shono
Advertisement

আঁধারে আলো! অন্ধকারে পড়াশোনা করেই মাধ্যমিকে দারুণ ফলাফল মালবাজারের ছাত্রীর

৮৯ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়ে আলো ফুটিয়েছে পম্পা বণিক।
Posted: 07:29 PM May 20, 2023Updated: 07:35 PM May 20, 2023

অরূপ বসাক, মালবাজার: উত্তরবঙ্গের পরিবেশ পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে যে কীভাবে শিক্ষাক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়া যায়, সেটাই বোধহয় দেখাল মালের ছাত্রী। মাল (Mal) শহরের ঠিক পাশেই ক্ষুদিরাম পল্লি। এখনও পথবাতি নেই। সন্ধ্যা নামলেই ঝুপ করে নেমে আসে আঁধার। শনিবার কিন্তু অন্য চিত্র। এই পল্লিতেই যেন জ্বলে উঠল আলো। বণিক পরিবারের মেয়ে পম্পা বণিক। এবারের মাধ্যমিকে (Madhyamik Exam 2023) ৬২৯ পেয়ে তাক লাগিয়েছে সে। মাল শহরের সুবাসিনী উচ্চতর বালিকা বিদ্যালয়ে প্রথম স্থানাধিকারী পম্পা। মহকুমার সম্ভাব্য স্থানাধিকারীদের তালিকাতেও স্থান পেয়েছে সে। আর্থিক অস্বচ্ছলতার সাথে সংগ্রাম করা পরিবারের কন্যা নতুন দিগন্ত রচনা করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

Advertisement

পম্পার বাবা সামান্য খুচরো লটারি বিক্রেতা। নিরন্তর জীবন সংগ্রাম চালায় গোটা পরিবার। সেখানে পম্পাই এখন আশার আলো। মাল শহরের সুভাষিণী উচ্চতর বালিকা বিদ্যালয় থেকে ৬২৯ নম্বর পেয়ে চমক দেখিয়েছে পম্পা বণিক। মাল শহরের মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল এবার মোটেই আশানুরূপ নয়। সেখানে সুভাষিণী উচ্চতর বালিকা বিদ্যালয়ের পম্পা এবং আরও কয়েকজন পরীক্ষার্থীদের ফলাফল কিন্তু আশার আলো সঞ্চার করছে।

[আরও পড়ুন: ‘কী দিয়েছেন আমায়?’, এসএসকেএম কাণ্ডে পদত্যাগের হুঁশিয়ারি বিধায়ক মদন মিত্রর]

পম্পার বিভিন্ন বিষয়ের প্রাপ্ত নম্বর বাংলা – ৯০, ইংরেজি – ৯২, ভৌত বিজ্ঞান – ৯৮, জীবন বিজ্ঞান – ৯৬, অঙ্ক- ৭৭, ইতিহাস-৮০, ভূগোল-৯৬। পড়াশুনোর পাশাপাশি পম্পা ছবিও আঁকে। মাধ্যমিকের আগে টেস্ট পরীক্ষায় ৬২৮ পেয়েছিল পম্পা। সেবারই বিদ্যালয়ে প্রথম স্থান পায়। তখনই মনে জেদ হয়েছিল আরও ভাল কিছু করে দেখানোর। মাধ্যমিকেও সেই ধারা অব্যাহত রাখল সে। পম্পা জানাল, একাদশে বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে পড়তে চাই। ভবিষ্যতে ডাক্তার হতে চাই। সামনে আরও অনেক পথচলা বাকি। আর্থিক অসচ্ছলতার জন্য চলার পথ সহজ নয়। তা ভালই জানা। তবুও পম্পা লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে চায়।

[আরও পড়ুন: ২ হাজারের নোট তুলে নিলেও এই ছয় কারণে সমস্যা হবে না আমজনতার]

পম্পার বাবা জয়শংকর বণিক মাল শহরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে রাস্তার ধারে খুচরো লটারি বিক্রেতা। জয়শংকরবাবু বলেন, ”আমরা যতটা পারি মেয়েকে উৎসাহ জুগিয়েছি। আর্থিক সমস্যা রয়েছে। দেখা যাক কতটা ও এগোতে পারে।” মা জয়ন্তী বণিক গৃহবধূ। মেয়েকে সবসময় উৎসাহ দিয়েছেন। জয়ন্তীদেবীর কথায়, ”হয়তো আরও একটু পরিকাঠামো পেলে ও আরেকটু এগোতে পারত। পম্পার কাছে বর্তমানে অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল সেট পর্যন্ত নেই। তাই অনলাইনে (Online) পড়াশোনা সেরকম করতেও পারেনি। পম্পার বড় দাদা দীপ লটারি বিক্রেতা, পাশাপাশি সিসিটিভির কাজ করছে। আরেক দাদা জ্যোতির্ময় বণিক গাড়ি চালানো শিখছে। পম্পার দারুণ ফলের খবর শুনে মাল পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুরজিৎ দেবনাথ দুপুরেই তাঁর বাড়িতে গিয়ে তাকে সংবর্ধিত করে আসেন। এছাড়াও আত্মীয়,পরিজন-সহ সকলেই তাকে উৎসাহ জোগাচ্ছে। গোটা পাড়ায় এখন যেন সাড়া পড়ে গিয়েছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup রাজধানী এক্সপ্রেস toolbarvideo ISL10 toolbarshorts রোববার