সুরজিত দেব, ডায়মন্ড হারবার: নাট্যকার শিশিরকুমার ভাদুড়ি বলেছিলেন, “আমাদের জাতীয় নাট্য বলিয়া যদি কিছু থাকে, তাহা যাত্রা।” একটা সময় বাঙালির মনে প্রাণে ছিল সেই যাত্রা। তবে কালের নিয়মে আজ তা ডুবন্ত প্রায়। অনেকের ধারণা, প্রতিনিয়তই অতিআধুনিকতার মোড়কে নিজেদের মুড়ে ফেলার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে নতুন প্রজন্ম। আর তার ফলে হারাতে বসেছে প্রাচীন সংস্কৃতি। তাদের কথায় যাত্রা শিল্পের এই দুর্দিনের জন্যও দায়ী অত্যাধুনিকতা। এবার সেই হারানো মর্যাদা পুনরুদ্ধারে গ্রামীণ যাত্রাপালায় কোমর বেঁধে নেমে পড়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থক থেকে শুরু করে নেতা এমনকি বিধায়ক সকলেই। গ্রামের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে নিজেরাই দল গড়ে ফেলেছেন তাঁরা। আয়োজন করা হচ্ছে যাত্রা উৎসবের।
[ গরুচোর সন্দেহে ফের গণপিটুনির শিকার এক ব্যক্তি ]
দক্ষিণ ২৪ পরগণার ডায়মন্ড হারবার, কুলপি, ফলতা, মগরাহাট, নেপালগঞ্জ, বজবজ, মহেশতলা, সাতগাছিয়া ও কাকদ্বীপে এলাকায় প্রায় পঁয়ষট্টিটি যাত্রাদল রয়েছে। রায়চকে রয়েছে একটি যাত্রাদল অষ্টমী নাট্যসংস্থা। সংস্থার সভাপতি অরুণময় গায়েন। তিনি ডায়মন্ড হাবরার ২ নম্বর ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি। তাঁর কথায় সামাজিক পালাগানের মধ্যে দিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করাই তাঁর লক্ষ্য। তবে আর্থিক সমস্যার কারণে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাদের বাধার মুখে পড়তে হয়। সেই সমস্যা সমাধানে এগিয়ে এসছেন অষ্টমী নাট্যসংস্থার সভাপতি নিজেই। অষ্টমী নাট্যসংস্থার তরফে প্রতিবছর জেলার অপেশাদার শিল্পী পরিচালক ও সুরকারদের সম্বর্ধনা দেওয়া হয়। সেখানে ভূরিভোজের আয়োজন করা হয়। শুধু অরুণময় গায়েনই নন, অপেশাদার যাত্রাশিল্পীদের উৎসাহ দিতে প্রতিবছর ডিসেম্বরে একটি যাত্রা উৎসবের আয়োজন করেন ফলতার বিধায়ক তমোনাশ ঘোষ। তারা চাইছেন বেশি সংখ্যক মানুষ যাত্রায় যোগ দিক।
[ বিস্ফোরণের তীব্র শব্দে কাঁপল লাভপুর, বাজি কারখানায় বিধ্বংসী আগুন ]
তবে বর্তমানে সরকারি সহায়তাও মিলেছে যাত্রা দলগুলির। যাত্রার উন্নয়নের জন্য রাজ্য সরকারের তরফে জেলাভিত্তিক কর্মশালার আয়োজন করা হচ্ছে। নিবন্ধভুক্ত দলগুলির ক্ষেত্রে প্রথম দফায় ২ লক্ষ টাকা ও পরে আরও ১ লক্ষ টাকা অনুদানও দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, সরকারের তরফে ষাটোর্ধ্ব শিল্পীদের জন্য পেনশনের ব্যবস্থাও করেছে রাজ্য সরকার।
The post ধুঁকছে যাত্রা শিল্প, পুনরুদ্ধারে নিজেরাই দল গড়লেন তৃণমূল নেতা-কর্মীরা appeared first on Sangbad Pratidin.
