shono
Advertisement

Breaking News

ঘাড়ে ঋণের বোঝা, শোধ করতে না পেরে মেয়ের সামনেই আত্মঘাতী দম্পতি

স্ত্রীর চাহিদা মেটাতেই চড়া সুদে ঋণ নিয়েছিল যুবক। The post ঘাড়ে ঋণের বোঝা, শোধ করতে না পেরে মেয়ের সামনেই আত্মঘাতী দম্পতি appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 05:05 PM Sep 29, 2018Updated: 06:02 PM Sep 29, 2018

সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর:  স্ত্রীর চাহিদাপূরণ করতে গিয়ে ঋণ নিয়ে শোধ করতে না পেরে আত্মঘাতী দম্পতি৷ নয় বছরের মেয়ের সামনেই গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা স্বামী-স্ত্রীর৷ মর্মান্তিক এই ঘটনা দুর্গাপুরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের নতুনপল্লিতে শোকের ছায়া এলাকায়৷ পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্যে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠিয়েছে৷

Advertisement

[পালিতা মায়ের আশ্রয়ে ধর্ষণ করে খুন নাবালিকাকে! চাঞ্চল্য কালনায়]

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেনাচিতির নতুনপল্লির বাসিন্দা অসীম পাল (৩০) পেশায় ভাড়ার গাড়ির চালক, বছর তিনেক আগে স্থানীয় কয়েক জনের কাছ থেকে চড়া সুদে বাড়ি তৈরির জন্যে টাকা ঋণ নেন৷ এইভাবে প্রায় ছয় থেকে সাত লক্ষ টাকা ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন অসীমবাবু৷ অসীমবাবুর নতুন ঘরের পাশেই তার দুই ভাই ও মেজ ভাইয়ের স্ত্রী ও বাবা সন্তোষ পাল থাকেন৷ চড়া সুদের কারণে ঋণের পরিমাণ চক্রবৃদ্ধি হারে বৃদ্ধি পেতে থাকে৷ বাধ্য হয়ে একজনের কাছ থেকে ধার নিয়ে অন্যকে সেই ধার শোধ করতে গিয়ে ধারের পরিমাণ আরও বাড়তে থাকে৷ লাগাতার পাওনাদারদের তাগাদায় ভেঙে পড়েন তিনি৷ ধার শোধ করার জন্যে পাওনাদাররা নানাভাবে চাপও দিতে থাকে অসীম ও তাঁর স্ত্রী সুপ্রভা পালকে(২৭)৷ লাগাতার চাপের কাছে নতিস্বীকার করে শুক্রবার রাতে রান্না ঘরের সিলিংয়ে একসঙ্গে ঝুলে পড়েন অসীম ও সুপ্রভা৷

[চাঁদার নামে তোলাবাজি, ট্রাকচালককে মারধরের প্রতিবাদে শিল্পতালুকে পথ অবরোধ]

শোওয়ার ঘরে তখন ছয় বছরের মেয়ে বুবু গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন৷ শনিবার সকালে অসীম ও সুপ্রভাকে বের হতে না দেখে অসীমের ভাই ভোলা পাল ঘরের জানলা দিয়ে দেখেন, দাদা ও বৌদির ঝুলন্ত মৃতদেহ৷ তখনও গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী বুবু৷ অসীমের বাবা সন্তোষ পাল বলেন,“গতকালই আমার বড় ছেলে অসীম আমার কাছে ধার শোধ করার জন্যে এক লক্ষ টাকা চেয়েছিল৷ এক সঙ্গে এতো টাকা এখনই দেওয়া সম্ভব নয় বলেই ওকে জানিয়েছিলাম৷ কিন্তু, ভাবিনি এতো চাপের মধ্যে আছে ও৷ জানলে কিছু একটা করতাম৷” মৃত অসীমের ছোট ভাই ভোলা পাল বলেন,“দাদা, বৌদির কথাতেই চড়া সুদে টাকা ধার করেছিল বাড়ি তৈরির জন্যে৷ ধার বাড়তে থাকায় সেই ধার অল্প-অল্প করে মেটানোর চেষ্টা করতো৷ এক জনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে অন্যকে ধার মেটাতো৷ ফলে পাওনাদারদের সংখ্যা বাড়ছিল৷ দেনা শোধ করতে না পেরেই দু’জনেই আত্মহত্যা করেছে বলেই মনে হচ্ছে৷”

[প্রসব করছে সাপ! আলিপুরদুয়ারে উদ্ধার বিরল প্রজাতির ‘গ্রিন পিট ভাইপার’]

প্রতিবেশীরাও জানান, স্ত্রীর চাপেই একান্নবর্তী পরিবার ছেড়ে আলাদা বাড়ি তৈরি করতে বাধ্য হয়েছিল অসীম৷ কিন্তু, আর্থিক সংস্থান না থাকায় বিভিন্ন সুদের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চড়া হারে টাকা নিতে বাধ্য হয় অসীম৷ মাসে কুড়ি শতাংশ হারেও সে সুদ নিয়েছিল বলে পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে৷ ঋণের উপর ঋণ করে প্রায় সাত থেকে আট লক্ষ টাকার দেনা করে ফেলে অসীমের পরিবার৷ অসীমের ঘর থেকে একটি ডায়েরিও উদ্ধার করেছে পুলিশ৷ তাতে সুদ কারবারিদের নাম ও হিসাব রয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে৷ সেই ডায়েরিতে থাকা নামের তালিকা নিয়ে তদন্ত করা হবে বলে জানা গিয়েছে পুলিশসূত্রে৷ আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশের ডিসি-ভ্ল (পূর্ব) অভিষেক মোদি বলেন,“অস্বাভাবিক দেনার জন্যেই স্বামী ও স্ত্রীর আত্মহত্যা বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে৷ অস্বাভাবিক মৃত্যুর অভিযোগ দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ৷” শুধু ঋণের কারণেই মৃত্যু, নাকি এর পেছনে অন্য কোন কারণ, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ৷

The post ঘাড়ে ঋণের বোঝা, শোধ করতে না পেরে মেয়ের সামনেই আত্মঘাতী দম্পতি appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement