স্টাফ রিপোর্টার: ফের সর্বভারতীয় স্তরে উজ্জ্বল উপস্থিতি এ রাজ্যের। মেডিক্যালের প্রবেশিকা নিটে (ইউজি) ৭২০ তথা পূর্ণ নম্বর পেয়ে প্রথম স্থানাধিকারী ৬৭ জনের মধ্যে জায়গা করে নিল রাজ্যের তিন ছাত্র। মুর্শিদাবাদের রূপায়ণ মণ্ডল, সল্টলেকের অর্ঘ্যদীপ দত্ত, শিলিগুড়ির সক্ষম আগরওয়াল-দিল্লি এইমসকেই পাখির চোখ করেছেন রাজ্যের এই তিন কৃতী। মঙ্গলবারই এ বছরের ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি কাম এন্ট্রান্স টেস্টের ফল প্রকাশ করেছে ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি (এনটিএ)। তাতে প্রথম স্থানাধিকারী রাজ্যের তিনজনের মধ্যে দুজনই সরকারি, সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের পড়ুয়া। যা এই সাফল্যে আলাদা মাত্রা যোগ করেছে।
মুর্শিদাবাদের নবাব বাহাদুর ইনস্টিটিউশনের ছাত্র রূপায়ণ মণ্ডলের ইচ্ছে দিল্লির এইমসে পড়ার। বহরমপুর ডনবস্কো স্কুল থেকে মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হওয়ার পরই রূপায়ণ চিকিৎসা বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করবেন বলে মনস্থির করেন। সেই মতো দিনে সাত ঘণ্টা ঘুমানো এবং দুঘণ্টা খেলাধুলা ছাড়া বাকি সময় পড়াশোনা নিয়ে থাকতে ভালোবাসতেন। নিটে প্রথম স্থানে থাকা হিন্দু স্কুলের ছাত্র অর্ঘ্যদীপ এ বছর উচ্চমাধ্যমিকের মেধাতালিকায় অষ্টম স্থান অধিকার করে নিয়েছিলেন। অর্ঘ্যদীপ জানিয়েছেন, সর্বভারতীয় র্যাঙ্ক এক হওয়ায় খুশি তিনি। তবে, এই ফলাফল অপ্রত্যাশিত নয়। পরীক্ষা দিয়ে আসার পর নিটের ‘অ্যানসার কি’র সঙ্গে নিজের দেওয়া উত্তরগুলো মিলিয়েই বুঝে গিয়েছিলেন প্রাপ্ত নম্বর ৭২০ হতে চলেছে।
[আরও পড়ুন: কীভাবে জমি দখল করে টাকা হাতাতেন শাহজাহান? নয়া তথ্য ইডির চার্জশিটে]
অর্ঘ্যদীপের কথায়, “খুবই আনন্দ হচ্ছে। এটার জন্যই এত কষ্ট করা। এখন দিল্লি এইমস থেকে এমবিবিএস করব। তার পরে চিকিৎসা বিজ্ঞান নিয়ে কিছু গবেষণা সংক্রান্ত কাজ করার ইচ্ছে রয়েছে।” পড়াশোনার ফাঁকে সময় পেলে মাঠে গিয়ে খেলতে বা বাড়িতেই কম্পিউটার গেম খেলতে ভালোবাসেন অর্ঘ্যদীপ। ডাক্তারির সর্বভারতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষায় ভারতসেরা রাজ্যের আর এক ছাত্র শিলিগুড়ির সক্ষম আগরওয়ালের বাবা পেশায় চিকিৎসক। ছোটবেলা থেকে বাবাকে দেখেই ডাক্তারি পড়ার আগ্রহ জন্মায় তাঁর। দিল্লি এইমস থেকে ডাক্তারি পড়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁরও। শিলিগুড়ির নির্মাণ বিদ্যাজ্যোতি স্কুলের ছাত্র সক্ষম জানিয়েছেন, দ্বাদশের পাশাপাশি নিটের জন্যও সমানতালে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সক্ষমের বাবা চেতনকুমার আগরওয়াল বলেন, “ছেলের সাফল্যে আমরা খুব খুশি। খুব ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়েছিল।”
দেশের সেরা একশোয় রয়েছে রাজ্যের আরও এক কৃতী। ৯৯.৯৮৭৩১৪ পার্সেন্টাইল পেয়ে অরিন্দম চৌধুরির সর্বভারতীয় র্যাঙ্ক ৮৬। এ বছর রাজ্য থেকে নিটে অংশগ্রহণ করেছিলেন ১ লক্ষ ১৬ হাজার ১১০ জন। তাঁদের মধ্যে সফল হয়েছেন ৬৩ হাজার ১৩৫ জন। ভালো ফল করেছে দিল্লি পাবলিক স্কুল, রুবি পার্কের ছাত্রছাত্রীরাও। নিটে অংশগ্রহণকারী স্কুলের ১৮৫ জন ছাত্রছাত্রীর মধ্যে সফল হয়েছে ১৮১ জন (৯৭ শতাংশ)। তাঁদের মধ্যে ২১ জনই ৯৯ পার্সেন্টাইলের বেশি নম্বর পেয়েছেন। ৭১০ নম্বর পেয়ে রূপসা রাজীব ঘোষের সর্বভারতীয় র্যাঙ্ক ৬৬০। তার পরেই রয়েছেন স্বপ্নিল সিনহা। ৭০৫ নম্বর পেয়ে তাঁর র্যাঙ্ক ১২৭৯। মহম্মদ আমন খানের প্রাপ্ত নম্বর ৭০২, র্যাঙ্ক ১৪১১।