সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত বছর বিলকিস বানোর ধর্ষকদের মুক্তি দিয়েছিল গুজরাটের আদালত। সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে একাধিক আবেদনকারী দায়ের করেন মামলা। সেই মামলারই শুনানি ছিল বুধবার। আর এদিন সরকারি আইনজীবী তুষার মেহতা জানিয়ে দিলেন, গুজরাট সরকার ও কেন্দ্র দোষীদের মুক্তি সংক্রান্ত নথি শীর্ষ আদালতের সামনে পেশ করতে প্রস্তুত।
২০০২ সালে গোধরা হিংসার সময়ে অন্ত্বসত্ত্বা বিলকিসকে (Bilkis Bano) গণধর্ষণ ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের খুনের অভিযোগে ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। কিন্তু গত ১৫ আগস্ট গুজরাট সরকারের নির্দেশে ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়া হয়। ধর্ষকদের কার্যত বীরের সম্মান দিয়ে বরণ করা হয় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের তরফে। তারপরই দেশজুড়ে অসন্তোষের হাওয়া বইতে শুরু করে। গুজরাট সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেই শীর্ষ আদালতের (Supreme Court) দ্বারস্থ হয়েছিলেন অনেকে।
[আরও পড়ুন: ‘হিন্দুবিরোধী মন্তব্য করলেই গুলি করে মারব’ কর্ণাটকে বিজেপি বিধায়কের মন্তব্যে বিতর্ক তুঙ্গে]
সেই মামলার শুনানিতেই এদিন কেন্দ্র ও গুজরাট সরকার অপরাধীদের মুক্তি সংক্রান্ত নথি সুপ্রিম কোর্টে পেশ করতে সম্মত হওয়াকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ। কেননা এর আগে কেন্দ্র ও গুজরাট প্রশাসন ইঙ্গিতে জানিয়েছিল তারা ওই নথি শীর্ষ আদালতে পেশ করতে রাজি নয়। পাশাপাশি ওই নির্দেশকে পুনর্বিবেচনা করার আরজিও জানাবে তারা। কিন্তু এরপরই সুপ্রিম কোর্ট সরকারি আইনজীবীকে জানিয়েছিল, ”যদি আপনারা মুক্তির কারণ না দর্শান তাহলে আমরা আমাদের মতো করে এই বিষয়ে উপসংহার টানব।” অবশেষে গুজরাট প্রশাসন ও কেন্দ্র নথি দেখাতে সম্মত হল।
এদিন কে এম জোসেফ ও বি ভি নাগরত্নের বেঞ্চে রীতিমতো ভর্ৎসিত হন দোষীরা। বেঞ্চের তরফে জানানো হয়, আইনজীবীরা চেষ্টা করছেন বর্তমান বেঞ্চকে এড়িয়ে যেতে। যেহেতু বিচারপতি জোসেফের অবসর গ্রহণ সামনে, তাই এই কৌশল অবলম্বন করা হচ্ছে বলে জানান বিচারপতিরা।
বিচারপতি জোসেফকে বলতে শোনা যায়, ”উদ্দেশ্যটা পরিষ্কার। আমি ১৬ জুন অবসর নিচ্ছি। আমার শেষ কাজের দিন ১৯ মে। এটা খুব স্বাভাবিক আপনারা চাননা এই বেঞ্চে আর শুনানি হোক এই মামলার। আপনারা আদালতের অফিসার হতে পারেন। কিন্তু নিজেদের ভূমিকাটা ভুলবেন না। জিতুন বা হারুন, নিজেদের কর্তব্যটা ভুলে যাবেন না।”