রাজ কুমার, আলিপুরদুয়ার: রাজ্যপালের সফরের মাঝেই পোস্টার বিতর্কে তোলপাড় আলিপুরদুয়ারের (Alipurduar) বিন্দিপাড়া। শুক্রবার সকালে শহিদ বিপুল রায়ের বাড়িতে সস্ত্রীক যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী এদিন সেখানে পৌঁছনও তিনি। তবে পথে লেখা বেশ কয়েকটি পোস্টার দেখতে পান তিনি। তাতে লেখা ছিল, “পঙ্গপাল রাজ্যপাল। নির্লজ্জ বিজেপির দালাল। কোথায় ছিল এতকাল। জবাব চাই। জবাব দাও।” পোস্টারের নিচে তৃণমূলের নামও উল্লেখ করা ছিল। তাতেই বেজায় ক্ষুব্ধ রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। যদিও শাসকদল তৃণমূল এই পোস্টারের সঙ্গে তাদের কোনও যোগসাজশ নেই বলেই দাবি করেছে।
শুক্রবার সকাল ৭.৩৪ নাগাদ একটি টুইট করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় (Jagdeep Dhankhar)। ওই টুইটেই তিনি সস্ত্রীক বাগডোগরা পৌঁছনোর কথা জানান।
[আরও পড়ুন: মেলেনি অ্যাম্বুল্যান্স, বাইকে করে করোনা আক্রান্ত শিক্ষককে হাসপাতালে পৌঁছে দিলেন ছাত্র]
সকাল ন’টার কিছু পরে আলিপুরদুয়ারে পৌঁছন তিনি। সেখান থেকে সড়কপথে সোজা লাদাখে শহিদ বিপুল রায়ের বাড়িতে যান। পথে এই পোস্টার নিয়ে তৈরি হয় বিতর্ক। এর আগে বৃহস্পতিবার তৃণমূলের বিরুদ্ধে হেলিপ্যাড ভেঙে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। এমনিই রাজ্যের সঙ্গে রাজ্যপাল সংঘাত লেগেই রয়েছে। তারই মাঝে ‘রাজ্যপাল পঙ্গপাল’ পোস্টার নিয়ে নতুন করে অশান্তি মাথাচাড়া দিয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি।
জানা গিয়েছে, এর আগেও দু’বার বিপুল রায়ের (Bipul Roy) বাড়িতে আসতে চেয়েছিলেন রাজ্য পাল। কিন্তু দু’বারই তার সফর বাতিল হয়। শুক্রবার শহিদ পরিবারের সঙ্গে দেখা করে মোট ১১ লক্ষ টাকার চেক তুলে দেন সস্ত্রীক রাজ্যপাল। এরপর শিলিগুড়িতে ফিরে যান তিনি। সেখানে সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্য সরকারকে তোপ দাগেন ধনকড়। তিনি বলেন, “রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা নেই। ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনা বাড়ছে। ছক কষে বিরোধীদের খুন করা হচ্ছে। মুখ্যসচিব এবং স্বরাষ্ট্রসচিবের থেকে জবাব চেয়েও পাইনি। গণতান্ত্রিক পরিকাঠামোয় এভাবে রাজ্য সরকার চলতে পারে না।”
এদিকে, গত মঙ্গলবারই আলিপুরদুয়ার জেলা প্রশাসনিক ভবন ডুয়ার্সকন্যাতে লোয়ার ডিভিশন ক্লার্কের চাকরিতে যোগ দেন শহিদ বিপুলের স্ত্রী রুম্পা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) নিজে তাঁর হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন। স্বামী হারানোর যন্ত্রণা বুকে রয়েছে। তবে আবারও কঠিন পরিস্থিতিতে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ পেয়ে কিছুটা স্বস্তিতে শহিদপত্নী।