সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিহারেরই আরেকজন রাজনীতিবিদকে জাতীয় রাজনীতিতে ‘আবহাওয়াবিদ’, বা ‘হাওয়া মোরগ’ বলা হত। সেই রামবিলাস পাসওয়ান এখন প্রয়াত। কিন্তু তাঁর অভাব একেবারেই বোধ হতে দিচ্ছেন না নীতীশ কুমার। সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুতে থাকা দুই রাজনৈতিক শিবিরে অবাধ বিচরণ তাঁর। কারণ শিবির বদলের ক্ষেত্রে কোনও নীতি আদর্শের তোয়াক্কা তিনি নিজের রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকেই করেননি।
নীতীশের নীতি বদল:
১৯৮৯- রাজনৈতিক জীবনের শুরুতে লালুপ্রসাদের (Lalu Prasad Yadav) সঙ্গী ছিলেন নীতীশ। ১৯৮৯ সালে নীতীশের সমর্থনেই বিহার বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা হন লালু।
১৯৯৪- লালুর সঙ্গে ঝামেলা। জর্জ ফার্নান্ডেজের সঙ্গে মিলে সমতা পার্টি গঠন নীতীশের (Nitish Kumar)।
১৯৯৬- মতাদর্শগতভাবে সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুতে থাকা বিজেপির সঙ্গে জোট। বাজপেয়ী মন্ত্রিসভায় মন্ত্রী।
২০০০- বিজেপির সঙ্গী হিসাবে মুখ্যমন্ত্রী পদে নির্বাচিত। সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে না পারায় শপথের পরই ইস্তফা।
২০০৩- বিজেপির সঙ্গে জোটে থাকাকালীনই শরদ যাদবের মিলে সংযুক্ত জনতা দল গঠন।
২০০৫- বিজেপির সঙ্গে জোটেই বিহারের মসনদে নীতীশ।
২০১০- ফের মসনদে নীতীশ-জেডিইউ জোট।
[আরও পড়ুন: আঞ্চলিক দলের অস্তিত্ব বিপন্ন করতে চায় বিজেপি! বিহারে পালাবদলকে স্বাগত জানাল তৃণমূল]
২০১৩- মোদিকে (Narendra Modi) প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে তুলে ধরায় বিজেপির সঙ্গে ১৭ বছরের জোটে ইতি নীতীশের। এবং কংগ্রেসের সমর্থনে মসনদে টিকে থাকা।
২০১৫- দীর্ঘদিনের ‘শত্রু’ লালুপ্রসাদের সঙ্গে ফের হাত মেলান নীতীশ। তৈরি হয় জেডিইউ-আরজেডি-কংগ্রেস মহাজোট। ক্ষমতায় আসে সেই মহাজোট। মুখ্যমন্ত্রী হন নীতীশ।
২০১৭- ফের মহাজোটের সঙ্গ ছেড়ে বিজেপি শিবিরে। আবারও বিজেপির সমর্থনে মুখ্যমন্ত্রীর কুরসিতে নীতীশ।
২০২২- ফের বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন। আবারও হাত ধরলেন সেই শত্রু লালুপ্রসাদ যাদবেরই। আবারও বসবেন মুখ্যমন্ত্রীর কুরসিতে।
[আরও পড়ুন: ‘নীতীশের নীতি নেই’, তোপ দেগে বিজেপির পাশে থাকার ইঙ্গিত চিরাগ পাসওয়ানের]
আশ্চর্যের বিষয় হল, এতবার শিবির বদল করা সত্ত্বেও নীতীশের ব্যক্তিগত ভাবমূর্তিতে তেমন আঘাত লাগেনি। নিজের ‘সুশাসনবাবু’ ইমেজ বজায় রেখেছেন তিনি। আবার আরজেডি এবং বিজেপি দুই শিবিরের মধ্যেই নিজের বিশ্বাসযোগ্যতা বজায় রেখেছেন বিহারের বিদায়ী তথা হবু মুখ্যমন্ত্রী। সেটাই তাঁর সবচেয়ে বড় ক্যারিশমা।