মনিরুল ইসলাম, উলুবেড়িয়া: স্কুলছুটের সংখ্যা কমাতে উদ্যোগী উলুবেড়িয়ার মেনকা স্মৃতি বিদ্যামন্দির নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। পাড়ায় পাড়ায় ঘুরছেন তাঁরা। কথা বলছেন অভিভাবকদের সঙ্গে। এতে কমবে স্কুলছুটের সংখ্যা। পাশাপাশি স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও থাকবে না, আশাবাদী শিক্ষকরা।
ডিসেম্বরের গোড়াতেই ছাত্রদের বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে। প্রতিদিন পরীক্ষার পর উলুবেড়িয়ার মেনকা স্মৃতি বিদ্যামন্দির নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কয়েকজন সহ-শিক্ষককে নিয়ে বেরিয়ে পড়ছেন এলাকায়। যাচ্ছেন অভিভাবকদের কাছে। উদ্দেশ্য, অভিভাবকদের বুঝিয়ে তাঁদের ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠানো। এর ফলে, একদিকে যেমন শিক্ষার আলো পৌঁছে যাবে ঘরে ঘরে, অন্যদিকে পড়ুয়াবিহীন হয়ে স্কুল বন্ধ হওয়ার আশঙ্কাও থাকবে না। তবে এই প্রথম নয়, বেশ কয়েক বছর ধরেই এই রুটিন মেনে চলছেন আমতার মেনকা স্মৃতি বিদ্যামন্দির নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। তার ফলও মিলেছে হাতেনাতে। কয়েক বছরের মধ্যেই স্কুলের ছাত্র সংখ্যা দেড়শো থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে পৌনে তিনশোয়। আশপাশের তিন-চারটি গ্রাম থেকেও ছাত্রছাত্রীরা সেখানে যাচ্ছে।
১৯৬০ সাল নাগাদ এই বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। পঠনপাঠন চলেছিল গুটিকয়েক পড়ুয়া নিয়ে। মূলত পিছিয়ে পড়া শ্রেণি-অধুষ্যিত এলাকার এই স্কুল। পরবর্তীতে ধীরে ধীরে ছাত্রসংখ্যা কমতে থাকে। করোনার আগে তা কমতে কমতে মোটামুটি দেড়শোর কাছে এসে দাঁড়ায়। কেন ছাত্রসংখ্যা কমছে তা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন শিক্ষকরা। তাঁরা ঠিক করেন, অভিভাবকদের কাছে যাবেন। তাঁদের বোঝাবেন সন্তানদের সরকারি স্কুলে পাঠানোর জন্য। যেমন ভাবনা তেমন কাজ। ডিসেম্বরে শুরু হয়েছে পরীক্ষা। তার পরই তাঁরা এই কাজে নেমে পড়েছেন। যেখানে অনগ্রসর সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস বেশি। সেখানে গিয়ে অভিভাবকদের ও স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক-শিক্ষিকারা। বোঝাচ্ছেন শিশুদের শিক্ষার গুরুত্ব ঠিক কতটা। বিদ্যালয়ের সহ-শিক্ষক শৌভিক চৌধুরী বলেন, ‘‘আমাদের বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ গোলাম ইয়াজদানি, সহ-শিক্ষক অভিজিৎ মাইতি স্যরেরা এ ব্যাপারে প্রচণ্ড উদ্যোগী। তাঁরাই মূলত গ্রামে গ্রামে যাচ্ছেন এবং তাঁদের সঙ্গে আমরা অন্যান্য শিক্ষকরা সহায়তা করছি।’’