রমণী বিশ্বাস, তেহট্ট: নদিয়ার তেহট্টের বেতাই ডঃ বি আর আম্বেদকর কলেজের অধ্যক্ষ পীযূষকান্তি দেবের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ ও অসংলগ্ন কার্যকলাপের অভিযোগ তুলেছে কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ও বর্তমান গভর্নিং বডির সভাপতি তথা বিধায়ক তাপসকুমার সাহা। তাঁদের দাবি, মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও অধ্যক্ষ পদে বহাল রয়েছেন পীযূষকান্তি দেব। এদিকে তাঁকে ওই পদে বহাল রাখতে সরব হয়েছে বেতাই নাগরিক সমাজ। তাঁদের পালটা দাবি, অধ্যক্ষ কলেজের দুর্নীতি ও অবৈধ কার্যকলাপে বাধা দেওয়ার কারণেই তাঁকে সরানোর চক্রান্ত চলছে। পীযূষবাবুকে অধ্যক্ষ পদে বহাল রাখা না হলে, নাগরিক সমাজ বড়সড় আন্দোলনে নামারও হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, বেতাইয়ের এই কলেজে ২০০৩ সাল থেকে কোনও স্থায়ী অধ্যক্ষ ছিল না। দীর্ঘদিন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষরা কলেজ চালাচ্ছিলেন। বছরখানেক আগে স্থায়ী অধ্যক্ষ হয়ে আসেন এই কলেজেরই অধ্যাপক পীযূষকান্তি দেব। গত ১৩ নভেম্বর তাঁর মেয়াদ শেষ হয়েছে। তবে তাঁকে পুনর্বহাল করা হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত হয়নি এখনও।
এর মধ্যেই তাঁকে ফের ওই পদে বহাল না করার জন্য বিক্ষোভ দেখায় ছাত্র পরিষদ। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের তেহট্ট -১ সভাপতি অচিন্ত্য মণ্ডলের দাবি, "এই প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে একাধিক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। কলেজের পঠন-পাঠনও সম্পূর্ণ বন্ধ। প্রিন্সিপাল কলেজ পরিচালনা করতে অক্ষম, তাই দ্রুত তাঁকে সরিয়ে নতুন কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হোক।"
বিক্ষোভ। ছবি: রমণী বিশ্বাস
অপরদিকে,পীযূষবাবুকে অধ্যক্ষ পদে বহাল রাখার দাবিতে পালটা সরব সিপিএম, বিজেপি ও তৃণমূলের একাংশ নিয়ে গঠিত বেতাই নাগরিক সমাজ। তাদের দাবি, কলেজকে দুর্নীতিমুক্ত করতে এই প্রিন্সিপালকেই বহাল রাখতে হবে। এদিন নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে কলেজে যান সুলগ্ন ভট্টাচার্য, শক্তিসাধন বিশ্বাস, দেবাশিস বিশ্বাসরা। তাঁদের দাবি, দীর্ঘদিন পর এই কলেজ স্থায়ী প্রিন্সিপাল পেয়েছে, কিন্ত দুর্নীতি এবং অবৈধ কার্যকলাপে বাধা দেওয়ার কারণে তাঁকে সরানোর চক্রান্ত চলছে।
কলেজের গভর্নিং কমিটির সভাপতি তথা বিধায়ক তাপসকুমার সাহা জানান, "বর্তমান প্রিন্সিপাল এখনও পর্যন্ত এই কলেজে থাকার জন্য কোনও আবেদন করেননি। তিনি বর্তমানে ছুটিতে থাকবেন। সেই সময়ে অন্য কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। তিনি যদি অন্য কোনও কলেজে প্রিন্সিপাল হিসেবে যেতে চান তাহলে যেতে পারেন। অন্যথায় এই কলেজেরই অধ্যাপক হিসেবে থাকবেন। আমরা নতুন প্রিন্সিপালের জন্য আবেদন জানাব।" যদিও এই বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি পীযূষকান্তি দেব।