নন্দন দত্ত, সিউড়ি: জঙ্গি হামলার পর কেটে গিয়েছে প্রায় চারদিন। তবে আতঙ্ক আজও প্রথম দিনের মতোই। এখনও দু’চোখ বন্ধ করলেই কানে ভাসছে গুলির শব্দ আর আর্ত চিৎকার। এই দুঃসহ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি চান কাশ্মীরের আপেল খেতে কাজ করা বাংলার শ্রমিকেরা। তাই তো তাঁরা বাড়ি ফেরার জন্য উতলা হয়ে উঠেছেন। কিন্তু
মৃত্যু উপত্যকা থেকে বাড়ি ফিরতে গিয়ে বিপাকে পড়লেন অন্তত ৯ জন বাঙালি শ্রমিক। শ্রীনগরের সেনা ক্যাম্পে বীরভূমের পাইকর থানার নয়াগ্রামের বাসিন্দা ওই নজন শ্রমিককে আটকে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ। তবে কী কারণে আটকে রাখা হয়েছে তাঁদের, সে বিষয়টি এখনও অজানা।
বীরভূমের পাইকর থানা এলাকার ২৫ জন শ্রমিক শুক্রবার সন্ধে নাগাদ ট্রেন ধরার উদ্দেশে জম্মুতে পৌঁছে যান। রাতেই তাঁরা জম্মু তাওয়াই এক্সপ্রেস ধরেন। কিন্তু শ্রীনগরের সেনা ক্যাম্পে আটকে পড়েছেন বারমুলার কানিসপুরা গ্রামে কর্মরত ৯ জন শ্রমিক। তাঁরা সকলেই পাইকরের নয়াগ্রামের বাসিন্দা। গ্রীষ্মকালে বহু মানুষ কাজ করতে কাশ্মীর চলে যান। উপত্যকায় শীত পড়লে তাঁরা বাড়ি ফেরেন। পাইকর থানার দাঁতুড়া, নয়াগ্রাম এলাকার ২৫ জন শ্রমিক মাসকয়েক আগে কাজের সন্ধানে কাশ্মীরে যান। শীত পড়তেই তাঁরা বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তখনই ঘটল জঙ্গি হামলা। কাশ্মীরে থাকা শ্রমিক রাকিবুল শেখ বলেন, “আমরা বারমুলাতে চাষের কাজ করতাম। শীত পড়তেই আমরা বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। কিন্তু জঙ্গি হামলা হওয়ায় এখানে এক মুহূর্ত থাকতেও ভয় লাগছে।”
অন্যদিকে, বারমুলার কানিস্কপুরা গ্রামে চাষের কাজ করতেন পাইকর থানার নয়াগ্রামের ৯ জন শ্রমিক। ঘটনার পর তাঁরাও সমানভাবে আতঙ্কিত। বাড়ি ফিরতে চেয়ে তারা সেনাবাহিনীর কাছে সাহায্য চান। সেই মতো সেনার পক্ষ থেকে তাঁদের প্রথমে বারমুলা ক্যাম্পে রাখা হয়। শুক্রবার সকালের দিকে তাঁদের শ্রীনগরের সেনা ক্যাম্পে রাখা হয়। সেনা ক্যাম্পে থাকা আসগার শেখ, খালেক শেখ, লুৎফার শেখরা বলেন, “পাঁচ শ্রমিকের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর আমরা আতঙ্কে রয়েছি। সেই দিন থেকেই বাড়ি ফেরার জন্য মুখিয়ে আছি। কিন্তু ভয়ে এলাকা ছাড়তে পারছিলাম না। তাই সেনাবাহিনীর সাহায্য চেয়েছিলাম। আমাদের সাহায্যের নাম করে বারমুলা থেকে শ্রীনগরে তুলে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু এখন বলছে ছাড়া যাবে না। কিন্তু কেন আটকে রেখেছে তা বলতে পারব না। তাতে আমাদের উৎকণ্ঠা আরও বেড়ে গেল।” কিন্তু কেন তাঁদের আটকে রাখা হয়েছে? কবে ছাড়া পাবেন তাঁরা? একাধিক প্রশ্নের উত্তর শুধুই নীরবতা।
[আরও পড়ুন: ডিসেম্বরেই ছাদনাতলায় জুন মালিয়া, কাকে বিয়ে করছেন অভিনেত্রী?]
এ প্রসঙ্গে জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বলেন, “পুরো বিষয়টি মুরারই ২ নম্বর ব্লকের বিডিওকে দেখতে বলা হয়েছে। কিন্তু কেন তাঁদের আটকে রাখা হল সে বিষয়ে শ্রমিক পরিবারগুলি কিছুই জানেনা। তা আমরা খতিয়ে দেখছি।” যদিও জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিং বলেন, “৯ জনের বিষয়ে কাশ্মীর থেকে আমাদের কাছে কিছু রিপোর্ট চাওয়া হয়নি। তবে বেসরকারি সূত্রে খবর সেনা অফিসারেরা শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ করার পরেই ছেড়ে দেবেন।”
The post শ্রীনগরে সেনা ক্যাম্পে আটক ৯ বাঙালি শ্রমিক, উদ্বিগ্ন পরিবার appeared first on Sangbad Pratidin.
