মলয় কুণ্ডু: গত সপ্তাহে বিজনেস কনক্লেভ সাক্ষী থেকেছিল রাজ্যের শিল্পায়নের দ্রুতগতির। আর বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের একগুচ্ছ পদক্ষেপ বুঝিয়ে দিল শুধু শিল্পস্থাপন নয়, তার জন্য আগামিদিনের জরুরি পরিকাঠামোও প্রস্তুত রাখতে চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শিল্প ও মানুষের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগ, পরিষেবা ক্ষেত্র বাড়াতে বৃহৎ ওয়্যারহাউস তৈরি, জেমস অ্যান্ড জুয়েলারি পার্কের পরিধি বাড়াতে জমির ব্যবস্থার মতো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে এদিন সিলমোহর দিল রাজ্য মন্ত্রিসভা।
বৈঠকের পর নবান্নে মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এই সব প্রকল্পের রূপরেখা বিস্তারিতভাবে জানান। এর মধ্যে প্রথমেই রয়েছে জেএসডব্লু এনার্জি লিমিটেডের সঙ্গে রাজ্য সরকারে সঙ্গে পিপিপি মডেলে বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলা। চন্দ্রিমা জানিয়েছেন, বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য রাজ্য সরকার দরপত্র বা ‘বিড’ আহ্বান করেছিল। সেই ‘বিড’-এ জেএসডব্লু এনার্জি জানায়, সংস্থা ৫.৮১ কিলোওয়াট আওয়ার বিদ্যুৎ দিতে পারবে। এরপরই মন্ত্রিসভা এদিন সিদ্ধান্ত নেয়, জেএসডব্লু এনার্জি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করা হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ৮০০ করে দু’টি, মোট ১৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুটি নিউ সুপার ক্রিটিক্যাল থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্ট করবে জেএসডব্লু এনার্জি। এই প্রকল্পের গড়ে তোলার পর পরিচালনার জন্য জন্য জেএসডব্লু এনার্জিকে মেয়াদ দেওয়া হয়েছে ২৫ বছর, পরে আরও ৫ বছর বাড়ানো যেতে পারে।
চন্দ্রিমার কথায়, ‘‘বিদ্যুৎের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে মন্ত্রিসভা এই সিদ্ধান্তে সিলমোহর দিয়েছে।’’ এই প্রকল্পের জন্য শালবনিতে জমি চিহ্নিত করা ও তা অধিগ্রহণ করার দায়িত্ব জেএসডব্লু এনার্জি-র বলে জানান তিনি। এদিন আরও কয়েকটি শিল্পপ্রকল্পে জমি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রসিভা। বিজনেস সামিটে অংশ নিয়ে নাহার ইন্ডাস্ট্রিয়াল এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড রাজ্যের প্রায় ৫০০ কোটি টাকা ওয়্যারহাউস তৈরিতে লগ্নি করায় আগ্রহ দেখিয়েছিল। চন্দ্রিমা জানান, সংস্থাটিকে সিঙ্গুরে ১১.৩৫ একর জমি বরাদ্দ করা হচ্ছে। সংস্থাটি ওই জমি ব্যবহার করবে আমাজন ও ফ্লিপকার্টের ওয়্যারহাউজের পরিকাঠামো আরও বাড়াবে।
হাওড়ার অঙ্কুরহাটিতে ডব্লুবিআইডিসি ০.৫ একর জমি দিচ্ছে জেমস অ্যান্ড জুয়েলারি পার্কের দ্বিতীয় পর্যায়ের সম্প্রসারণের জন্য। সেখানে টেকনিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড স্কিল ডিপার্টমেন্ট প্রশিক্ষণ দেয়। জেমস অ্যান্ড জুয়েলারি পার্ক সেখানে পরিধি বাড়ালেও সেখানেও ওই দপ্তরই শ্রমিকদের প্রশিক্ষণের কাজ করবে। এছাড়াও বিদ্যাসাগর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে ৩০.৪২ একর, পানাগড় ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে ১.৩৭ একর, হরিণঘাটা ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে ২.,৭৭ একর, জঙ্গলসুন্দরী কর্মনগরীতে ১.৫৫ একর, ডোমজুড়ে জেমস অ্যান্ড জুয়েলারি পার্কের অফিস করতে ২০৮৪.২৬ বর্গমিটার জমি দেবে ডব্লুবিআইডিসি।
