটের সদস্য ও পুলিশবাহিনীকে।
আনিসের মোবাইলটিও ইতিমধ্যেই তদন্তকারীদের হাতে তুলে দিয়েছেন তাঁর বাবা। মোবাইলটির ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য হায়দরাবাদে পাঠানো হবে। আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে যাবতীয় তদন্ত রিপোর্ট সিটকে হাই কোর্টে জমা দিতে হবে। ওই রিপোর্ট খতিয়ে দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে কলকাতা হাই কোর্ট।