সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বন্যায় ভেসেছে সর্বস্ব। তা বলে বিয়ের মতো অনু্ষ্ঠান কী করে বন্ধ থাকে? যুগল নিমরাজি থাকলেও বরপক্ষ কনেপক্ষ হিসেবে হইহই করে এগিয়ে এলেন ত্রাণশিবিরের বাসিন্দারাই। মন্দিরের পুরোহিতের মন্ত্রোচ্চারণের মধ্যেই চারহাত এক হল। মন্দিরের ট্রাস্টি বোর্ডের বদান্যতায় ধুমধাম করে মিটল বিয়ের ভোজপর্ব। ত্রাণশিবিরের বাধাধরা খাবার থেকে এক বেলার জন্য মুক্তি মিলতেই খুশির হাওয়া বন্যাদুর্গতদের মধ্যে। সব হারানোর দুঃখ ভুলে ত্রাণশিবিরের মানুষ পাশে দাঁড়ানোয় খুশি নবদম্পতিও। ঘটনাটি ঘটেছে বন্যাবিধ্বস্ত কেরলের মালাপ্পুরম জেলার এক ত্রাণশিবিরে।
[বাজপেয়ীর শেষকৃত্যে পাক প্রতিনিধিদলে হেডলির ভাই, ক্ষুব্ধ সাউথ ব্লক]
জানা গিয়েছে, কনে আঞ্জু ও বর সাইজুর বিয়ের দিন পাকা হয়েছিল বছর খানেক আগেই। আগস্টে বিয়ের দিন থাকলেও দুই পরিবারের বাড়িঘরের অস্তিত্ব নেই। বন্যার গ্রাসে ভেসে গিয়েছে আঞ্জু ও সাইজুর ঘরবাড়ি। তাঁরা দুজনেই মালাপ্পুরম জেলার বাসিন্দা। সেনার সহযোগিতায় দিন সাতেক আগে ত্রাণ শিবিরে ঠাঁই মিলেছে। আঞ্জুর পরিবার একটি সরকারি স্কুলে ত্রাণশিবিরে এসে উঠেছে। অন্যদিকে এক সরকারি ভবনে গিয়েছে সাইজুর পরিবার। তবে দুটি ত্রাণ শিবিরের মধ্যে দূরত্ব কম থাকায় তাঁদের মধ্যে যোগাযোগ বজায় ছিল। এদিকে মেয়ের বিয়ের জন্য নির্ধারিত দিনটি এগিয়ে আসায় চিন্তায়, দুঃখে বিমর্ষ হয়ে পড়ছিলেন তরুণীর অভিভাবকরা। ত্রাণশিবিরের পড়শি বাসিন্দাদের তা নজর এড়ায়নি। প্রথমে ভেবেছিলেন এক লহমায় সর্বস্ব খুইয়ে হয়তো ভেঙে পড়েছে পরিবারটি। পরে জানতে পারেন, মেয়ের বিয়ে নিয়েই তাঁরা চিন্তিত। ধুমধাম না হোক বিয়ে তো হতেই পারে। ত্রাণশিবিরের অন্যান্য বাসিন্দাদের কাছ থেকে এই প্রস্তাবই এসেছিল আঞ্জুর বাবা-মায়ের কাছে। সেই খবর সাইজুর পরিবারের কাছে পৌঁছাতে সময় নেয়নি। প্রস্তাবটি দুই পরিবারের মনে ধরলে স্থানীয় থিরিপুনথারা মন্দিরে বিয়ের আয়োজন হয়। সহযোগিতায় এগিয়ে আসে মন্দিরের ট্রাস্টিবোর্ড। ত্রাণশিবিরের বাসিন্দারাই কনে ও বরযাত্রীর ভূমিকা পালন করে। অতিথিদের বিয়ের ভোজ খাওয়ানোর দায়িত্ব নেন মন্দিরের ট্রাস্টিবোর্ডের সদস্যরা। রীতি মেনে রবিবার ধুমধাম করে সম্পন্ন হয় বিয়ে। প্রাকৃতিক বিপর্যয় সব কেড়ে নিলেও দুটি হৃদয়ের মিলন ফিরিয়ে দিল আনন্দ।
[বাইক সারানোর অজুহাতে দুই নাবালিকাকে গণধর্ষণ, গ্রেপ্তার ১১জন অভিযুক্ত]
অভিভূত কনের পরিবারের সদস্য জানিয়েছেন, ‘বন্যায় ভেসে গিয়েছে চারটি বাড়ি। বিয়ের কেনাকাটার সামগ্রীর কোনও অস্তিত্ব নেই। সেজন্য পরিবারের তরফে বিয়ে স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু যখন আমাদের সঙ্গে ত্রাণশিবিরে থাকা অন্যান্য বাসিন্দারা বিয়ে বন্ধ করতে নিষেধ করলেন, নিজেরাই উদ্যোগ নিতে এগিয়ে এলেন। তখন আর চুপ করে বসে থাকতে পারিনি। সকলের প্রচেষ্টায় বিয়ের কাজ সুসম্পন্ন হয়েছে।’
The post বন্যায় ভেসেছে ঘরবাড়ি, মন্দিরেই বিয়ে সারলেন কেরলের যুগল appeared first on Sangbad Pratidin.