shono
Advertisement

শিক্ষকতার নামে কিশোরদের মগজধোলাই? হাওড়ায় JMB লিংকম্যান গ্রেপ্তারিতে ধন্দে গোয়েন্দারা

পরিচয় গোপন করে প্রায় ২ বছর ধরে হাওড়ার বাঁকড়ায় ভাড়া থাকত ওই জঙ্গি।
Posted: 08:42 PM Mar 16, 2022Updated: 08:43 PM Mar 16, 2022

অর্ণব আইচ ও অরিজিৎ গুপ্ত: কলকাতার উপকণ্ঠে জঙ্গিদের স্লিপার সেল। বাংলাদেশ থেকে আসা জামাত উল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি) জঙ্গিদের আশ্রয় দেওয়া হচ্ছিল হাওড়ায়। তাদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা থেকে শুরু করে টিকিট কেটে দেওয়া সবরকমের ব্যবস্থা করেছিল হাওড়ার স্লিপার সেলের সদস্য। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে হাওড়ার বাঁকড়া থেকে পেশায় ‘শিক্ষক’ জেএমবির লিংকম্যান আমিরুদ্দিন আনসারিকে গ্রেপ্তার করল রাজ্য পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স। তার কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে কিছু জেহাদি বই।

Advertisement

গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছুদিন আগে মধ্যপ্রদেশের ভোপালের আইশবাগ ও কারোন্ড এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে ওই রাজ্যের গোয়েন্দারা চার বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করে। জানা যায়, ফজর আলি ওরফে মেহেমুদ, মহম্মদ আকিল ওরফে আহমেদ, জাহিরুদ্দিন ওরফে ইব্রাহিম ওরফে মিলন পাঠান ওরফে জওহর আলি ও ফজর জইনুল আবেদিন ওরফে আক্রম আল হাসান ওরফে হোসেন নামে ওই চার যুবক আসলে জেএমবি জঙ্গি সংগঠনের সদস্য। তাদের মধ্যে তিনজনই সম্প্রতি উত্তর ২৪ পরগনার সীমান্ত পার করে এই রাজ্যে আসে।

[আরও পড়ুন: ‘বাড়িতে আয়কর হানার হুমকি দিচ্ছেন শুভেন্দু’, স্পিকারের কাছে নিরাপত্তা চাইলেন BJP বিধায়ক]

এরপর বাংলাদেশের জেএমবির নেতাদের নির্দেশ অনুযায়ী, তাদের মধ্যে দু’জন চলে আসে হাওড়ার ব্যাঁটরায়। তাদেরই নিজেদের কাছে থাকার ব্যবস্থা করে জেএমবির লিংকম্যান আমিরুদ্দিন আনসারি। ভোপালের জন্য তাদের ট্রেনের টিকিট কাটার ব্যবস্থাও করে দেয়। সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশ পুলিশ জঙ্গিদের জেরা করে আমিরুদ্দিনের নাম জানতে পেরে সেই তথ্য রাজ্য এসটিএফকে জানায়। সেই সূত্র ধরেই বাঁকড়ার মুন্সিডাঙার একটি বাড়ি গত মঙ্গলবার গভীর রাতে ঘিরে ফেলেন এসটিএফ আধিকারিকরা। বাড়ি থেকেই আমিরুদ্দিনকে গোয়েন্দারা গ্রেপ্তার করেন। বুধবার ধৃতকে হাওড়ার আদালতে তোলা হয়। তাকে ১২ দিনের পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।
প্রাথমিকভাবে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, অভিযুক্ত যুবক পুরুলিয়ার পারা এলাকার বাসিন্দা। মুন্সিডাঙার একটি বাড়ির তিনতলার ফ্ল্যাটে থাকত। বছর দু’য়েক আগে বাড়ির মালিক হাবিবুল্লার কাছ থেকে ঘরটি ভাড়া নেন। এলাকার বাসিন্দারা জানান, ওই ব্যক্তি দু’বছর আগে আসে। প্রত্যেকের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করত। তাই তাকে কেউ সন্দেহ করেনি। এলাকার নয়াবাঁধের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিশু ও বালকদের পড়াত। তার স্ত্রী একবারই সপ্তাহতিনেকের জন্য ওই বাড়িতে আসে। সাধারণত একাই থাকত। কিন্তু মাঝেমধ্যে বাইরের লোকেরা আসত। কখনও দু’জন, আবার কখনও তিনজন এসে থাকত ওই ফ্ল্যাটে। একদিন বা দু’দিন থেকে তারা যে বাইরে চলে যেত, তা খেয়াল করেছেন এলাকার বাসিন্দারাও। কেউ জিজ্ঞাসা করলে আত্মীয় বা বন্ধু বলে পরিচয় দিত।

এই তথ্য হাতে আসার পর গোয়েন্দাদের ধারণা, অভিযুক্ত আমিরুদ্দিন গত দু’বছরে বেশ কয়েকজন জেএমবি জঙ্গিকে আশ্রয় দিয়েছে। এর আগে দক্ষিণ শহরতলির হরিদেবপুর বা উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত থেকে কলকাতা পুলিশের এসটিএফ গ্রেপ্তার করে জেএমবির লিংকম্যানদের। এখনও কয়েকজন লিংকম্যান পলাতক। ওই মডিউল ভেঙে দেওয়ার পর বাংলাদেশ থেকে আসা জেএমবিদের বাঁকড়ায় আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়। কতজনকে সে আশ্রয় দিয়েছিল, তা গোয়েন্দারা জানার চেষ্টা করছেন। তার মাধ্যমে নতুন করে হাওড়ায় জেএমবির কোনও মডিউল তৈরি বা পড়ানোর নামে বালক ও কিশোরদের মগজধোলাইয়ের ছক কষা হচ্ছিল কি না, তাও জানার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

[আরও পড়ুন: বাম প্রার্থী তালিকায় কর্পোরেটের ছোঁয়া! অভিজাত বালিগঞ্জে সিপিএমের বাজি ফুয়াদ হালিমের স্ত্রী]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup রাজধানী এক্সপ্রেস toolbarvideo ISL10 toolbarshorts রোববার