shono
Advertisement
Bardhaman

অ্যাকাউন্টে কোটি টাকার লেনদেন, জানেনই না গ্রাহক! 'ভুতুড়ে' কাণ্ডে বর্ধমানে গ্রেপ্তার ১

এত টাকার উৎস কী? কে বা কারা রয়েছে এই বিপুল টাকা লেনদেনের পিছনে? তদন্তে শুরু করেছে পুলিশ।
Published By: Subhankar PatraPosted: 12:31 PM Sep 20, 2024Updated: 02:13 PM Sep 20, 2024

ধীমান রায়, কাটোয়া: গ্রামের ছাপোষা মানুষ। কেউ ছোটখাটো ব্যবসা করেন। কেউ বেকার। তাঁদের অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকার লেনদেন! অথচ জানেনই না তাঁরা। বর্ধমান শহরে একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের শাখায় ধরা পড়েছে এই 'ভুতুড়ে' আর্থিক লেনদেন।

Advertisement

এত টাকার উৎস কী? কে বা কারাই রয়েছে এই বিপুল টাকা লেনদেনের পিছনে? অভিযোগ পেয়ে তদন্তে ভাতার থানার পুলিশ। ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পেশ করা হলে বিচারক চার দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। ধৃতের নাম মিলন খাঁ। বাজার এলাকার বাসিন্দা। যদিও মিলনের দাবি, "আমি এই লেনদেন সম্পর্কে কিছুই জানি না। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে।" ঘটনায় নাম জড়িয়েছে ব্যাঙ্কের শাখা ম্যানেজারেরও।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধমান শহরের ছোট নীলপুর এলাকায় একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের শাখায় খাতা খোলেন ভাতারের বাসিন্দা অয়ন ঘোষ। মিলন কয়েকমাস আগে লাভজিৎ সিং নামে এক যুবকের সঙ্গে তাঁর পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। লাভজিৎ এবং মিলনের কথামতোই ওই ব্যাঙ্কের ম্যানেজারের সঙ্গে যোগাযোগ করে তিনি অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন। যদিও শেষ পর্যন্ত লোন পাননি। পরে অয়ন জানতে পারেন তাঁর অজান্তেই ওই অ্যাকাউন্টে প্রায় কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। এর পরই তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হন। অয়নের অভিযোগেই মিলনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এছাড়াও মাস পাঁচেক আগে ওই ব্যাঙ্কের শাখা ম্যানেজারের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছিলেন ভাতারের আলিনগর গ্রামের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী শেখ সাদ্দাম। তাঁর অভিযোগ ছিল, ওই ব্যাঙ্কের একজন এজেন্ট হিসাবে পরিচয় দিয়ে অয়ন ঘোষ তাঁর কাছে আসেন। সহজ শর্তে ঋণপ্রদানের প্রতিশ্রুতি দেন। এর পর তাঁর দোকানে পরিদর্শন করতে আসেন বর্ধমানের ওই বেসরকারি ব্যাঙ্কের শাখা ম্যানেজার। তাঁর কথামতো আধার কার্ড, প্যানকার্ড-সহ জরুরি কাগজপত্র জমা দেন একটি কারেন্ট অ্যাকাউন্ট চালু করার জন্য। কিন্তু অ্যাকাউন্ট চালু হয়েছে কিনা জানতেন না শেখ সাদ্দাম। লোনের জন্য টালবাহানা চলতে থাকে। সাদ্দাম জানতেন তাঁর অ্যাকাউন্ট চালু হয়নি।

কিন্তু গত এপ্রিল মাসে ব্যাঙ্ক থেকে একটি প্রিমিয়াম জমা দিতে বলে ফোন আসে। তখন সাদ্দাম ওই ব্যাঙ্কে গিয়ে জানতে পারেন তাঁর অ্যাকাউন্টে প্রায় ৮০ লক্ষ টাকা লেনদেন হয়েছে কয়েক দফায়। সাদ্দাম আদালতে অভিযোগ জানানোর পর সেই মামলার তদন্ত করতে পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দুটি ঘটনারই তদন্ত চলছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধমানের ওই বেসরকারি ব্যাঙ্কের শাখায় ভাতার এলাকার কয়েকজনের অ্যাকাউন্টে তিন কোটি টাকারও বেশি লেনদেন হয়েছে। কিন্তু যাঁদের অ্যাকাউন্ট তাঁরা জানতেই পারেননি।

পুলিশ জানতে পেরেছে, এই ‘ভুতুড়ে’ লেনদেনের নেপথ্যে রয়েছেন লাভজিৎ সিং। ধৃত মিলন খাঁয়ের সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে তাঁর। কিন্তু বর্তমানে বিদেশে রয়েছেন লাভজিৎ। পুলিশের আরও সন্দেহ, ওই ব্যাঙ্কের কেউ যুক্ত রয়েছে এই বিপুল অঙ্কের হিসাব বহির্ভূত আর্থিক লেনদেনের পিছনে। কার টাকা? কোথা থেকে এল? এই দেশেরই টাকা, নাকি বিদেশি কোনও যোগসূত্র রয়েছে তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। বর্ধমানের সি আই (এ) শৈলেন্দ্র উপাধ্যায় এই মামলার তদন্তভার নিয়েছেন। তিনি জানান, 'ধৃতকে জেরা করে রহস্যের উদঘাটন করা অনেকটাই সহজ হবে।'

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • গ্রামের ছাপোষা মানুষ। কেউ ছোটখাটো ব্যবসা করেন। কেউ বেকার। তাঁদের অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকার লেনদেন!
  • অথচ জানেনই না তাঁরা। বর্ধমান শহরে একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের শাখায় ধরা পড়েছে এই 'ভুতুড়ে' আর্থিক লেনদেন।
  • ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পেশ করা হলে বিচারক চার দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
Advertisement