সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কারা থাকবেন? কারা পড়াবেন? স্কুলের অন্যান্য কাজকর্মই বা চলবে কী করে? বৃহস্পতিবার এসএসসি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ের (SSC Recruitment Case Verdict) পর স্কুলে-স্কুলে শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী, পড়ুয়া ও অভিভাবক মহলে এই প্রশ্নগুলিই মাথাচারা দিচ্ছে। ২০১৬-র বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী চাকরি পাওয়া শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীরা যে সব স্কুল নিযুক্ত রয়েছেন, সেখানে প্রশ্নগুলি আরও প্রকট। সারা বছরই পরীক্ষা, মূল্যায়ণ, ফলাফল বাংলার শিক্ষা পোর্টালে তোলা। দিনের পর দিন কাজের চাপ বাড়ছে। এই অবস্থায় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী বাড়ন্ত হলে সব কাজ ঠিকঠাক সময়মতো করে ওঠা যাবে কিনা তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাদের মতে, এই ঘাটতি দ্রুত পূরণের আশা কম। কারণ পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়াটাই মামলা মোকদ্দমার জালে জড়িয়ে।
এসএসসির ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ হয় স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষার মাধ্যমে। এর মধ্যে একধাক্কায় ২৫ হাজার ৭৫২ জনের চাকরি গিয়েছে। তার প্রভাব যে স্কুলগুলিতে পড়বে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। একদিকে মাধ্য়মিক-উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার খাতা দেখা চলছে। ইতিমধ্যে ৬০-৬৫ শতাংশ খাতা দেখা হয়ে গিয়েছে। পর্ষদে জমাও পড়েছে। এর মধ্যে চাকরি বাতিল হওয়ায় সময়ের মধ্যে কীভাবে খাতা দেখা শেষ হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। এই আশঙ্কার মাঝেই স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফে জেলাগুলি থেকে রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে। জানতে চাওয়া হয়েছে, চাকরি বাতিল হওয়া ২৬ হাজার শিক্ষকের মধ্যে কারা কারা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার খাতা দেখছেন। আগামী ২, ৩ দিনে সেই তালিকা দেওয়া হবে।
স্কুলে ক্লাস নেবেন কারা, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। কোনও স্কুলের ২ জন, কোনও স্কুলের ৮ জন আবার কোনও স্কুলের একধাক্কায় ৩৬ জনের চাকরি 'নট' হয়েছে। ফলে তাঁদের অনুপস্থিতিতে ক্লাস কারা নেবেন, তা একটা বড় প্রশ্ন। উপরন্তু একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের সিলেবাস কীভাবে শেষ করা হবে তা নিয়েও চিন্তা বাড়ছে। যে সব স্কুলের একাদশ-দ্বাদশের বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক এই রায়ের আওতায় আসছেন। সেখানে প্রশ্নের মুখে পড়ছে পড়ানোর গভীরতাও। শিক্ষাকর্মীদের সংকটও বেশি করে ভাবাচ্ছে স্কুলগুলিকে।
তবে সূত্রের দাবি, ২০১৬ সালের এসএসসির প্যানেলের 'দাগি' শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীদের এখনই ইস্তফা দিতে হচ্ছে না তাঁদের। তিনমাস সময় থাকছে। তবু সুপ্রিম নির্দেশের প্রভাব যে শিক্ষকদের উপর পড়বে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।