চঞ্চল প্রধান, হলদিয়া: সরকারি চাকরিও যে কতটা অনিশ্চিত, তার নমুনা দেখিয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশনের একাধিক নিয়োগ। যোগ্যতার পরীক্ষায় পাশ না করে স্রেফ টাকার অঙ্কে ‘যোগ্য’ হিসেবে অনেকেই স্কুলশিক্ষকের (School Teacher) চাকরিতে যোগ দিয়েছেন। রাজ্যের এই দুর্নীতির বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। আদালতের নির্দেশে ইতিমধ্যে চাকরি খুইয়েছেন ‘অযোগ্য’ শিক্ষকরা। এবার ‘অযোগ্য’দের তালিকায় নাম থাকায়, চাকরি হারানোর ভয়ে আত্মঘাতী (suicide) হলেন নন্দীগ্রামের এক শিক্ষিকা। অন্তত পরিবারের অভিযোগ এমনই। রবিবার রাতে নন্দীগ্রামের শরিপুর গ্রামে ভাড়া বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে শিক্ষিকার দেহ। শুরু হয়েছে তদন্ত।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত শিক্ষিকার নাম টুম্পারানি মণ্ডল। বছর তিরিশের টুম্পাদেবী ২০১৬ সালে নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় বসেছিলেন। ২০১৯ সালে তিনি চাকরি পান। নন্দীগ্রাম (Nandigram) ১ নং ব্লকের দেবীপুর মিলন বিদ্যাপীঠের বাংলার শিক্ষিকা হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। টুম্পাদেবীর বাড়ি চণ্ডীপুরের ডিহিকাশিমপুর গ্রামে। কিন্তু তিনি স্বামীর সঙ্গে শরিপুর গ্রামের ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। রবিবার সন্ধেবেলা বাড়ির বাইরে ছিলেন স্বামী। সেই সুযোগে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা (Commits Suicide) করেন টুম্পাদেবী।
[আরও পড়ুন: আর জি কর হাসপাতালে রোগীর ‘আত্মহত্যা’, শৌচাগার থেকে উদ্ধার ঝুলন্ত দেহ]
রাতে বাড়ি ফিরে তাঁর স্বামী ঘরে স্ত্রীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করেন। প্রাথমিক ধাক্কা সামলে তিনি খবর দেন পুলিশে। নিয়ে যান নিকটবর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। কিন্তু চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। সম্প্রতি হাই কোর্টের নির্দেশে নবম-দশম শ্রেণিতেন নিযুক্ত ‘অযোগ্য’ শিক্ষকদের তালিকা প্রকাশ করেছে কমিশন (SSC)। ১৮৩ জনের সেই তালিকা এই মুহূর্তে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল (Viral)। দেখা গিয়েছে, সেখানে ৫৮ নম্বরে রয়েছে টুম্পারানি মণ্ডলের নাম। পরিবারের অনুমান, চাকরি হারানো এবং অপমানের ভয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: জলপাইগুড়িতে টাকার পাহাড়, বিহারগামী গাড়ির টায়ার থেকে উদ্ধার নগদ ৯৪ লক্ষ টাকা]
এর আগে টাকা দেওয়ার পরও চাকরি না পেয়ে আত্মহত্যার মতো ঘটনার সাক্ষী থেকেছে রাজ্য। কিন্তু টুম্পাদেবীর বিষয়টি একটু আলাদা। হাই কোর্টের নির্দেশে ‘অযোগ্য’ প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশিত হওয়ায় তাঁদের চাকরিতে কোপ পড়বে, এই আশঙ্কা থেকেই তাঁর আত্মহত্যা বলে মনে করা হচ্ছে।