সৌরভ মাজি, বর্ধমান: নীল-সাদা রংয়ের বন্দে ভারত এক্সপ্রেসকে (Vande Bharat Express) বরণ করে নিতে সকাল থেকেই প্রস্তুত ছিল বর্ধমান। ভিড়ে থিকথিক করছিল বর্ধমান স্টেশনের ১ নম্বর প্ল্যাটফর্ম। প্ল্যাটফর্মে ট্রেন ঢুকতেই হাত উঁচিয়ে কাকে যেন ডাকছেন এক মহিলা। ইঞ্জিনের জানালা খুলে প্রধান চালকও ভিড়ের মাঝে কাউকে যেন খুঁজছিলেন। কিছু পরেই চোখাচোখি হতেই হাসির ঝিলিক চালক অনিল কুমারের মুখে। স্বামীর জন্য গর্বিত স্ত্রী সুনীতা কুমারীর মুখেও খুশির জোয়ার।
শুক্রবার সকালে বর্ধমান স্টেশনের ভিড় কিন্তু তখন ব্যস্ত ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হতে। কেউ স্বস্তিক চিহ্ন এঁকে দিচ্ছেন। কেউ জাতীয় পতাকা নিয়ে তুলে দিয়েছেন রেলকর্মীদের হাতে। ফুলমিষ্টিও তুলে দিয়েছেন কেউ কেউ। কেউ আবার ব্যস্ত ছিলেন বন্দে ভারতের সঙ্গে সেলফি তুলতে। হাওড়া-নিউ জলপাইগুড়ি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেনের ঐতিহাসিক যাত্রাও যে আর একজনের জীবনের মাইলস্টোন। আর তাই সবার অলক্ষ্যে স্বামীর কর্মজীবনের অন্যতম সেরা কাজের দিনে সাক্ষী থেকেছেন সুনীতা।
[আরও পড়ুন: ‘নমামি গঙ্গে’য় নতুন পাঁচ প্রকল্পের ঘোষণা মোদির, আদিগঙ্গা পরিচ্ছন্ন করতে বরাদ্দ ৬০০ কোটি]
দম্পতির আদি বাড়ি বিহারে। বর্তমানে তাঁরা থাকেন বর্ধমান শহরের লোকো সারদাপল্লিতে। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৯০ সালে রেলে কর্মজীবন শুরু করেন অনিল। অ্যাসিস্ট্যান্ট ড্রাইভার হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। তারপর বিভিন্ন দূরপাল্লার ট্রেন চালিয়েছেন। রাজধানী, দুরন্ত এক্সপ্রেস চালানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে। সুনীতা জানান, বন্দে ভারত চালানোর জন্য তাঁর স্বামীকে নির্বাচিত করা হয়। চলতি মাসের গোড়ার দিকে উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদে নিয়ে গিয়ে বিশেষ প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়। ১৯ ডিসেম্বর প্রশিক্ষণ শেষ করে ফিরেছেন।
বৃহস্পতিবারই বর্ধমানের বাড়ি থেকে হাওড়া চলে গিয়েছিলেন অনিল। শুক্রবার স্টেশন চত্বরে দাঁড়িয়ে সুনীতা বলেন, “এমন একটি ঐতিহাসিক ট্রেন চালনার দায়িত্ব পেয়েছে আমার স্বামী খুব গর্বের বিষয়। তাই স্টেশনে এসে ট্রেনটি দেখার সুযোগ হাতছাড়া করিনি। প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের উদ্বোধন হলে আরও ভাল লাগত।”