অর্ণব দাস, বারাকপুর: পানিহাটি পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর অনুপম দত্ত (Anupam Dutta Murder) খুনে প্রশাসনের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগে সরব তাঁর স্ত্রী। অভিযোগ,পুলিশের চার্জশিটে গণ্ডগোল ছিল। তবে দলের নেতৃত্বের উপর ভরসা রাখছেন মীনাক্ষিদেবী। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করার অনুরোধও জানান তিনি। এদিকে বাপি পণ্ডিতের জামিনের বিরোধিতায় সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানানো হবে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে নিহত কাউন্সিলর তথা বর্তমান কাউন্সিলর মীনাক্ষীদেবী বলেন, “মামলাটি যে হাই কোর্টে যাচ্ছে একথা বারাকপুর কমিশনারেটের পুলিশ অথবা সরকারি আইনজীবী কেউই আমাদের জানাইনি। পুলিশ চার্জশিট ঠিকভাবে দিলে জামিন হত না বলেই আমি মনে করি।” তাঁর আরও অভিযোগ, “বাপি পণ্ডিতের ভাইকেও পুলিশ গ্রেপ্তার করেনি। এলাকাতে তাকে অনেকবার দেখা গিয়েছে। এটা সম্পূর্ণ পুলিশের গাফিলতি।” কাউন্সিলর আরও বলেন, “এই ঘটনার পর থেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমার পুরো পরিবারকে নিরাপত্তা দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি প্রশাসনের কাছে।”
[আরও পড়ুন: হঠাৎ ‘গায়েব’ চাঁচোল কলেজের ১৫ বিঘা জমি! UGC’র মান্যতা হারানোর আশঙ্কা]
দলীয় নেতৃত্বের কাছে মীনাক্ষির আবেদন, “আমি অনুরোধ করছি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যেন একবার আমায় দেখা করার সুযোগ করে দেওয়া হয়।” একইসঙ্গে আরও সংযোজন,”এখনও পর্যন্ত দলের উচ্চনেতৃত্বের উপর ভরসা করে আছি। শেষপর্যন্ত দেখব, তারপর কী করব সেই সিদ্ধান্ত নেব।” এই প্রসঙ্গে বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট সূত্রে জানা গিয়েছে, বাপি পণ্ডিতের জামিনের বিরোধিতায় সুপ্রিম কোর্টের আবেদন জানানো হবে। জামিনের অর্ডার সিট হাতে পাওয়ার পরই এবিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলেও জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের মার্চ মাসে প্রকাশ্যে দুষ্কৃতীর ছোঁড়া পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জের গুলিতে নিহত হন পানিহাটি পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অনুপম দত্ত। ঘটনার রাতেই পুলিশ সুপারি কিলার অমিত পণ্ডিতকে গ্রেপ্তার করে। তারপর গ্রেপ্তার হয় অন্যতম অভিযুক্ত বাপি পণ্ডিত। প্রায় পাঁচ মাস পর সোমবার এই বাপি জামিন পেলে আগরপাড়া এলাকার বাসিন্দারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। রাতে বিটি রোডের তেঁতুলতলায় টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধে করে। ক্ষোভে ফেটে পড়ে প্রয়াত কাউন্সিলরের অনুগামীরা। জামিনের খবর পেয়ে দুই সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে ঘরে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করে প্রয়াত কাউন্সিলরের স্ত্রী মীনাক্ষী। যদিও পরিবার এবং প্রতিবেশীদের তৎপরতায় তাঁকে উদ্ধার করে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এদিন বিকেলে তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান।