চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: দশম শ্রেণির পড়ুয়া অমরপ্রিত কউরের দেহ উদ্ধারের ২৪ ঘন্টার মধ্যে খুনে জড়িত ৬ জনকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। মুক্তিপণ আদায়ের জন্যই অপহরণ করা হয়েছিল ছাত্রীকে। ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়েই অমরপ্রিতকে খুন করে দেওয়া হয় বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। জানা গিয়েছে, খুনের ঘটনায় জড়িত রয়েছে ছাত্রীর ঘনিষ্ঠ দুই বন্ধু-সহ মোট ৬ জন। তদন্তে নেমে বুধবার বিজয় প্রসাদ, সুপ্রিয় বক্সি, দীপিকা শাহ, আকাশ শাহ নামে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ৷ তাদের আদালতে পাঠানো হলে ১২ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পরে আলিশা শাহ ও প্রবীণ রায় নামে দুজনকে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বিষ্ণুপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন:‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচির নিয়ম ভাঙলেই ফোন যাচ্ছে পিকের সংস্থা থেকে, তটস্থ নেতারা]
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত অমরপ্রিতকে পার্টি করার নামে বিজয় প্রসাদ আট নম্বর বস্তির বিপিএল আবাসনে ডাকে শনিবার। টিউশন থেকে ফেরার পথে অমরপ্রিত চলে যায় সেখানে। পূর্বপরিকল্পনা মতো হাজির ছিল আকাশ। পানীয়ের সঙ্গে মাদক খাইয়ে বেহুঁশ করে দেওয়া হয় ছাত্রীকে। এরপর তার পোশাক খুলে বিজয় তার পোশাক পরিয়ে দেয়। এরপর সুপ্রিয়কে ডেকে বেহুঁশ ছাত্রীকে তার গাড়িতে চাপিয়ে আকাশ নিজের বাড়ি চেলিডাঙায় নিয়ে যায়। অমরপ্রিতকে সেখানেই আটকে রাখা হয়।
পুরো ঘটনা জানতো আকাশের মা, দিদি, জামাইবাবু। তার এই অপহরণে সাহায্য করে। জানা গিয়েছে, পরদিন ঝাড়খন্ডের চিরকুণ্ডা থেকে আকাশ ও প্রবীণ ছাত্রীর মোবাইল ফোনটি নিয়ে মেসেজ করে বাবা বলখার সিংয়ের মোবাইলে। ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে তারা। এই খবর পুলিশ পেতেই শুরু করে তল্লাশি। সেই খবর পেয়ে অপহরণকারীদের দুই সাগরেদ আলিশা ও প্রবীণ পালিয়ে যায়। সেই সময়ই ধরা পড়ার ভয়ে ছাত্রী অমরপ্রীত কউরকে শ্বাসরোধ করে খুন করে বাকিরা। মৃত্যু নিশ্চিত করতে গলার নলি ও হাতের শিরা কেটে দেওয়া হয় অমরপ্রীতের। এরপর ফের চেলিডাঙা থেকে সুপ্রিয়র গাড়িতে ছাত্রীর দেহ নিয়ে ফেলে দেয় আপকার গার্ডেনের ডাস্টবিনে।
আসানসোলের এডিসিপি সেন্ট্রাল সায়ক দাস বলেন, ধৃতদের ১২ দিনের পুলিশি রিমান্ড মিলেছে। ঘটনার পুণর্নির্মাণ করা হবে তাদেরকে দিয়ে। প্রাথমিকভাবে জানা গিযেছে, টাকার লোভে ওই একটি পরিবার ও তাদের বন্ধুরা মিলে অপহরণের ঘটনা ঘটিয়েছিল। মেয়ের দেহ উদ্ধারের পর বারবার পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন অমরপ্রিতের পরিবার। তাঁদের অভিযোগ, পুলিশি তদন্তে গাফিলতি থাকায় খুন হতে হয়েছে অমরপ্রিতকে। ছাত্রীর মায়ের অভিযোগ, ফাঁড়ির অফিসার অভিযোগ না নিয়ে বলেছিলেন, মেয়ে পালিয়েছে। ওই অফিসারের শাস্তির দাবিতে সোচ্চারও হন তিনি।
[আরও পড়ুন:হলদি নদীর পারে যুবকের মুণ্ডহীন দেহ উদ্ধার, খুনের কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা]
The post আসানসোলে ছাত্রীকে অপহরণ ও খুনে প্রকাশ্যে বন্ধু-যোগ, গ্রেপ্তার ঘনিষ্ঠ-সহ ৬ appeared first on Sangbad Pratidin.
