অভিষেক চৌধুরী, কালনা: কিছুটা অ্যাপ্লিক, কিছুটা ফেব্রিক, খানিকটা আবার রং-তুলিতে আঁকা। একটুকরো কাপড়ের উপর মিশ্র মাধ্যমে এভাবেই ফুটে উঠেছে শিল্পকলা। শিল্পের জগতে যার পোশাকি নাম ‘টেক্সটাইল মিডিয়াম আর্ট’। আর সেই মাধ্যমে শিল্প সৃজনেই বাজিমাত করলেন বঙ্গকন্যা। পোল্যান্ডে আয়োজিত ‘টেক্সটাইল মিডিয়াম আর্ট’ (Textile Medium Art) প্রদর্শনীতে প্রথম স্থান পেয়ে সোনার পদক (Gold Medal) ঘরে আনলেন পূর্ব বর্ধমানের মৌমিতা বসাক। আন্তর্জাতিক স্তরে এহেন সাফল্যের পর স্বভাবতই ‘সেলিব্রিটি’ হয়ে উঠেছেন মৌমিতা। পূর্বস্থলীর (Purbasthali) শ্রীরামপুরের বাসিন্দা ২৬ বছরের মেয়েকে বাড়ি গিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে এসেছেন এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথও।
শ্রীরামপুরের পাবনা পাড়ার বাসিন্দা মৌমিতা বসাক। কিছুদিন আগেই ২৬ বছর বয়সী মৌমিতা কলকাতার একটি সরকারি চারু ও কারুকলা (আর্ট) কলেজে পেন্টিং (Painting) নিয়ে স্নাতকোত্তরের পরীক্ষা দিয়েছেন। তার মধ্যেই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে পোল্যান্ডে (Poland) হওয়া আন্তর্জাতিক মানের এক শিল্প প্রদর্শনী প্রতিযোগিতায় তিনি অংশগ্রহণ করেন। চার ফুট বাই পাঁচ ফুটের কাপড়ের উপরে নজরকাড়া শিল্পকর্মে তাক লাগিয়ে দেন। হাত ও মেশিনের মাধ্যমে ফেলে দেওয়া বিভিন্ন ধরনের টুকরো কাপড় ও কাঁথা স্টিচের কাজ করার পাশাপাশি জলরং, চা পাতা দিয়ে তৈরি রং দিয়ে অপূর্ব শিল্পের জন্ম দেন মৌমিতা।
আর এই শিল্পকর্মেই বিভিন্ন দেশ থেকে অংশগ্রহণকারী ৫৪ জন প্রতিযোগীকে পিছনে ফেলে তিনি প্রথম স্থান অর্জন করেন। ছুঁয়ে ফেলেন সোনার পদক। তাঁর বাড়িতে ক্যুরিয়ারের মাধ্যমে সেই পদক-সহ একটি বই উপহার হিসেবে পাঠান আয়োজকরা। ‘সেন্ট্রাল মিউজিয়াম অব টেক্সটাইল ইন লডস পোল্যান্ড’ সংস্থার দেওয়া সেই পদক হাতে পেয়ে স্বভাবতই খুশি মৌমিতা ও তাঁর পরিবার।
[আরও পড়ুন: ‘ডবল ইঞ্জিন সরকারের ডবল সুবিধা’, ৭১ হাজার বেকারকে নিয়োগপত্র দিয়ে দাবি মোদির]
মৌমিতা বসাক জানান, “পোল্যান্ড দেশে তিন বছর অন্তর এই প্রদর্শনীর উপর প্রতিযোগিতাটি হয়। চলে কয়েকমাস ধরে। ১৭ তম এই প্রতিযোগিতাটি শুরু হয় চলতি বছরের অক্টোবর মাসে। চলবে এপ্রিল মাস পর্যন্ত।” তিনি আরও জানান, “ওয়েবসাইটের মাধ্যমে হওয়া এই প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন দেশ থেকে দু, একজন করে প্রতিযোগি অংশগ্রহন করেন।ভারত থেকে আমি ও গুজরাটের একজন “টেক্সটাইল মিডিয়াম” বিভাগের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করি।সেই শিল্পকর্ম তৈরী করে কুরিয়ারের মাধ্যমে পোল্যান্ডের নির্দিষ্ট ঠিকানায় পাঠিয়ে দিই। ৮ অক্টোবর ওপেন মিটে সংস্থার পক্ষ থেকে আমাকে ফোন করে সোনার পদক পেয়েছি বলে জানানো হয়।” বাবা কালাচাঁদ বসাক ও মা দিপালি বসাক বলেন, “মেয়ের এই সাফল্যে আমরা খুবই গর্বিত। আগামী দিনেও এইভাবেই ও বাংলা তথা দেশকে নিজের শিল্পকর্মের মধ্য দিয়ে তুলে ধরুক এই প্রার্থনা করি।”