শেখর চন্দ, আসানসোল: পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেপ্তারির পরই উঠে এসেছিল মোনালিসা দাসের (Monalisa Das) নাম। কিন্তু হদিশ মেলেনি। অবশেষে দেখা মিলল কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপিকা ও বিভাগীয় প্রধান মোনালিসা দাসের। যদিও নিজের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ একেবারে ভিত্তিহীন বলেই দাবি তাঁর।
সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফেরার পথে দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে মোনালিসা দাস বলেন, “আমাকে ইডি কখনও তলব করেনি। ইডির নোটিসের প্রশ্নই নেই। আমার বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অবান্তর।” সম্প্রতি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলি কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। ডেপুটেশন জমা দিয়েছে মোনালিসাদেবীর বিরুদ্ধে। সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি একজন সৎ মানুষ। সৎ শিক্ষক। শিক্ষিত পরিবারের সন্তান।” কিন্তু পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেপ্তারির পর কেন ভ্যানিশ হয়ে গিয়েছিলেন শিক্ষিকা? তাঁর দাবি, পারিবারিক কাজে ব্যস্ত ছিলেন। তারপর অসুস্থ থাকায় কাজ থেকে অব্যাহতি নিয়েছিলেন।
[আরও পড়ুন: আরও বাড়ল দুর্গাপুজোর অনুদান, রাজ্যের ক্লাবগুলির জন্য বড় ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর]
উল্লেখ্য, গত ২৩ জুলাই চর্চায় আসেন কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা মোনালিসা দাস। এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) ঘনিষ্ঠ বান্ধবীদের মধ্যে অর্পিতার মুখোপাধ্যায়ের মতো এই মোনালিসা দাসেরও নাম উঠে আসে। তিনি ইডি রেডারে আছেন বলেও জল্পনা শুরু হয়। মোনালিসাও নাকি বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির অধিকারী, তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। সেই থেকেই আড়ালে ছিলেন মোনালিসা দাস। আসানসোলের গড়াইরোডের ভাড়া বাড়ির মালিক জানিয়েছিলেন, মোনালিসা দাস ১০ জুলাই শেষ বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিলেন। তারপর ১ মাস ১০ দিন পর তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে যান।
২০১৪ সালে আসানসোলের কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন মোনালিসা দাস। সেই সময় রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা সূত্র বলছে, খুব কম দিনের মধ্যেই অধ্যাপক থেকে বিভাগীয় প্রধানের পদে উন্নীত হন তিনি। এই উত্থান কি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অঙ্গুলিহেলনেই? উঠছিল সেই প্রশ্ন। তাঁর সম্পত্তির উৎস নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে যথেষ্ট। ইডি সূত্রে খবর, মোট ১০ টি ফ্ল্যাটের মালকিন নাকি অধ্যাপক মোনালিসা দাস। শান্তিনিকেতন, নদিয়ায় বাড়ি ছাড়াও একাধিক জায়গায় তাঁর নামে ফ্ল্যাট রয়েছে। শোনা যায়, এই সবই আসলে মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। তিনিই মোনালিসা দাসকে সেসব ফ্ল্যাট দেখভালের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। প্রতিবেশীরা জানিয়েছিলেন, তিনি মাসে দু থেকে তিনবার আসানসোলের বাড়িতে আসতেন। সাদা গাড়িতে করে আসতেন। আবার চলে যেতেন। এদিন অবশ্য তিনি টোটোতে করেই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাড়ি ফিরে আসেন।