shono
Advertisement
Birbaha Hansda

দুর্ভোগ দূর করে পাহাড়ে 'বসন্ত' আনতে চান! ট্রেক করে সান্দাকফুতে বনকর্মীদের মুখোমুখি বীরবাহা

'ফিল্ড ভিজিট' করতে গিয়ে এমন ট্রেক করে আগে কোনও বনমন্ত্রী সান্দাকফু ওঠেননি।
Published By: Sucheta SenguptaPosted: 05:08 PM Apr 04, 2025Updated: 05:13 PM Apr 04, 2025

ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: মানেভঞ্জনের পথচিত্রে, টুমলিং হয়ে খাড়া গিয়ে চড়েছে সান্দাকফু। সিঙ্গালিলা জাতীয় অরণ্যভূমির এই স্বর্গীয় পথের চুড়োর ঢাল প্রায় ৮০ ডিগ্রি। উচ্চতা ১২ হাজার ফুট। ওই পথ গাড়িতে যাওয়া মানে মৃত্যুর কিনারা ঘেঁষে যাওয়া। পানীয় জলের কষ্ট, রাস্তা খারাপ। তবু স্থানীয় জীবনযাপনে হাসি অমলিন। ভূ-বৈচিত্রের সঙ্গে তাল মিলিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কষ্টের জীবনযাপনই আপন করে নিয়েছেন সেখানকার বনদপ্তরের আধিকারিক ও কর্মীরা। মার্চের শেষে সহকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে ট্রেক করে ওই বরফ পথ চড়ে তাঁদের কষ্টের জীবন দেখে এলেন বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা। ফেরার পথে এক মিশ্র অভিজ্ঞতা মন্ত্রীর গলায়।

Advertisement

বীরবাহা হাঁসদা বলেন, "যতটা অ্যাডভেঞ্চার হয়েছে, তার থেকেও বেশি মন ভারী হয়ে আছে আমার সহকর্মীদের দেখে। এভাবে না গেলে বুঝতেই পারতাম না পাহাড়ের মানুষের মন কত সহজ-সরল। এত কষ্টের পরও সকলের মুখে হাসি, কী আন্তরিক! ওরা এরকমই থাকুক।" বীরবাহা তাঁদের সঙ্গে মোমো, ম্যাগিও খেয়েছেন। গল্পে গল্পে জেনেছেন কী তাঁদের দরকার, ওই প্রতিকূল পরিবেশে কোন কষ্ট লুকিয়ে তাঁরা দিন কাটান। দিয়ে এসেছেন নিজের ফোন নম্বরও। ফালুটে পারদ সান্দাকফুর থেকে বেশি নিচে। মন্ত্রীর কথায়, "অফিসারদের সামনে কর্মীরা ভয়ে থাকেন। অভাব-অভিযোগের কথা বলতে পারেন না। সেখানে তাঁদের মতো করেই আমায় তাঁরা দেখলে তাঁদের সাহস বাড়বে। আমি তাঁদের সমস্যার কিছু সুরাহা করতে পারলেও ভালো লাগবে।" তা বলে মোমো-ম্যাগি? বীরবাহা বলছেন, "মন্ত্রী বলে যদি এলাহি আয়োজন করতে বসত সকলে, সেই রেশন তো সমতল থেকেই নিয়ে উঠতে হবে তাঁদের। আমার জন্য এলাহি আয়োজন, আর ওরা খাবে মোমো-ম্যাগি? এটা হয় না।"

মানেভঞ্জন থেকে যাত্রা শুরু হয়েছিল হেঁটে। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ওঠার পর বৃষ্টি। যা রেনকোট ছিল, সঙ্গীসাথীদের মধ্যে বিলিয়ে কুলোত না। শেষে কিছুটা বিশ্রাম নিয়ে বাকি পথ গাড়িতে। ওই খাড়া পথ পরে যখন নামলেন তখন কিছু দূরে ধস নেমেছে। সেটা ঘুরে নামতে গিয়ে গাড়ি প্রায় ৯০ ডিগ্রি খাড়া হয়ে গিয়েছিল। বিস্মিত মন্ত্রীর মন্তব্য, "ওইরকম ভয়ংকর পথ। চোখ বন্ধ করে ফেলেছিলাম। ভাবছিলাম, ওই পথে আমার অফিসার, কর্মীরা প্রায় রোজই ওঠানামা করেন কীভাবে!" এভাবে 'ফিল্ড ভিজিট' করতে গিয়ে এমন ট্রেক করে আগে কোনও বনমন্ত্রী সান্দাকফু ওঠেননি। নামার সময় আবার নেওড়াভ্যালির দিকে কিছুটা ঘুরে, ডাউহিল, বাগোড়া হয়ে নেমেছেন। সেই বাগোড়াতেই রাতে কর্মীদের পরিবারের সঙ্গে আগুন পোহাতে পোহাতে গল্পে কেটে গিয়েছে সময়।

কাছেই হাতে তৈরি কিছু জিনিস নিয়ে একটা বাজার বসে।মন্ত্রী ঘুরে দেখেছেন সেটাও। এমন 'কাছের লোক'কে সুন্দর শাল উপহার দিয়েছে পাহাড়ের মানুষ। এই পরিবেশে থাকার কষ্ট দূর করতে বীরবাহা যা ভেবেছেন, সেই তালিকায় বার্সের কাছে হাইকার বা ট্রেকারদের জন্য একটা রেস্ট হাউসও আছে। মন্ত্রী প্রকৃতির অন্তরের কথা বললেন। তাঁর কথায়, "সিঙ্গলিলা রেঞ্জের এই ভয়াবহ রাস্তাই এতকাল সুরক্ষিত রেখেছে। এর আকর্ষণ চিরকাল থাকবে যদি পরিবেশটা এমনই থাকে।"

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • পাহাড়ি পরিবারের দুঃখ-দুর্দশা দেখতে ট্রেক করে সান্দাকফু গেলেন বনকর্মী বীরবাহা হাঁসদা।
  • 'ফিল্ড ভিজিট' করতে গিয়ে এমন ট্রেক করে আগে কোনও বনমন্ত্রী সান্দাকফু ওঠেননি।
  • সকলের সঙ্গে বসে খেলেন মোমো-ম্যাগিও।
Advertisement