সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তিন জেলার একাধিক জঙ্গল ঘুরে অবশেষে বাঘবন্দি। চতুর্থ ঘুমপাড়ানি গুলিতে কাবু বাঘিনী জিনাত। রবিবার বিকেল ৩টে ৫৮ মিনিট নাগাদ বাঁকুড়ার গোঁসাইডিহিতে বাঘিনীকে লক্ষ্য করে ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়া হয়। ওই গুলিটি তার শরীরে লাগে। তাতেই কাবু জিনাত।
ঘুমপাড়ানি গুলিতে কাবু জিনাত
গত ১৫ নভেম্বর, মহারাষ্ট্রের তাডোবা ও আন্ধেরি ব্যাঘ্রপ্রকল্প থেকে সিমলিপালে আনা হয় জিনাতকে। গত ২৮ নভেম্বর ঘরছাড়া হয় সে। ঝাড়খণ্ডে জামশেদপুর বনবিভাগ হয়ে চাকুলিয়ার জঙ্গলে আসে। বেলপাহাড়ির কাঁকরাঝোড়ে দিনদুয়েক ছিল বাঘিনী। তারপর ময়ূরঝর্ণা হয়ে পুরুলিয়ায় রাইকা পাহাড়ে যায়। খাবার, জল ও পাহাড় লাগোয়া জঙ্গলে বাসস্থান অনুকূল থাকায় সেখানেই দিব্যি ছিল সে। তবে হাতি তাড়ানোর কৌশল অবলম্বন করেন বনদপ্তরের কর্মীরা। হুলাপার্টি, মশাল, পটকায় বিরক্ত হয়ে লোকালয়ে চলে যায় জিনাত। মানবাজারের ডাংরডির জঙ্গলে ছিল সে।
তবে শুক্রবার রাতে জালের নিচ দিয়ে পালায় জিনাত। তারপর থেকে বর্তমানে মুকুটমণিপুরের কংসাবতী জলাধারের কোল ঘেঁষা রানিবাঁধ ব্লকের বন পুকুরিয়া ডিয়ার পার্কের কাছে গোঁসাইডিহিতে চলে যায়। বাঘিনীর ডেরা বদলের খবর পাওয়ামাত্রই এলাকায় পৌঁছন রাজ্যের মুখ্য বনপাল (দক্ষিণ পশ্চিম চক্র ) বিদ্যুৎ সরকার, বাঁকুড়ার ডিএফও দক্ষিণ প্রদীপ বাউড়ি, এডিএফও মধুরমিলন ঘোষ-সহ বনদপ্তরের আধিকারিক ও কর্মীরা। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্পের আধিকারিক, সুন্দরবন থেকে আসা শুটারের দল।
জিনাতকে বাগে আনতে বাঁকুড়ায় বনকর্মীরা
শনিবার বিকেলে গোঁসাইডিহিতে প্রথমবার বনদপ্তরের কর্মীদের ক্যামেরাবন্দি হয় জিনাত। বাঘিনীকে লক্ষ্য করে ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়া হয়। তবে সে সময় গুলি লক্ষ্যভেদ হয়।
বাঁকুড়ার গোঁসাইডিহিতে প্রথম ক্যামেরাবন্দি জিনাত
এরপর দ্বিস্তরীয় জাল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয় গোটা এলাকা। নেটের বাইরে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।
বাঘিনী বাগে আনতে জাল দিয়ে ঘেরা হয় গোটা এলাকা
১০ মিটার অন্তর অন্তর নেট ফেনসিং বরাবর একজন করে কর্মীকে রাখা হয়। রাতে আরও দুটি ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়া হয়। তবে বারবার বনকর্মীদের চোখে ধুলো দেয় জিনাত। রবিবার বিকেল ৩টে ৫৮ মিনিট নাগাদ আবারও জিনাতকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। তাতেই কাজ হয়।
অচৈতন্য জিনাতকে গাড়িতে তোলার মুহূর্ত
ঘুমপাড়ানি গুলিতে অচেতন হওয়ার পর জাল দিয়ে বাঘিনীকে ঘিরে ফেলা হয়। এরপর বনদপ্তরের গাড়িতে তাকে পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠানোর বন্দোবস্ত করা হয়। বনদপ্তরের দাবি অনুযায়ী, সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছে জিনাত।
বনদপ্তরের গাড়িতে পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠানো হয় জিনাতকে