বাবুল হক, মালদহ: মামার বাড়ি বেড়াতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হল দুই নাবালিকা! সম্পর্কে মাসতুতো বোন ওই দুই নাবালিকা। মামার বাড়ি থেকে অপহরণ করে একটি আমবাগানে নিয়ে গিয়ে তিনজন যুবক রাতভর তাদের ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। অচৈতন্য অবস্থায় নির্যাতিতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়। মালদহের কালিয়াচক থানা এলাকার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া গ্রামের ঘটনা। অভিযোগ পেয়েই দ্রুত তদন্ত শুরু করে মালদহ জেলা পুলিশ। চব্বিশ ঘন্টার মধ্যেই ৩ অভিযুক্তকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।
মালদহ জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতরা হল সামেদ শেখ (১৯), শাহিন শেখ ( ২০) এবং মাবুদ শেখ ( ১৯)। বাড়ি শাহবাজপুর এলাকায়। দুই নির্যাতিতা বর্তমানে চিকিৎসাধীন। ধৃত তিন দুষ্কৃতীকে রবিবার মালদহ আদালতে পাঠানো হয়। তিনজনেরই সাতদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ধৃতদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের পাশাপাশি পকসো আইনে মামলা রজু করেছে পুলিশ। দুই নাবালিকাকে গণধর্ষণের ঘটনায় আরও কেউ জড়িত থাকতে পারে বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান পুলিশের। কালিয়াচক থানার পুলিশের হেফাজতে ধৃতদের দফায় দফায় জেরা চলছে।
[আরও পড়ুন: ‘আজ প্রায় বিজয়োৎসব হয়ে গেল’, বাদুড়িয়ার সভায় কেন একথা বললেন অভিষেক?]
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, তিনদিন আগে মামার বাড়ি বেড়াতে গিয়েছিল ওই দুই নাবালিকা। তাদের বয়স ১৫ ও ১৬ বছর। সম্পর্কে তারা একে অপরের মাসতুতো বোন। বৃহস্পতিবার মামার বাড়ির গ্রামের পাশে একটি মেলায় ঘুরতে গিয়েছিল। সেই মেলায় ওই তিন যুবকের সঙ্গে দুই বোনের পরিচয় হয়। মোবাইল নম্বর বিনিময় হয়। আর এই মোবাইল নম্বর আদানপ্রদানই যেন কাল!ওই যুবকরা মোবাইলে কথা বলে দুই নাবালিকার মামার বাড়ির ঠিকানা জেনে নেয়। শুক্রবার রাত ৯টা নাগাদ ওই তিন অভিযুক্ত দুই নাবালিকার মামার বাড়িতে পৌঁছয়। অভিযোগ, সেখান থেকেই দুই নাবালিকাকে অপহরণ করে নিয়ে যায় অভিযুক্তরা। সেই সময় নাবালিকাদের মামা ও অন্যরা কেউ বাড়িতে ছিলেন না। শুধু বয়স্ক দিদিমা ছিলেন। অপহরণের ঘটনা দিদিমা বুঝতে পারেননি।
অভিযোগ, নাবালিকা ওই দুই বোনকে প্রাণে মারার ভয় দেখিয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের পাশের নির্জন একটি আমবাগানে নিয়ে যায় অভিযুক্তরা। সেখানেই তাদেরকে গণধর্ষণ করে ওই তিন অভিযুক্ত বলে অভিযোগ। নৃশংস ও নির্মম নির্যাতনের জেরে দুই নাবালিকা সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ে। অভিযুক্তরা তাদের সেখানেই ফেলে পালিয়ে যায়। ওই দুই নাবালিকার মামাবাড়ির লোকরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। অচেতন অবস্থায় তাদের পাওয়া যায়। সংজ্ঞা ফিরে পেয়ে তারা সমস্ত ঘটনা পরিবারের সদস্যদের জানায়। কালিয়াচক থানার পুলিশকে লিখিতভাবে জানানো হয়। অভিযুক্ত ওই যুবকদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে দুই নির্যাতিতার পরিবার। কালিয়াচক থানার আইসি সুমন রায়চৌধুরী জানান, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই পকসো আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে।