shono
Advertisement

আইনি জটিলতায় দেড় বছর ধরে হাসপাতালেই বড় হচ্ছে ছয় শিশু

পরিকাঠামোর অভাবকেই দুষছেন আধিকারিকরা। The post আইনি জটিলতায় দেড় বছর ধরে হাসপাতালেই বড় হচ্ছে ছয় শিশু appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 08:20 PM Jan 06, 2019Updated: 08:20 PM Jan 06, 2019

সংগ্রাম সিংহরায়, শিলিগুড়ি: কারও বয়স দুই, কারও তিন, কারও পাঁচ কিংবা ছয়। এদের কারও বাড়ি নেই, বাবা-মা নেই। গত দেড় বছর ধরে তাদের ঠিকানা হাসপাতাল। আইনি জটিলতায় দেড় বছর ধরে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও শিলিগুড়ি হাসপাতালে পড়ে রয়েছে ওই ছ’টি শিশু। প্রত্যেকের বয়স দুই থেকে ছয় বছরের মধ্যে। এদের মধ্যে পাঁচজনেরই কোনও অভিভাবক নেই। অপরজনের বাবা-মা থাকলেও বাবার ঠিকানা নেপাল হওয়ায় আইনি গেরোয় আটকে রয়েছে প্রত্যর্পণ পরিকল্পনা। ফলে হাসপাতালের বেডেই বেড়ে উঠছে ওই ছয় শিশু। মানবিকতার খাতিরে এই সমস্ত শিশুদের দ্রুত স্থায়ী ঠিকানা খোঁজে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে শিশু সংগঠনগুলো।

Advertisement

বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ এবং শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য। রুদ্রনাথবাবু রাজ্যের স্বাস্থ্য বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যও। তিনি গোটা বিষয়টি নিয়ে বিভাগীয় মন্ত্রী শশী পাঁজার কাছে চিঠি লিখবেন বলে জানিয়েছেন। রুদ্রনাথবাবু বলেন, “পুরো বিষয়টি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। তবে আইনি বাধ্যবাধকতা থাকায় তাদের স্থানান্তরিত করা যায়নি। এতে আমাদের কিছু করার নেই। তবে মানবিকভাবে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে আমি বিভাগীয় মন্ত্রী শশী পাঁজার কাছে আবেদন জানাব।” দার্জিলিং জেলা চাইল্ড লাইনে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা চাইল্ড ইন নিড ইনস্টিটিউট (সিনি)-র উত্তরবঙ্গের আহ্বায়ক শেখর সাহা অভিযোগ করেন, “হাসপাতাল অসুস্থদের চিকিৎসার জায়গা। সেখানে কোনও শিশুর বেড়ে ওঠার আদর্শ পরিবেশ নেই। আইনি বিষয়টি নিশ্চয়ই মাথায় রাখতে হবে। কিন্তু একটি শিশুর শৈশব কেড়ে নেওয়া কোনও মতেই সমর্থনযোগ্য নয়। তাই কোনও হোম অথবা স্থায়ী আস্তানাতে তাদের স্থানান্তরিত করলে অন্তত পড়াশুনো থেকে জীবনের ন্যূনতম পাঠ তারা নিতে পারবে, যা হাসপাতালে তারা বঞ্চিত হচ্ছে।”

[‘পুলিশকে মারুন‘, অনুব্রতর সুরে হুঁশিয়ারি বিজেপি নেতার]

বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দার্জিলিং জেলা সমাজকল্যাণ আধিকারিক নিমাইচন্দ্র রায়। তাঁর দাবি, গোটা বিষয়টি নিয়ে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি ও ভারত সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে কাজ করা হচ্ছে। নেপালের বাসিন্দা শিশুটির ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা থাকায় তা হাতে তুলে দেওয়া যাচ্ছে না। অন্যদিকে বাকি শিশুগুলিকে পর্যাপ্ত বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় স্থানান্তরিত করা সম্ভব হচ্ছে না।” দার্জিলিং জেলায় এই মুহূর্তে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি নেই। তাই এখানকার দায়িত্ব সামলান আলিপুরদুয়ার চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি। সেখানকার কমিটির চেয়ার‌ম্যান কান্তভূষণ দাস। তিনি গোটা বিষয়টিতে সহমর্মিতা দেখালেও জানালেন, তাঁদের এই মুহূর্তে কিছু করার নেই। তাঁর মতে, উত্তরবঙ্গে যতগুলি স্পেশাল অ্যাডাপশন এজেন্সি রয়েছে সেগুলি ভরতি। ফলে নতুন করে সেখানে শিশু রাখা সম্ভব হচ্ছে না। আলিপুরদুয়ারে নতুন অ্যাডাপশন এজেন্সি তৈরির জন্য আবেদন জানানো হয়েছে। তা হলে সেখানে এদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা সম্ভব হতে পারে। উত্তরবঙ্গে মালদহ, রায়গঞ্জ এবং কোচবিহারে অ্যাডাপশন এজেন্সি রয়েছে। প্রতিটি জেলায় ১০ জন করে শিশু রাখার বন্দোবস্ত থাকলেও প্রত্যেকটিতে ১২-১৩ জন করে আগে থেকেই আছে। ফলে আরও শিশু নেওয়া সম্ভব নয়। যদিও শেখরবাবু মনে করেন গোটা রাজ্যেই জায়গার তুলনায় দ্বিগুণ লোক রাখতে হয়। সংশোধনাগার থেকে শুরু করে হোম সর্বত্র একই অবস্থা। সেখানে শিশুগুলির দিকে চিন্তা করে অন্তত সেগুলিকে ভাগ করে তিনটি অ্যাডাপশন এজেন্সিতে রাখা যেতেই পারে।

The post আইনি জটিলতায় দেড় বছর ধরে হাসপাতালেই বড় হচ্ছে ছয় শিশু appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement