স্টাফ রিপোর্টার : ‘বিষয় পথের পাঁচালী’ ছবির ট্রেলার প্রকাশ্যে আনলেন গল্পকার নিজেই। ছবির ট্রেলারটি ফেসবুকে দিয়েছেন বিশ্বজিৎ ঘোষ (Biswajit Ghosh)। আর সেখানেই দাবি করেছেন, ‘অপরাজিত’ (Aparajito) পরে, তার আগেই ‘বিষয় পথের পাঁচালী’র ভাবনা। দাবি, ২০১২ সালেই নথিভুক্ত হয়েছিল ছবিটি। উল্লেখ্য, সেক্ষেত্রে এর দশ বছর বাদে ‘অপরাজিত’ ছবিটি মুক্তি পেয়েছে।
বস্তুত, আইনরক্ষার বাইরে ভবানী ভবনের পুলিশকর্মীরা কিংবদন্তি চিত্র পরিচালককে শ্রদ্ধার্ঘ্য দিতে সব বাধা সামলেই করেছেন শুটিং। ভাবনা ছিল বহু আগের। আর শুটিং শুরু হয়েছে অতিমারীর আগে থেকেই। মাঝে নানা বাধা বিপত্তি। অভিনেতা পান্নালাল ঘোষের বক্তব্য, “আমরা পুলিশের কাজ সামলেও আলাদা কিছু করতে পারি, এটা মনের মধ্যে রয়েছে। আমাদের ভাললাগা থেকেই এটা সত্যজিৎ রায়কে শ্রদ্ধার্ঘ্য।”
[আরও পড়ুন: ‘অপরাজিত’র বিরুদ্ধে প্লট ছিনতাইয়ের অভিযোগ, ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে আইনি নোটিস]
গল্পকার বিশ্বজিৎ ট্রেলার ফেসবুকে দিতেই আলোড়ন বেড়েছে। ‘আমি রবীন্দ্রনাথ’ ছবিটির মতোই ‘বিষয় পথের পাঁচালী’ বিশ্বজিৎ ঘোষ ও প্রসেনজিৎ ঘোষের ফিল্ম। সাদা কালোয় চার মিনিট ২৭ সেকেন্ডের ট্রেলারে শুরুতেই রয়েছে ট্রেনের ছুটে যাওয়া। ‘সাধু ব্রাদার্স এন্টারটেনমেন্ট প্রোডাকশন হাউস’-এর পক্ষ থেকেও সত্যজিৎ রায়ের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য। যেহেতু ‘বিষয় পথের পাঁচালী’, তাই ট্রেনের ছুটে যাওয়ার মতোই এসেছে কাশবন, দুর্গাপুজো, অপুর মুখোশ পরা বা ইন্দির ঠাকরুণের সেই অবিস্মরণীয় হেঁটে যাওয়ার ভঙ্গিমা। কিংবদন্তি পরিচালককে প্রথম ছবি বানাতে গিয়ে কেমন অর্থসমস্যায় পড়তে হয়েছিল, বহু বাঙালি সেটা জানেন। ভবানী ভবনের পুলিশকর্মীদেরও সেই সমস্যায় যে পড়তে হয়নি, সেটা নয়। ছবিতে সে বিষয়ও উঠে এসেছে। সত্যজিৎ রায়ের চরিত্রে দেবজিৎ। বিজয়া রায়ের ভূমিকায় পিয়া সেনগুপ্ত। স্বাভাবিকভাবেই এসেছে অপু, দুর্গা, ইন্দির ঠাকরুন। অভিনেতা দেবজিৎ সাধু জানালেন, ফান্ডিংয়ের সমস্যা ছিল। প্রাথমিকভাবে সেই ধাক্কা কোনওভাবে সামলালেও সবার সময় বের করাটাও ঝক্কির ছিল। যেহেতু পুলিশ কর্মীদের এক একজনের ‘ডিউটি শিডিউল’ আলাদা, তাই সবাইকে একসঙ্গে পাওয়াটা কঠিন কাজ ছিল। সেই সব সামলেই শুটিং। ট্রেলারে সাদা-কালোর রঙে সেতারের মূর্ছনাও অনবদ্য। এদিকে, প্লট ছিনতাই, আইনি নোটিস ও বিতর্ক প্রসঙ্গে ‘অপরাজিত’র পরিচালক অনীক দত্ত আগেই মন্তব্য করেছেন, “আগে ওঁদের থেকে প্রমাণ চান। আমি যদি অভিযোগ করি গতকাল আপনি কোনও দোকান থেকে চুরি করেছেন, তা হলে আপনি কী বক্তব্য রাখবেন? সেটাই আমার বক্তব্য।” অনীকের শিবিরের যুক্তি, একই ভাবনায় পাল্টা ছবি হতেই পারে। তবে তার পাল্টা যুক্তিও উঠে এসেছে। সেই শিবিরের বক্তব্য, সত্যজিৎ রায়কে নিয়ে ছবি হতেই পারে। কিন্তু ‘মেকিং অফ পথের পাঁচালী’ বা পথের পাঁচালী নির্মাণ একটি নির্দিষ্ট থিম। এটা নিয়ে কীভাবে দশটা ছবি হয়? থিম কীভাবে নকল হয়?
ছবির ট্রেলারটি নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে শেয়ার করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষও।