অভ্রবরণ চট্টপাধ্যায়, শিলিগুড়ি: পাহাড়ের রাজনীতিতে ফের রংবদলের হাওয়া। এবার তৃণমূলের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করলেন পাহাড়ের প্রভাবশালী নেতা বিনয় তামাং (Binay Tamang)। পাহাড়জুড়ে জল্পনা ফের নিজের পুরনো দল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চায় ফিরে যেতে পারেন তিনি।
আসলে পাহাড়ের রাজনীতিতে অনীত থাপার (Anit Thapa) প্রভাব বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই কোণঠাসা হচ্ছিলেন বিনয়। এই মুহূর্তে জিটিএ-র দখল রয়েছে অনীতের দল বিজিপিএমের হাতে। বুধবার আস্থা ভোটের মাধ্যমে দার্জিলিং পুরসভাও অজয় এডওয়ার্ডের হামরো পার্টির হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে অনীতের দল। তাতে আবার অনীতের দলকে সমর্থন করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সূত্রের খবর, তৃণমূল কংগ্রেসের অনীতকে সমর্থন করার সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি বিনয়। সেকারণেই রাজ্যের শাসক দলের সঙ্গ ত্যাগের ঘোষণা করেছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: মনেপ্রাণে কংগ্রেসি, ভারত জোড়ো যাত্রার অংশ হতে সাইকেলে সাগর থেকে কার্শিয়াং যাচ্ছেন সত্তরোর্ধ্ব কর্মী]
বুধবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিনয় তামাং জানিয়েছেন,”আমি তৃণমূলের (TMC) সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলাম। তৃণমূল চাইলে আমার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক পদক্ষেপ করতে পারে। এই মুহূর্তে দার্জিলিংয়ে (Darjeeling) গণতন্ত্র ভয়ংকর বিপদে। পাহাড় এবং দার্জিলিংয়ের সমতলের বেশ কিছু নেতা সীমান্তপারের বিভেদকামী শক্তির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। যা ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব এবং দেশের অখণ্ডতার জন্য বিপজ্জনক।” তামাংয়ের বক্তব্য, পাহাড়ে গণতন্ত্র ফেরাতে এবং পাহাড়ের মানুষকে নাগরিক অধিকার পাইয়ে দিতে আমি সব করতে পারি। আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অনুরোধ করব, পাহাড়ের এই পাহাড়প্রমাণ দুর্নীতি এবং অগণতান্ত্রিক পরিবেশ রুখতে পদক্ষেপ করুন।
[আরও পড়ুন: গাড়িতে গুলিবিদ্ধ হলেও মেলেনি রক্তের দাগ, স্বামীর বক্তব্যেও অসংগতি! বাগনানে অভিনেত্রী খুনে নয়া মোড়]
বিনয় সরকারিভাবে তৃণমূল ছাড়ায় রাজ্যের শাসক দল পাহাড়ে কিছুটা হলেও ধাক্কা খেল। সেই সঙ্গে ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠল পাহাড় অশান্ত হওয়ার আশঙ্কা। কারণ পাহাড়ে জোর জল্পনা, ফের নিজের পুরনো দল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চায় (GJM) ফিরতে পারেন বিনয়। পাহাড়ে গণতন্ত্র ফেরানোর দাবিতে মঙ্গলবারই দিল্লিতে ধরনায় বসেছিলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতা বিমল গুরুং (Bimal Gurung)। সেই সভায় দেখা গিয়েছিল তামাংকে। কিছুদিন আগে পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবি নিয়ে পাহাড়ের নেতারা দিল্লিতে একটি বৈঠক করেছিলেন। সেই বৈঠকেও বিমল গুরুংয়ের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বিনয়। সেসময় তৃণমূলের তরফে জানানো হয়, দলের অনুমতি না নিয়েই তিনি ওই সভায় উপস্থিত হয়েছেন। তখনই বিনয়ের সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব এবং গুরুংয়ের নৈকট্য স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে এই বিমল-বিনয় জুটিই পাহাড়ে বেনজির সন্ত্রাসের পরিস্থিতি তৈরি করেছিল। পরে অবশ্য বিনয় তামাং গুরুংয়ের সঙ্গ ছেড়ে পৃথক দল গড়েন। পরে সেই দল ছেড়ে যোগ দেন তৃণমূলে।