চাপা চাপে আচমকা হার্ট অ্যাটাক বেশি হয়, এখন আরও বেড়েছে। সাবধান করছেন ILS হাসপাতালের কার্ডিওলজিস্ট ডা. ডি পি সিনহা (Dr. D. P Sinha)। কথা বললেন প্রীতিকা দত্ত।
স্ট্রেস (Stress) এখন নিত্য জীবনের অঙ্গ হয়ে গেছে। এতদিন ছিল কাজের চাপ, এখন কাজ হারানোর চাপ। ছিল রোজ বেরনোর চাপ এখন বেরতে না পারার চাপ, কিংবা বেরলেও চাপ। যতদিন যাবে পরিস্থিতি ততটাই কঠিন হবে। স্ট্রেস বাড়বে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটাই এখন সমস্ত রোগের কারণ। চাপের উপর আবার জাঙ্ক ফুড, রাতজাগা লাইফস্টাইল। এগুলো আসলে পিৎজার টপিংসের মতো অ্যাড অন আইটেম। চাপের ঠ্যালায় অসুখ বৃদ্ধির লিস্টে অন্যতম হল ডায়াবেটিস (Diabetes) আর হার্টের অসুখ (Heart Problems)। চাপ, ডায়াবেটিস ও হার্টের অসুখ এক ত্রিকোণ সম্পর্কে আবদ্ধ, একটা এলেই আর একটা আসবে। তাই খুব সাবধান।
চিন্তাই শত্রু নিজের খেয়াল রাখছেন তো? তাহলে সবচেয়ে বেশি হৃদয়ের যত্ন নিন আর দুশ্চিন্তা ছাড়ুন। ছোট বড় সকলকেই এই পরামর্শ দিচ্ছেন ডাক্তাববাবু। প্রশ্ন হচ্ছে, দুশ্চিন্তা হচ্ছে বুঝবেন কীভাবে? তারও উত্তর আছে। খেয়াল করলে দেখবেন, একা খানিকক্ষণ সময় কাটালে নানা চিন্তা ঘিরে ধরে। কিছু স্মৃতি সুখের। আবার একরাশ কালো মেঘ নিয়ে আসে মনের আকাশে। এই কালো মেঘপুঞ্জকেই দূরে রাখতে হবে। নাহলে সম্যক বিপদ সামনে।
[আরও পড়ুন: করোনার দোসর ফাইব্রোসিস, ফুসফুসে অতিরিক্ত অক্সিজেন হয়ে উঠছে প্রাণঘাতী]
কেমন দুশ্চিন্তা?
একটু ঠান্ডা লাগা কিংবা অল্প হাঁচি-কাশি, ২০২০ সালে সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তা, কোভিড (COVID-19) হল না তো! দোসর হিসাবে ডায়াবেটিস বা ব্লাড প্রেসার বেশি থাকলে তো কথাই নেই। লকডাউন ও আনলকের ঠেলায় রোজকার খাওয়া দাওয়ার নিয়ম শিকেয়। এমনকী, তিনমাস অন্তর চিকিৎসকের অ্যাপয়েন্টমেন্ট ডেটও অতীত। কিছু হলে যে স্থানীয় কারও কাছে ছুটবেন, সে পথও কোথাও কোথাও বন্ধ। তার সঙ্গে দ্রব্যমূল্য, সন্তানদের পড়াশোনার চিন্তা, পেশাগত সুরক্ষা ইত্যাদি প্রভৃতি তো রয়েইছে। জীবন থাকা মানেই যেন চিন্তা। আর সেই পথেই লুকিয়ে হার্ট অ্যাটাক। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আজকাল সকলেই ওয়ার্ক ফ্রম হোম করছেন, ঠিকই। তবে সামাজিক মেলামেশার যে ভাল দিকগুলো ছিল, সেগুলো মানুষকে অনেকটা টেনশন-ফ্রি রাখত, সেটা হারিয়ে যেন না যায়। কোভিডের ভয়ে সবাই সবার থেকে দূরে যাচ্ছেন। তাতেও ভয়।
অতঃ কিম্?
একবাক্যে বললে, ভয় কাটিয়ে সাধারণ যাপনে ফেরাই আপাতত মূল লক্ষ্য। হার্টের রোগ থাকলে বা কোনও লাইফস্টাইল ডিজিজ, শরীরে সেই রোগ পুষে রাখবেন না। মাস্ক, স্যানিটাইজার, ফিজিক্যাল দূরত্ব বজায় রেখে সময় মতো ব্লাড সুগার (Blood Suger) চেক করান। প্রেশার (Blood Pressure) মাপান। প্রয়োজনে একটা ECG। কোনও রকম ব্যামোর আভাস পেলে উপযুক্ত স্পেশ্যালিস্টের কাছে যান। মানসিক চাপ এড়াতে সকালে বা সন্ধেবেলা হাঁটুন। বন্ধুদের সঙ্গে ফোনে কথা বলুন। ছাদে বা বাড়ির মধ্যে ওয়ার্মআপ এক্সারসাইজ। রোজের ডায়েটে প্রোটিন, সবুজ শাকসবজিতে বৈচিত্র আনুন। মরশুমি ফল খান। আর খাবারে নুন কম খান। প্রতিদিন মনে করে ওষুধপত্র খাচ্ছেন কি না, সেটাও নজরে রাখুন। ঘুম এবং জলপান দু’টো পর্যাপ্ত করা দরকার। সাইকো-সোশ্যাল ভারসাম্য নষ্ট যেন না হয়। এবং অবশ্যই শরীরে হরমোনের গতিবিধির দিকে নজরদারি বাড়ান। কারণ, হরমোন ইমব্যালেন্সের কারণেও হার্ট অ্যাটাক হতে পারে।
[আরও পড়ুন: করোনার পর ‘ক্যাট কিউ’! নয়া চিনা ভাইরাস সম্পর্কে সতর্ক করল আইসিএমআর]
The post চোরাগোপ্তা অশান্তিই ডেকে আনছে হার্টের অসুখ, খেয়াল রাখুন মনের স্বাস্থ্যেরও appeared first on Sangbad Pratidin.