জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: এবার স্কু্লে ঘণ্টা বাজাবে কে? স্কুল ছুটির পর দরজাই বা বন্ধ করবে কে? সেই দুশ্চিন্তাই ক্রমে ভাবাচ্ছে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। কারণ, স্কুলের একমাত্র চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর চাকরি গিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে। উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ বাগদার চরমন্ডল সিএমপিপিবিকে ফুলমোহন হাই স্কুল। শিক্ষক-অশিক্ষকদের চাকরি যাওয়ার তালিকায় ওই স্কুলের নামও রয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরি চলে গিয়েছে রাজ্যের ২৬ হাজার শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীর। রাজ্যের একাধিক স্কুলে শিক্ষক ও অশিক্ষকরা চাকরি হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। বাগদার চরমন্ডল সিএমপিপিবিকে ফুলমোহন হাই স্কুলে এই পরিস্থিতিতে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। কারণ, ওই স্কুলের একমাত্র বায়োলজি শিক্ষক সুমন মণ্ডল, ভূগোল শিক্ষক সুজয় দেবনাথের চাকরি গিয়েছে আদালতের নির্দেশে। গ্রুপ সি বিভাগের কর্মী সন্তু দাস ও গ্রুপ ডি বিভাগের বিপ্লব বিশ্বাস কর্মরত ছিলেন। সেই দু'জনও চাকরি খুইয়েছেন সুপ্রিম নির্দেশে।
স্টাফ রুমে শিক্ষক-শিক্ষিকারা। নিজস্ব চিত্র
বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরই ওই অশিক্ষক কর্মীরা চোখের জন্য ফেলে স্কুল ছেড়েছিলেন। দুই শিক্ষকও স্কুল থেকে ফিরে যান বাড়িতে। এই ঘটনায় মুষড়ে পড়েছেন ওই স্কুলের অন্যান্য শিক্ষকরাও। কিন্তু সমস্যাও দেখা দিয়েছে স্কুলে। গ্রুপ ডি বিভাগের বিপ্লব বিশ্বাস স্কুলের ঘণ্টা বাজাতেন। স্কুলের দরজা খোলা-বন্ধের দায়িত্বও ছিল তাঁর উপরে। ওই স্কুলে এই মুহূর্তে পরীক্ষা চলছে। পরীক্ষা শুরু, শেষের ঘণ্টা বাজানোর জন্য স্কুলের মিড ডে মিলের এক কর্মীকে আপাতত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সেই কর্মীই শিক্ষকদের পানীয় জল দেওয়ার কাজ করছেন দু'দিন ধরে। স্কুলের অন্যান্য কাজকর্ম আপাতত শিক্ষকরা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিয়েছেন। স্কুল ছুটির পর দরজাও বন্ধ করে যাচ্ছেন তাঁরা। শুক্র ও শনিবার এভাবেই স্কুল চলেছে। একমাত্র বায়োলজি শিক্ষকের চাকরি যাওয়ায় এখন সেই বিষয় কে পড়াবেন? সোমবার থেকে কী হবে? সেই প্রশ্ন রয়েছে শিক্ষকদের মধ্যে। স্কুলে প্রায় ১২০০ পড়ুয়া ও ৩১ জন শিক্ষক রয়েছেন।
ইংরাজির শিক্ষক নির্মাণচন্দ্র বিশ্বাস বলেন, "স্কুলে এবার ছুটির ঘণ্টা, পিরিয়ডের ঘণ্টা কে বাজাবে, তা আমরা ভেবে পাচ্ছি না। সুমনবাবু না থাকায় একজনও বায়োলজির শিক্ষক রইল না। এতে ছেলেমেয়েদের ক্ষতি হবে| প্রশাসনের কাছে আবেদন জানাব দ্রুত এই সমস্যা সমাধান করার।" দ্রুত এই সমস্যা সমাধান হওয়ার আশায় স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে পড়ুয়া-অভিভাবকরা।