রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: কাঁথি সমবায় নির্বাচনে সবুজ ঝড়। শুভেন্দুর গড়ে রীতিমতো ধরাশায়ী বিজেপি। কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তায় ভোটগ্রহণ সত্ত্বেও ১০টি আসনও জিততে পারলেন না পদ্ম সমর্থিত প্রার্থীরা। ১০৮টি আসনের মধ্যে ১০১টিতেই জয়ী তৃণমূল সমর্থিত প্রার্থীরা। ফলাফল স্পষ্ট হতেই অকাল হোলিতে মাতলেন ঘাসফুল শিবিরের নেতা-কর্মীরা।
এতদিন কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের ক্ষমতায় ছিলেন শুভেন্দু অনুগামীরাই। তাঁদের হাত থেকে এবার ক্ষমতা কেড়ে নেওয়াই লক্ষ্য ছিল তৃণমূলের। সেভাবেই সাজানো হয়েছিল ঘুঁটি। গত মঙ্গলবার কোলাঘাটে পূর্ব মেদিনীপুরের তৃণমূল কংগ্রেসের দুই সাংগঠনিক জেলার নেতাদের নিয়ে বৈঠকও হয়। সেখানে একাধিক রণকৌশল ঠিক করা হয়। রবিবার সকালে নির্ধারিত সময়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তায় শুরু হয় ভোটগ্রহণ। বিক্ষিপ্ত অশান্তির ঘটনাও প্রকাশ্যে আসে। কিন্তু ভোটের ফলাফল প্রকাশ্যে আসতেই দেখা গেল, শুভেন্দুর গড়েই কার্যত নিশ্চিহ্ন পদ্মশিবির। ১০৮টি আসনের মধ্যে মাত্র ৭টি আসনে জিতেছেন বিজেপি সমর্থিত প্রার্থীরা। বাকি ১০১টি আসনেই জিতেছেন তৃণমূল সমর্থিত প্রার্থীরা। অর্থাৎ কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তায় ভোট হওয়া সত্ত্বেও কাঁথি সমবায় সমিতি নিজের দখলে রাখতে পারলেন না শুভেন্দু। এই জয় দল অর্থাৎ তৃণমূলে অখিল গিরির গুরুত্ব আরও বাড়াবে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহল মহল।
উল্লেখ্য, পূর্ব ভারতের অন্যতম বড় সমবায় ব্যাঙ্ক হল কাঁথি। এই ব্যাঙ্কের পরিচালন কমিটি হাতে রাখা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে টানাপোড়েন চলছে। মাঝে তিনবছর নির্বাচন হয়নি। ব্যাঙ্কে পরিচালন কমিটি গঠনের জন্য ভোটের দাবিতে পরবর্তীতে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা হয়। উচ্চ আদালত ভোট করার জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়। এর পরই শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ এগরার প্রাক্তন পুরপ্রধান শংকর বেরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। অশান্তির আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। ওয়াকিবহল মহলের দাবি, কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্ক হাতছাড়া হাওয়ার আশঙ্কাতেই সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। পরবর্তীতে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতিতে ভোট করানোর নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত। সেই মতোই ১৫ ডিসেম্বর, রবিবার কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কে ১০৮টি আসনের প্রতিনিধি নির্বাচনে হল ভোটাভুটি। কিন্তু কৌশল করেও ওই সমবায় সমিতি দখলে রাখতে পারল বা বিজেপি। শুভেন্দুর গড়ে রীতিমতো সবুজ ঝড়। উল্লেখ্য, কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের নির্বাচনে মোট আসন সংখ্যা ১০৮টি। যেখানে তৃণমূল, বিজেপি ও অন্য রাজনৈতিক দলের সমর্থনে মোট ৩৮১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মোট ভোটার ৮০ হাজার ৪৮০ জন।