সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে গত দু’দিনে ৩ লক্ষ ৪২ হাজার ৩৭৫ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে। সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন বড়সড় ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। মমতা জানিয়েছেন, স্রেফ গত ৪৮ ঘণ্টায় বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে ১৩৭টি মউ স্বাক্ষর করেছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, এই বিরাট অঙ্কের বিনিয়োগ প্রস্তাব কার্যকরী হলে ৪০ লক্ষ বেকারের কর্মসংস্থান হবে। মমতা জানিয়েছেন, এবারের বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলন (Bengal Global Business Summit) এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে সফল সম্মেলন।
বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের সুফল নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই বিরোধীরা সরব। সরকারের সমালোচনা করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর এই লগ্নি টানার উদ্যোগের কার্যকারিতা নিয়েই বারবার প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী শিবির। BGBS-এর মঞ্চে দ্বিতীয় দিনের বক্তব্যে মুখ্যমন্ত্রী সেইসব সমালোচকদের জবাব দিলেন। জানিয়ে দিলেন, বিগত বাণিজ্য সম্মেলনগুলি মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত মোট ১২ লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগ এসেছে বাংলায়। এর মধ্যে বেশ কিছু প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। যার সুফল আসা শুরু করে দিয়েছে। কিছু কিছু প্রকল্পের কাজ এখনও চলছে। মমতা জানিয়েছেন, “শুধু বানতলায় চর্মশিল্পক্ষেত্রেই ১০ লক্ষের বেশি মানুষ কাজ করছেন। সব মিলিয়ে MSME সেক্টরে ১ কোটি ৩৬ লক্ষ কর্মসংস্থান হয়েছে। মাইক্রসফট, ফ্লিপকার্টের মধ্যে সংস্থা এখানে বিনিয়োগ করতে চাইছে।”
[আরও পড়ুন: শিক্ষাক্ষেত্রেও বিদেশি সহায়তা, ইউরোপের একাধিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ‘মউ’ বাংলার ৭ বিশ্ববিদ্যালয়ের]
বাংলায় বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশের জন্য শিল্পপতিদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে ধন্যবাদ জানিয়েছেন, কোভিড (COVID-19) যোদ্ধাদের। করোনাকালে প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও যেভাবে এই সম্মলন সফল করা সম্ভব হয়েছে, তাতে আপ্লুত মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, মানুষের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর জন্য এই সময় সম্মেলন করা জরুরি ছিল। মমতা এদিন বলেন, “অনেকে আমাকে বলেছিল, এখন শিল্প সম্মেলন করবেন না। এখন কারা বিনিয়োগ করবে? বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের শিল্পদ্যোগীরা বিনিয়োগ করতে চাইবেন না। কিন্তু আমি বলেছিলাম চলুন না করে দেখি। মানুষের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বাড়াতে হবে।”
[আরও পড়ুন: রাজ্যে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের হাসপাতাল, বাণিজ্য সম্মেলনে ঘোষণা ডাঃ দেবী শেঠির]
শিল্পদ্যোগীদের উদ্দেশে মমতার বার্তা, “বাংলায় এখন স্থিতিশীলতা এসেছে। তাই চিন্তার কোনও কারণ নেই। বিপর্যয় আসতেই পারে, কিন্তু তাতে উন্নয়ন আটকাবে না। বিপর্যয় আসে-যায়। উন্নয়নের কাজ চালিয়ে যেতে হবে। এমন মহামারী আসতেই পারে। এরপর এলে আমরা লড়াই করব। বাংলা রাস্তা দেখিয়েছে। এবার বাকিরাও করবে। এটা শিল্পের উৎসব। আমরা ধর্মীয় উৎসব করি। এবার শিল্পের উৎসব পালন করছি।” মমতা জানিয়েছেন, আগামী বছর শিল্প সম্মেলন হবে ১, ২ ও ৩ ফেব্রুয়ারি।