সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বেকারত্বের (Unemployment) যন্ত্রণা বোঝেন একজন যুবক। শিক্ষিত যুবক। পেটে বিদ্যে আছে অথচ পকেটে পয়সা নেই, কারণ উপার্জনের ব্যবস্থা নেই, এর চেয়ে মন্দ ঘটনা আর কী হতে পারে! তবু লড়াই ছাড়লে তো চলে না। তাই খাতা-কলমকে সম্বল করে পাটনার (Patna) গঙ্গার ঘাটে (Bank of Ganges) হাজার হাজার যুবক বসে পড়েছেন জীবনের পরীক্ষা দিতে, গণক্লাসে! সম্প্রতি যে ছবি দেখে চমকে গেছে গোটা ভারত। আসল ঘটনা কী?
এতক্ষণ যা বলা হয়েছে তাই, তবে খানিক খুলে বলতে হবে। সংবাদ সংস্থার মাধ্যমে যে ছবি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়, সেখানে পাটনার গঙ্গার ঘাটে যে যুবক-যুবতীদের দেখা গিয়েছে খাতা আর পেন নিয়ে ব্যস্ত, তাঁরা সকলেই চাকরিপ্রার্থী। সকলেই অবশ্য ঘাটে বসার জায়গা পাননি। কেউ কেউ দাঁড়িয়েই পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। হ্যাঁ, ওঁরা সরকারি চাকরির জন্য তৈরি হতে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন দল বেঁধে। একজনের নেতৃত্বে। তিনি এসকে ঝা (SK Jha)।
[আরও পড়ুন: রেললাইনে শুয়ে নির্বিকারে ফোনে কথা মহিলার, উপর দিয়ে চলে গেল আস্ত ট্রেন, তারপর…]
ঝা পেশায় একজন ইঞ্জিনিয়ার। হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থীকে সরকারি চাকরির জন্য তৈরি হতে গত কয়েক মাস ধরে সাহায্য করছেন। ঝা জানিয়েছেন, মূলত রেল ও সর্ট সার্ভিস কমিশনের (SSC) প্রবেশিকা পরীক্ষার জন্য ওই ছেলেমেয়েরা তৈরি হচ্ছেন। ঝা বলেন, “আমরা গঙ্গার ধারে প্রতি শনি ও রবিবার সকাল ৬টা নাগাদ গণপরীক্ষার আয়োজন করি। এই দু’দিন কমপক্ষে ১২ থেকে ১৪ হাজার চাকরিপ্রার্থী পরীক্ষা দেন। গত ২ মাস ধরে বিনা পারিশ্রমিকে এই কাজ করছি।”
ঝা আরও জানিয়েছেন, রাজ্যের বেকার সমস্যা কমাতেই স্বেচ্ছায় এই কাজ করছেন তিনি। এত বড় কাজ যে একা করছেন না, তাও বলেছেন। ঝা বলেন, “একটাই কারণে এই কাজ করছি, তা হল ভয়ংকর বেকারত্ব। এই সমস্যাকে নির্মুল করতে আমরা শিক্ষক ও ছাত্ররা প্রতিদিন চেষ্টা চালাচ্ছি। যাঁরা এখানে পরীক্ষা দিতে আসছেন, তাঁরা ভদ্রঘরের ছেলে। ৩০-৩৫ জনের একটি দল টেস্ট পেপার ঘেঁটে এই চাকরিপ্রার্থীদের জন্য প্রশ্নপত্র তৈরি করছেন।”
[আরও পড়ুন: OMG! মাত্র ১ টাকা দরে বিকোল পেট্রল! কোথায় জানেন?]
প্রসঙ্গত, মার্চ মাসে ভারতে বেকারত্বের হার দাঁড়িয়েছে ৭.৬০ শতাংশে। বিহারে সেই হার দ্বিগুণের বেশি, ১৪.৪ শতাংশ পৌঁছেছে। এই পরিস্থিতি থেকেই পরিত্রাণই উদ্দেশ্য এসকে ঝা ও তাঁর টিমের। বেকারত্বের যন্ত্রণা মুছে জীবনে স্বাচ্ছন্দের স্বপ্ন দেখছেন চাকরিপ্রার্থীরাও।