অভ্রবরণ চট্টোপাধ্যায়, শিলিগুড়ি: এসআইআরের দ্বিতীয় পর্যায়ে রাজ্যজুড়ে চলছে শুনানিপর্ব। যা নিয়ে উঠছে হেনস্তার অভিযোগ। প্রবীণ, অসুস্থ মানুষকেও শুনানির লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে। যা নিয়ে ইতিমধ্যে কমিশনকে একহাত নিয়েছে শাসকদল তৃণমূল। এর মধ্যেই এসআইআরে শুনানির নোটিস পেলেন শিলিগুড়ির প্রধাননগর রামকৃষ্ণ বেদান্ত আশ্রমের এক সন্ন্যাসী। পিতামাতার নাম সংক্রান্ত বিষয়েই এই নোটিশ পাঠানো হয়েছে। রামকৃষ্ণ বেদান্ত আশ্রমের রঘুনন্দন মহারাজ রামকৃষ্ণ মঠে দীক্ষিত সন্ন্যাসী। তিনি বলেন, দীক্ষার পর আমরা জৈবিক পিতামাতার নাম ব্যবহার করতে পারি না। আমাদের ক্ষেত্রে পিতার নাম হিসেবে 'রামকৃষ্ণ দেব'এবং মায়ের নাম হিসেবে 'মা সারদা' ব্যবহার করা হয়। শুধু তাই নয়, আমি নিজে ভারত সরকারের জারি করা পাসপোর্টের ধারক, যেখানে আমার পিতামাতার নামও সেই ভাবেই নথিভুক্ত রয়েছে। এরপরেও কেন নোটিস তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ওই সন্ন্যাসী!
এই বিষয়ে তৃণমূল নেতা বেদব্রত দত্ত বলেন, "যে দল সব, সময় হিন্দু ধর্মীয় বিষয় নিয়ে বড় বড় কথা বলে, আজ দেখা যাচ্ছে সেই দলের শাসনেই সন্ন্যাসীদের পরিচয় নিয়েও প্রশ্ন উঠছে এসআইআরের নামে।" অন্যদিকে বিজেপির শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলার আইটি সেলের ইনচার্জ দীপঙ্কর কুণ্ডু বলেন, ''এসআইআর একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া। শুধু একজন সন্ন্যাসী নন, যাঁদের নোটিস দেওয়া হয়েছে, সকলকেই নথি যাচাই করাতে হবে। এমনকি প্রধানমন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রী হলেও তাদের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য। কিছু রাজনৈতিক দল নিজেদের বাংলাদেশি ভোটব্যাংক রক্ষা করার জন্য এই বিষয়টিকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করছে।"
অন্যদিকে নকশালবাড়ি বিডিও অফিসে হিয়ারিং লাইনে ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা মহিলা সৃজনা রাই। বাড়ি থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে শুনানি কেন্দ্র পড়ায় চরম হয়রানি! নকশালবাড়ির মাল্লাবাড়ির সৃজনা রাই নোটিশ পেয়ে হাজির শুনানির লাইনে। তিনি জানান "শুনেছিলাম বয়স্ক বা অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের জন্য বাড়িতে গিয়েই শুনানি হবে। কিন্তু এমন কোনও নোটিস বা তথ্য আমরা পাইনি। কাজেই এই অবস্থাতেও এখানে এসে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। নূন্যতম কোন ব্যবস্থা নেই।"
