shono
Advertisement

অনুমতি ছাড়াই স্কুলের মাঠে জাঁকজমক করে বউভাত! শিক্ষকের কাণ্ডে হতবাক কর্তৃপক্ষ

চাপে পড়ে ভুল স্বীকার শিক্ষক তথা পঞ্চায়েত সদস্যের। The post অনুমতি ছাড়াই স্কুলের মাঠে জাঁকজমক করে বউভাত! শিক্ষকের কাণ্ডে হতবাক কর্তৃপক্ষ appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 03:10 PM Mar 05, 2020Updated: 03:10 PM Mar 05, 2020

বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: তিনি নিজে একজন গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য। আবার তিনি একটি স্কুলের একজন শিক্ষকও। অথচ সেই তিনিই স্কুল কর্তৃপক্ষের লিখিত কোনও অনুমতি না নিয়েই বিশালাকায় মণ্ডপ বানিয়ে গ্রামের একটি হাই স্কুলের মাঠে নিজের বউভাতের প্রীতিভোজের ঢালাও আয়োজন করেছেন। স্কুল চলাকালীন কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়ে স্কুলের মাঠে নিজের বিয়ের বউভাতের প্রীতিভোজের ঢালাও আয়োজন করতে এতটুকু দ্বিধা-সংকোচ পর্যন্ত হয়নি ওই স্কুল শিক্ষক তথা স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যের।

Advertisement

যদিও বিষয়টি কতটা উচিত কাজ হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে অবশেষে মলিনকান্তি রায় নামে ওই স্কুল শিক্ষক তথা পঞ্চায়েত সদস্য মেনে নেন, ‘হয়তো ভুলই হয়েছে আমার।’ এমনকি, স্কুলের মাঠ স্কুল চলাকালীন সময়ে ব্যবহার করার জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তিনি যে লিখিত অনুমতি নেননি, তাও মেনে নিতে বাধ্য হয়েছেন। এই ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার হাঁসখালি থানার গাজনা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত গ্যাঁড়াপোতা গ্রামে। ওই গ্রামেই রয়েছে গ্যাঁড়াপোতা হাই স্কুল। সেই স্কুলের মাঠে অস্থায়ীভাবে বিশাল মণ্ডপ তৈরি করে আয়োজন করা হয়েছে বউভাতের প্রীতিভোজের অনুষ্ঠানের। সেই বউভাতের অনুষ্ঠানটি হচ্ছে মলিনকান্তি রায় নামে একজন স্কুলশিক্ষকের।

তিনি কৃষ্ণনগরের একটি স্কুলের শিক্ষক। তাঁর বাড়ি গ্যাঁড়াপোতা গ্রামে। মলিনকান্তি রায় আবার গাজনা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল কংগ্রেসের একজন সদস্যও। সোমবার তাঁর বিয়ে হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার হেলেঞ্চা গ্রামের একটি মেয়ের সঙ্গে। বুধবার মলিনকান্তি রায়ের বিয়ের বউভাতের প্রীতিভোজের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় গ্যাঁড়াপোতা হাই স্কুলের মাঠে। অস্থায়ীভাবে বিশালাকায় মণ্ডপ বানিয়ে ওই গ্রামের প্রচুর মানুষকে রীতিমতো কার্ড ছাপিয়ে ওই প্রীতিভোজের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়। অভিযোগ, স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত কোনও অনুমতি না নিয়েই স্কুলের মাঠ দখল করে মণ্ডপ বানানো হয়েছে। বুধবার অনুষ্ঠানের জন্য স্কুল চলাকালীন সময়ে স্কুলের কাছেই বেজেছে মাইক।

শাসকদলের একজন পঞ্চায়েত সদস্য তথা স্কুলের একজন শিক্ষক হয়ে কী করে তিনি এই কাজটি করলেন, স্বভাবতই তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। যদিও সেই বিষয়ে মলিন কান্তি রায়ের কাছে জানতে চাওয়া হলে, তিনি যে নিজেই বিয়ের পাত্র, তা অবশ্য প্রথমে প্রকাশ করেননি। পরে অবশ্য বলেন, ‘আসলে বাড়িতে জায়গা কম রয়েছে। তাই, গ্রামবাসীদের কথা শুনে আমি এই স্কুলের মাঠে বিয়ের প্রীতিভোজের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি। আমি গ্রামবাসীদের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছি।’ যদিও স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিখিত অনুমতি না নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে পরে তিনি বলেন, ‘মৌখিকভাবে কথা হয়েছে, লিখিত অনুমতি নেওয়া হয়নি।’

সেটা কতটা ঠিক, সেই বিষয়ে অবশ্য পরে বলেন, ‘কারও কাছে ঠিক মনে হতে পারে, কারও কাছে ভুল মনে হতে পারে। হয়তো ভুলই হয়েছে। তবে রাস্তায় মাইক বাজলেও স্কুলের কোনও অসুবিধা হয়নি।’ অবশ্য স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিখিত অনুমতি যে নেওয়া হয়নি, তা স্পষ্টই জানিয়েছেন ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিকাশ বিশ্বাস। গাজনা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান চঞ্চল বিশ্বাস অবশ্য বলেছেন, ‘অনুষ্ঠান করার জন্য স্কুলের পরিচালন সমিতিকে জানানো হয়েছিল। তাদের মৌখিক অনুমতিতেই ওই স্কুলের মাঠে অনুষ্ঠান করতে দেওয়া হয়েছে। গ্রামবাসীদের কথা ভেবে গ্রামের সমস্ত অনুষ্ঠানই ওই স্কুলের মাঠে করা হয়।’ অবশ্য চঞ্চলবাবুও মেনে নেন, স্কুলের সরকারি জায়গায় বিনা অনুমতিতে ব্যক্তিগত কারও কোন অনুষ্ঠান করা ঠিক নয়।

The post অনুমতি ছাড়াই স্কুলের মাঠে জাঁকজমক করে বউভাত! শিক্ষকের কাণ্ডে হতবাক কর্তৃপক্ষ appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement