সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২০১৬ সাল থেকে বিহারে (Bihar) নিষিদ্ধ মদ (Liquor)। তারপরেও একাধিকবার সে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে মৃত্যুর খবর মিলেছে। যা বারবার অস্বস্তিতে ফেলেছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকে (Nitish Kumar)। সেই হতাশা থেকেই এবার মদ্যপায়ীদের ‘মহাপাপী’ বলে আক্রমণ করতে দেখা গেল তাঁকে। সেই সঙ্গে বর্ষীয়ান নেতা জানিয়ে দিলেন, বিষমদ খেয়ে যাঁদের মৃত্যু হবে, এবার থেকে তাঁদের পরিবারকে কোনও রকম আর্থিক সাহায্যও করবে না তাঁর সরকার।
ঠিক কী বলেছেন নীতীশ? বুধবার বিহার বিধানসভায় ক্রুদ্ধ নীতীশ বলেন, মহাত্মা গান্ধীও মদ্যপানের বিরোধিতা করেছিলেন। তাঁর মতে, যাঁরা মদ্যপায়ী তাঁরা ”মহাপাপী ও মহা অযোগ্য।” সেই সঙ্গে তিনি এও বলেন, ”আমি ওইসব লোককে ভারতীয় বলেই মনে করি না।”
[আরও পড়ুন: বিজেপি বিরোধী জোটের স্তম্ভ মমতাই, বার্তা মনু সিংভির]
পাশাপাশি নীতীশের মতে, যাঁরা বিষমদ খান, তাঁরা মদ খাওয়া ক্ষতিকর জেনেই খান। সুতরাং ওঁদের কোনও ক্ষতি হলে তার দায় তাঁদেরই। নীতীশের কথায়, ”এটা ওঁদের দোষ। বিষাক্ত হতে পারে এটা জেনেও ওঁরা মদ খান।”
আসলে বিরোধীদের বরাবরের অভিযোগ, বিহারে মদ নিষিদ্ধ হলেও সরকারের ব্যর্থতার জন্যই বারবার বিষমদ খাওয়ার ঘটনা ঘটছে। এদিনও তাঁরা এই অভিযোগ জানান। এরপরই নীতীশ মদ্যপায়ীদের ‘মহাপাপী’ বলে আক্রমণ করেন।
বুধবার বিহারে একটি নিষেধাজ্ঞা ও আবগারি (সংশোধন) বিল পাস হয়। সেই বিল অনুযায়ী, প্রথমবার মদ খাওয়ার জন্য ধরা পড়লে জরিমানা দিলে জামিন পেয়ে যাবেন অভিযুক্ত। কিন্তু তা দিতে না পারলে এক মাসের জন্য কারাবাস করতে হবে তাঁদের।
উল্লেখ্য, ড্রাই স্টেট (Dry Test) হিসেবে পরিচিত বিহার। নীতীশ কুমার (Nitish Kumar) মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কুরসিতে বসার পর থেকেই বিহারকে মদমুক্ত করার উদ্যোগ নেন। সেটা ২০১৬ সাল। সেই থেকেই বিহারে মদ নিষিদ্ধ। তবে গাঁ-গঞ্জে প্রশাসনের নজর এড়িয়ে বিক্রি হচ্ছেই। আর প্রশাসনিক নজরদারি কমা থাকার জেরেই সেই মদ পান করে প্রাণ খোয়াচ্ছে আমজনতা। এই নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই রাজনৈতিক চাপানউতোর রয়েছে।
বিরোধীদের অভিযোগ, বিহারে মদ নিষিদ্ধ করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ নীতীশ সরকার। রাতের অন্ধকারে রমরমিয়ে চলছে মদের ব্যবসা। সেই অভিযোগ বরাবরই উড়িয়ে দিতে দেখা গিয়েছে নীতীশকে। আর এই বিতর্কের মধ্যেই বারবার প্রাণ হারিয়েছেন সাধারণ মানুষ। কবে এর থেকে মুক্তি মিলবে, সে প্রশ্নের উত্তর আজও খুঁজে চলেছেন বিহারের সাধারণ মানুষ।