অর্ণব আইচ: বিয়েবাড়ি খেতে এসে মাথায় হাত আমন্ত্রিতদের। বর আছে। বউ আছে। ফুলের সাজ আর আলোর চাকচিক্য রয়েছে। কিন্তু খাবার কোথায়? ক্যাটারিংয়ের লোকেরাই যে আসেনি। আমন্ত্রিতরা একে একে আসতে শুরু করতেই মাথায় হাত পরিবারের কর্তাদের। অথচ শুধু কাঁচা বাজার করার জন্য ক্যাটারিং সংস্থাকে পরিবারের পক্ষ থেকে কিছুদিন আগেই দেওয়া হয়েছে প্রায় ৬ লক্ষ টাকা। শেষ পর্যন্ত কোনওমতে রেস্তরাঁ থেকে কিনে আনা খাবার দিয়ে সম্মান বাঁচালেও ক্যাটারিংয়ের সংস্থার লোকেদের ছাড়েননি পরিবারের কর্তারা। পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করার পর রীতিমতো উধাও হয়ে যান ক্যাটারিং সংস্থার কর্তা। শেষ পর্যন্ত দক্ষিণ কলকাতার কয়েকটি জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে ওই ক্যাটারিং ব্যবসায়ী রঙ্গন নিয়োগীকে গ্রেপ্তার করেন গড়িয়াহাট থানার পুলিশ আধিকারিকরা।
পুলিশ জানিয়েছে, গত ২৭ নভেম্বর ছিল ওই বিয়েবাড়ি। মেয়ের বিয়ে উপলক্ষ্যে ভালোই বন্দোবস্ত করেছিলেন পরিবারের লোকেরা। প্রায় সাড়ে পাঁচশো লোক আমন্ত্রিত ছিলেন বিয়েবাড়িতে। সময়মতো বিয়ের সব আচার পালন করা হয়েছিল। বিয়েবাড়ি সাজানো হয়েছিল ফুল আর আলো দিয়ে। বিকেলের মধ্যেই খাবার নিয়ে পৌঁছে যাওয়ার কথা ছিল ক্যাটারিংয়ের লোকেদের। কিন্তু সন্ধ্যা পার করার পরও দেখা মেলেনি কারও। অথচ আমন্ত্রিতরা আসতে শুরু করেছেন। কিছুদিন আগেই ক্যাটারিং সংস্থার মালিককে আগাম ৫ লাখ ৯১ হাজার টাকা দেওয়া হয়। বারবার ফোন করা সত্ত্বেও পাওয়া যাচ্ছিল না ক্যাটারিং সংস্থার কাউকে। শেষ পর্যন্ত সংস্থার কর্তাদের ফোন বন্ধ। সব দেখে কনের পরিবারের লোকেরা অথৈ জলে। ততক্ষণে বরযাত্রীরাও এসেছেন। অথচ তাঁদের হাতে স্ন্যাকস তুলে দেওয়ার মতো কেউ নেই। আর সব শুনে কনেপক্ষের লোকেদেরও মাথায় হাত। শেষ পর্যন্ত কি রাতে বাড়ি ফিরে রেঁধে খেতে হবে, সেরকমও আলোচনা শুরু হয়ে যায়। যদিও কনের পরিবারের কর্তারা খাবার নিয়ে এসে নিজেদের সম্মান বাঁচান। যদিও আগাম টাকা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে রঙ্গন নিয়োগীর বিরুদ্ধে গড়িয়াহাট থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। পুলিশ তদন্ত শুরু করে। ওই ক্যাটারিং সংস্থার কর্তার সন্ধানে চালানো হয় তল্লাশি। শেষ পর্যন্ত তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃতকে জেরা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।